২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপে বেজোসের ৬৭০ কোটির বাড়িতে কী আছে

বাড়িটি মাউই দ্বীপে। এর অবস্থান প্রশান্ত মহাসাগরের হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে
ফাইল ছবি: ইউটিউব থেকে সংগৃহীত

‘আমি এলাম, আমি দেখলাম, আমি জয় করলাম’। উক্তিটি প্রাচীন রোমান সাম্রাজ্যের শাসনকর্তা জুলিয়াস সিজারের, এশিয়ার একটি দেশ জয়ের পর। শীর্ষস্থানীয় ধনকুবের জেফ বেজোসের ক্ষেত্রে উক্তিটি এমন হতে পারে, ‘আমি এলাম, দেখলাম, কিনলাম’। প্রেমিকা লরা সানচেজকে সঙ্গে নিয়ে বিশাল এক বাড়ি কিনেছেন তিনি। দামটাও চোখ কপালে ওঠার মতো, ৭ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার। ৮৬ টাকা প্রতি ডলার ধরলে ৬৭০ কোটি টাকা। তবে জেফ বেজোসের কাছে এই অর্থ হয়তো তেমন কিছুই না।

চীনা সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের খবরে বলা হয়, ধনকুবের এ প্রেমিক জুটি বিলাসবহুল বাড়িটি কিনেছেন মাউই দ্বীপে। এর অবস্থান প্রশান্ত মহাসাগরের হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে। শহুরে ঝঞ্ঝাটমুক্ত প্রাসাদতুল্য বাড়িটি ১৪ একর জমির ওপর। তিন পাশ সবুজে ঘেরা। আর সামনের দিকে যত দূর চোখ যায় নীল সাগর।

বসবাসের জন্য মূল অংশ মোট ৪ হাজার ৫০০ বর্গফুটের। রান্নাঘর খোলা আকাশের নিচে। চাইলেই রান্না করতে করতে উপভোগ করা যাবে সাগরের সৌন্দর্য। অতিথিদের জন্য গেস্টহাউসও একেবারে ছোট নয়, ১ হাজার ৭০০ বর্গফুট। রয়েছে আরও কয়েকটি ছোট ছোট ভবন। অবকাশযাপনের মধ্যে গা ভেজানোর জন্য রয়েছে ৭০০ বর্গফুটের একটি গোল সুইমিং পুল।

বাড়িটির তিন পাশ সবুজে ঘেরা। আর সামনের দিকে যত দূর চোখ যায় নীল সাগর
ছবি: গুগল ম্যাপ

বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর বলছে, জেফ বেজোসের কেনা বাড়িটির মূল মালিকানা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডোভিত্তিক জ্বালানি ব্যবসায়ী ডগ শাৎজের। ব্যবসায়ের অংশীদারদের সঙ্গে নিয়ে ১৯৯৬ সালে বাড়িটি কিনেছিলেন তিনি। সে সময় খরচ পড়েছিল ৪২ লাখ ডলার। ১৯৯৯ সালে এসে শাৎজ ও তাঁর স্ত্রী পুরো বাড়ির মালিকানা নিজেদের নামে করে নেন। এরপর মোটা অঙ্কের অর্থ খরচা করে বাড়িটি নিজেদের মতো করে সাজিয়ে নেন তাঁরা।

বেজোস-সানচেজের প্রেম

জেফ বেজোসের সঙ্গে টিভি উপস্থাপিকা লরা সানচেজের প্রেমের গল্প সামনে আসে ২০১৯ সালে। সানচেজ আদতে বেজোসের বন্ধুর স্ত্রী। সে বছর দুজনের অনলাইনে আদান–প্রদান করা রগরগে কিছু বার্তা ও ছবির কথা জানাজানি হয়। সেগুলো ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ট্যাবলয়েড ম্যাগাজিন ন্যাশনাল এনকোয়ারের হাতে। ওই ম্যাগাজিনটির মালিকপক্ষ আবার বেজোস বিরোধীপক্ষ, অর্থাৎ তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ।

সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়, ন্যাশনাল এনকোয়ার আপত্তিকর ওই বার্তা ও ছবিগুলো ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দেয় বলে অভিযোগ করেন বেজোস। ম্যাগাজিনটির বিরুদ্ধে ‘চাঁদাবাজি এবং ব্ল্যাকমেলের’ অভিযোগও আনেন এই ধনকুবের। এমনকি পরকীয়ার এই সম্পর্কের জেরেই স্ত্রী ম্যাকেঞ্জি স্কটের সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় বেজোসের।

স্পেন থেকে ভারত—বিভিন্ন স্থানে অবকাশ যাপন করতে দেখা গেছে বেজোস–লরা জুটিকে
ফাইল ছবি: এএফপি

এরপর বেশ কিছুটা সময় গড়িয়েছে। নানা আলোচনা-সমালোচনার মধ্য দিয়ে বেজোস-লরার সম্পর্ক এখন বেশ পোক্ত। বিশ্বের নানা প্রান্তে অবকাশ যাপন করতে দেখা যায় এ জুটিকে। তাঁরা প্রথম প্রকাশ্যে আসেন বেজোসের স্ত্রী ম্যাকেঞ্জির সঙ্গে বিচ্ছেদের কিছু সময় বাদেই। দুজনকে লন্ডনে উইম্বলডন টেনিসের দর্শক সারিতের দেখা যায়। এরপর স্পেন থেকে ভারত—বিভিন্ন স্থানে দেখা গেছে এই জুটিকে।

নজর এখন মাউইতে

প্রেমের খবর এখন পুরোনো। সবার নজর এখন মাউইতে বেজোস ও সানচেজের নিজ বাড়ির দিকে। বাড়িটি কেনার খবর প্রথম সামনে আনে প্যাসিফিক বিজনেস নিউজ নামের একটি সংবাদমাধ্যম। সংবাদমাধ্যমটিকে জুটিটির ঘনিষ্ঠ এক সূত্র জানায়, বেজোস ও সানচেজ মাউই দ্বীপ ভালোবাসেন। প্রায়ই তাঁরা সেখানে সময় কাটান। এমনকি স্থানীয় লোকজনের সহায়তা করতেও আগ্রহী তাঁরা দুজন।

নানা আলোচনা-সমালোচনার মধ্য দিয়ে বেজোস-লরার সম্পর্ক এখন বেশ পোক্ত
ফাইল ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে সংগৃহীত

তবে মাউই দ্বীপে বেজোস ও সানচেজ নতুন বাড়িই দামই কিন্তু সর্বোচ্চ নয়। এর আগে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের বেভার্লি হিলসের ওয়ার্নার এস্টেট কিনে নেন। সংবাদমাধ্যম ইনসাইডারের তথ্য অনুযায়ী, ওই সম্পত্তিটি মূল্য ১ হাজার ৪১৫ কোটি টাকার বেশি (১৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার)।