দ্বিতীয় দফা নাগরিক সহযোগিতা নিশ্চিত আসছে। প্রথমবারের মতো ১২০০ ডলারের সরাসরি সহযোগিতাই থাকছে। জটিলতা কাটছে না বর্ধিত বেকার ভাতা নিয়ে। সপ্তাহে বর্ধিত বেকার ভাতা ৬০০ ডলার থাকবে নাকি কমবে—এ নিয়ে চলছে তর্ক। ডেমোক্র্যাটদের উদার প্রস্তাবের পাল্টা রিপাবলিকানদের প্রস্তাব ঝুলে আছে। রিপাবলিকানরা সিনেটে নিজেদের প্রস্তাব নিয়ে একমত হতে পারছেন না। তবে সহসাই তাদের ঐকমত্যে আসার চাপ রয়েছে।
আগামী সপ্তাহের মধ্যেই দ্বিতীয় নাগরিক সহযোগিতার আইন পাশ হচ্ছে বলেই এখনো সব মহল থেকে মনে করা হচ্ছে।
করোনাভাইরাস মহামারিতে সাধারণ মানুষের যে বিশাল আর্থিক ক্ষতি হয়েছে, তা কাটিয়ে উঠতে নতুন করে আরও ১ ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয় করার প্রস্তাব দিয়েছেন আমেরিকার রিপাবলিকান সিনেটররা। তবে কয়েক দিন ধরে করোনাকালে বেকারদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া (ফেডারেল বেনিফিট) সাপ্তাহিক ৬০০ ডলারের সহায়তা নিয়ে রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটিক দলের মধ্যে এখনো দেন দরবার চলছে।
এরই মধ্যে জুলাই মাসে বেকারভাতার সঙ্গে অতিরিক্ত ৬০০ ডলার ফেডারেল বেনিফিট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নতুন করে আমেরিকানদের জীবনযাত্রায় বড় টানাপোড়ন শুরু হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
কংগ্রেসে ডেমোক্রেটিক দল এই ভাতার পরিমাণ ৬০০ ডলার রেখে পুরো বছরের জন্য বর্ধিত করার পক্ষে। দ্বিতীয় সহায়তা প্যাকেজ নিয়ে রিপাবলিকান দল শেষ মুহূর্তের আলোচনায় ৬০০ ডলার কেটে ২০০ ডলার দিতে সম্মত হয়েছে। মাঝামাঝি সপ্তাহে ৪০০ ডলারের একটি প্রস্তাব নিয়েও সমঝোতার চেষ্টা করা হচ্ছে।
রিপাবলিকান দল থেকে আগেই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল, ফেডারেল সরকারের সহায়তার বর্ধিত কর্মসূচিতে কর্মহীন ব্যক্তিদের জন্য মাসে ৮০০ ডলার দেওয়ার ব্যাপারে তাঁদের মধ্যে ঐকমত্য রয়েছে। রিপাবলিকান দলের যুক্তি, এতে লোকজন কাজে ফিরে যেতে বাধ্য হবে। নীতিনির্ধারকদের অনেকেই বলছেন, সপ্তাহে ৬০০ ডলার করে পাওয়ার কারণে অনেকেই কাজে ফিরে যেতে চাচ্ছেন না।
ডেমোক্রেটিক দলের পক্ষ থেকে যুক্তি দেখানো হচ্ছে, আমেরিকার ইতিহাসে এমন বিপর্যয় আর কখনো ঘটেনি। ব্যবসা-বাণিজ্য খুলে দেওয়া হলেও অর্থনীতি পুরোদমে চালু হয়নি। বহু ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান টিকে থাকার শেষ চেষ্টা করছে এবং শিগগিরই অসংখ্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে। এ অবস্থায় লোকজনকে চরম সংকটের মধ্যে ফেলে দেওয়ার আগে রাষ্ট্র ও সরকার পাশে দাঁড়াবে।
গত মার্চ মাসে পাস হওয়া দুই ট্রিলিয়ন ডলার আর্থিক সহায়তা প্যাকেজের অংশ হিসেবে পাওয়া ৬০০ ডলারের সহায়তা বন্ধ হয়ে গেলেও অঙ্গরাজ্য থেকে বেকারত্বের জন্য বরাদ্দ প্রণোদনার কিছু অংশ পাবেন নাগরিকেরা। তবে এতে অর্থের পরিমাণ খুব বেশি না হওয়ায় মানুষ এখন ধীরে ধীরে বেকারত্বের আসল কষ্টের মুখোমুখি হবেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে দ্বিতীয় উদ্দীপনা চেকের পরিমাণ এককালীন ১ হাজার ২০০ ডলার হবে। আগের মতোই দম্পতিরা একসঙ্গে ট্যাক্স ফাইল করলে ২ হাজার ৪০০ ডলার করে পাবেন। সন্তানদের জন্যও পাবেন প্রথমবারের মতো।
দ্বিতীয় নাগরিক প্রণোদনায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, বাড়ির মালিক, স্থানীয় সরকারসহ নানা সামাজিক খাতেও সহযোগিতা থাকবে বলে এখন পর্যন্ত জানা গেছে। কংগ্রেসে এ নিয়ে প্রতিনিয়ত প্রস্তাব পাল্টা প্রস্তাবের কথাই লোকজন জানতে পারছে। মানুষের চাহিদা ও ভোগান্তি এরই মধ্যে চরমে উঠেছে। কর্মহীন মানুষ, ব্যবসা-বাণিজ্যের নাজুক অবস্থায় আমেরিকার কর্মজীবী জনগণের জন্য দ্রুত নাগরিক সহযোগিতার আইন পাশ করার তাগিদ আজ সর্বত্র।