মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর হয়ে কাজ করা অনেক তথ্যদাতা বা এজেন্টকে মেরে ফেলা হয়েছে। দেশটির শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তারা সিআইএর সব বৈশ্বিক স্টেশনে এ–সংক্রান্ত একটি বার্তা পাঠিয়েছেন। বার্তায় বলা হয়েছে, সিআইএর হয়ে কাজ করা তথ্যদাতা হয় অন্য গোয়েন্দা সংস্থার হাতে ধরা পড়েছেন, না হয় তাঁদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ সংখ্যা উদ্বেগজনক।
সিআইএর কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স মিশন সেন্টার গত কয়েক বছরে এমন অনেক ঘটনার তদন্ত করেছে, যেগুলোয় বিদেশি তথ্যদাতাদের হত্যা, গ্রেপ্তার বা সমঝোতার বিষয়গুলো উঠে এসেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের তথ্য অনুযায়ী, এ ব্যাপারে সিআইএর পক্ষ থেকে গোপন তারবার্তায় অন্য গোয়েন্দা সংস্থার হাতে সিআইএর নির্দিষ্টসংখ্যক এজেন্ট নিহত হওয়ার তথ্য পাঠানো হয়েছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, তারবার্তায় যে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয়েছে, তা ওই বার্তা যে গুরুত্বপূর্ণ, এটি প্রকাশ করে। সাধারণত, সিআইএর কাছ থেকে নির্দিষ্টসংখ্যক এজেন্ট হত্যার শিকার হওয়ার তথ্য ঘোষণার বিষয়টিও দুর্লভ।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ ধরনের সংখ্যা সাধারণত জনগণের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখা হয়। এমনকি গোয়েন্দা সংস্থার অনেক কর্মীও এসব তথ্য জানতে পারেন না।
সিআইএর তারবার্তায় গোয়েন্দা মিশনকে আরও বেশি নিরাপত্তা দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। নিউইয়র্ক টাইমস আরও বলেছে, রাশিয়া, চীন, ইরান ও পাকিস্তানের মতো দেশে সিআইএর এজেন্ট বা তথ্যদাতাকে খুঁজে বের করার প্রচেষ্টা জোরদার করা হয়েছে। তাদের ‘ডাবল এজেন্টে’ রূপান্তর বা উভয় পক্ষের হয়ে কাজ করানোও হচ্ছে।
সিআইএর বার্তায় আরও বলা হয়েছে, সূত্রের ওপর অধিক আস্থা রাখা, দ্রুত তাদের এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ করার মতো দীর্ঘস্থায়ী সমস্যার পাশাপাশি সম্ভাব্য গোয়েন্দা তথ্যঝুঁকির প্রতি অবহেলার বিষয়টিও যুক্ত হয়েছে। আপস করা তথ্যদাতাদের উত্থানে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সিআইএর সব ক্রিয়াকলাপ আরও বেশি অত্যাধুনিক উপায়ে পর্যবেক্ষণ করছে। এসব কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার, ফেসিয়াল রিকগনিশন টুলস ও অন্যান্য হ্যাকিং প্রযুক্তির নানা ব্যবহার।
সাবেক সিআইএ কর্মকর্তা ডগলাস এ ব্যাপারে বলেন, ‘যখন কোনো এজেন্টের সঙ্গে খারাপ কিছু ঘটে, তখন দিনের শেষে কাউকে দায়ী করা হয় না। অনেক সময় এমন কিছু থাকে, যা আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে অবহেলার ঘটনাও থাকে। এ ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠ পদে থাকা ব্যক্তিদের কখনোই দায়ী করা হয় না।’ তবে তারবার্তা সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না।
নতুন এ তারবার্তা নিয়ে সিআইএ কোনো মন্তব্য করেনি। ওই বার্তা যাঁরা পড়েছেন, তাঁরা বলেছেন, সম্ভাব্য নতুন তথ্যদাতাদের তালিকাভুক্তি ও যাচাই-বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সরাসরি জড়িত কর্মকর্তাদের জন্য এটি তৈরি করা হয়েছিল।