মার্কিন জনগণকে ঐক্যের ডাক বুশের
আফগান যুদ্ধ শুরু করা সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ আমেরিকার জনগণকে ভয় ও বিভক্তির রাজনীতি পরিহার করে ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী হামলার পর আমেরিকার জনগণের মধ্যে যে ঐক্য দেখা গিয়েছিল, একই ঐক্য নিয়ে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার কথা বলেছেন তিনি।
১১ সেপ্টেম্বর শনিবার ‘নাইন-ইলেভেন’-এর ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে পেনসিলভানিয়ার শাঙ্কসভিলে আয়োজিত এক স্মরণসভায় সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বুশ এসব কথা বলেন।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ছিনতাই হওয়া যাত্রীবাহী একটি উড়োজাহাজ ক্যাপিটল হিলে হামলার জন্য যাচ্ছিল। তার আগেই উড়োজাহাজটির সাহসী যাত্রীরা ছিনতাইকারীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। পরে উড়োজাহাজটি পেনসিলভানিয়ার শাঙ্কসভিল এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। যাত্রীদের সাহসিকতার কারণে সেদিন ক্যাপিটল হিল রক্ষা পেয়েছিল। তবে উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়ে সব যাত্রী নিহত হয়েছিলেন।
নাইন-ইলেভেন হামলার জের ধরেই যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে আগ্রাসন চালায়। শুরু হয় দেশের বাইরে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে প্রলম্বিত যুদ্ধের। তখনকার মার্কিন প্রেসিডেন্ট বুশ আমেরিকা ও সারা বিশ্বে যুদ্ধের প্রেসিডেন্ট হিসেবে চিহ্নিত হন।
২০ বছর পর নানা বিশৃঙ্খলা ও গ্লানির মধ্য দিয়ে আমেরিকা আফগানিস্তান ত্যাগ করেছে। তবে আমেরিকার যেকোনো যুদ্ধের আলোচনায় এখনো বুশের নাম উল্লেখ করা হয়ে থাকে।
রাজনীতি থেকে দূরে থাকা সাবেক প্রেসিডেন্ট বুশ পেনসিলভানিয়ার শাঙ্কসভিলে বলেন, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের পর একটি ঐক্যবদ্ধ আমেরিকাকে তিনি নেতৃত্ব দেন। সে সময় একটি ঐক্যবদ্ধ জাতিকে নেতৃত্ব দেওয়াকে একটি গর্বের বিষয় বলে এখনো মনে করেন তিনি।
বুশ বলেন, ভয় ও অস্থিরতা আমেরিকার সেই ঐক্যকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে, যা আমেরিকার ভবিষ্যতের জন্য খারাপ। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের পর আমেরিকার লোকজন হাতে হাত ধরে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছিল। তবে কোনো বিভক্তিই ১১ সেপ্টেম্বরে নিহত মানুষের ত্যাগের ঘটনাকে ম্লান করতে পারেনি বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সাবেক প্রেসিডেন্ট বুশ তাঁর বক্তৃতায় বলেন, ‘চরমপন্থীদের চেতনার সঙ্গে আমাদের ক্রমাগত লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।’
পেনসিলভানিয়ার স্মরণসভায় সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের সঙ্গে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ও তাঁর স্বামী উপস্থিত ছিলেন। ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস বলেন, আমেরিকা এখন দেশে ও দেশের বাইরের চরমপন্থীদের মোকাবিলা করছে।
নিউইয়র্কের স্মরণানুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পর দিনের শেষ দিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও শাঙ্কসভিল সফর করেন। তিনি নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট বুশের বক্তৃতার প্রশংসাও করেন তিনি।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, সেদিন ছিনতাইকারীদের হাত থেকে উড়োজাহাজের নিয়ন্ত্রণ নিতে যাত্রীদের মধ্যে কেউ একজন রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। এমন ঘটনাকে প্রকৃত বীরত্বের উদাহরণ বলে উল্লেখ করেন তিনি।