মেক্সিকো সীমান্তে মার্কিন নিরাপত্তারক্ষী

মেক্সিকো সীমান্তে জাতীয় নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করছে যুক্তরাষ্ট্র। ছবি: রয়টার্স
মেক্সিকো সীমান্তে জাতীয় নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করছে যুক্তরাষ্ট্র। ছবি: রয়টার্স

অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে মেক্সিকো সীমান্ত এলাকা টহলে জাতীয় নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশ অনুসারে, মেক্সিকো-যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তজুড়ে চার হাজার নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করা হবে। এরই অংশ হিসেবে প্রথম ধাপে টেক্সাস অঙ্গরাজ্য রক্ষী মোতায়েন শুরু করেছে।

আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের আরেক অঙ্গরাজ্য অ্যারিজোনা সীমান্ত এলাকায় টহল বাড়াচ্ছে।

আজ শনিবার বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়, নিরাপত্তারক্ষীদের এক মুখপাত্র জানান, পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সীমান্ত এলাকা টহলের জন্য জাতীয় নিরাপত্তারক্ষীর ২৫০ সদস্যকে মোতায়েন করা হবে।

অ্যারিজোনা আগামী সপ্তাহে সীমান্তে ১৫০ সেনা মোতায়েনের পরিকল্পনা করেছে।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, মেক্সিকোর সঙ্গে সীমান্ত এলাকায় প্রস্তাবিত প্রাচীর নির্মাণের আগ পর্যন্ত সেখানে নজরদারি বাড়াতে চার হাজার জাতীয় নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করতে চান তিনি।

নিউ মেক্সিকো ও ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যকেও একই পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন নীতির কঠোর সমালোচক ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পরই এ ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপের সিদ্ধান্ত নেন। তাঁর কিছু নির্দেশ আদালতের রায়ে স্থগিত হয়ে গেলেও তিনি এ ব্যাপারে অন্য সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নে এগিয়ে যাচ্ছেন। অবৈধ অভিবাসী পেলে ‘ধরো এবং ছাড়ো’ দেশটির এই অভিবাসন নীতির কড়া সমালোচক ট্রাম্প। তিনি চাইছেন, অবৈধ অভিবাসীদের এভাবে ধরে ছেড়ে দেওয়ার পরিবর্তে তাদের বন্দী করা হোক। দেশে ফেরত পাঠাতে হলে তাদের শুনানির জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার জন্য তিনি প্রতিরক্ষা বিভাগের কাছে সামরিক বাহিনীর বিস্তারিত তথ্য চান। গত সাত দিনে অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে তিনি একের পর এক টুইট করছেন। ‘উন্মুক্ত সীমান্তের মাধ্যমে মাদক আর অপরাধ’ যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করছে দাবি করে এর জন্য ডেমোক্র্যাট শাসকদের দায়ী করেন। টুইটারে ট্রাম্প অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে আইন পাস করতে রিপাবলিকানদের তাগিদ দেন।

এ ব্যাপারে মেক্সিকো সীমান্ত এলাকায় কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি। ট্রাম্প হুমকি দেন, মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ বন্ধ করতে না পারলে নাফটা (উত্তর আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি) বন্ধ করে দেবেন তিনি।

ট্রাম্পের এসব বক্তব্যকে ‘হুমকি বা অমর্যাদাকর আচরণ’ উল্লেখ করে তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেছেন মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট এনরিখ পেনা নিয়েতো।

এদিকে সীমান্তে জাতীয় নিরাপত্তারক্ষীদের পাঠানোর ঘটনাকে ‘বড় পদক্ষেপ’ বলে মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প। তবে সীমান্তে জাতীয় নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েনের ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রে এই প্রথম নয়। এর আগে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সীমান্তে ১ হাজার ২০০ রক্ষী মোতায়েন করেছিলেন। আর প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ ‘অপারেশন জাম্প স্টার্ট’ নামে সীমান্তে মোতায়েন করেছিলেন ছয় হাজার সেনা। দুইবারই এক বছর পর্যন্ত মোতায়েন ছিল সেনারা।

ট্রাম্পের নির্দেশনা অনুসারে, চার হাজার জাতীয় নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েনের ব্যয় পেন্টাগনের বাজেট থেকে অনুমোদন করেছেন মার্কিন প্রতিরক্ষা সেক্রেটারি জেমস ম্যাটিস।