পুলিশ কর্মকর্তা চৌভিনের আরও ২০ বছরের সাজা

মিনিয়োপোলিসের পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক চৌভিন
ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডকে (৪৬) হত্যার সময় তাঁর নাগরিক অধিকার লঙ্ঘন করায় মিনিয়োপোলিসের পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক চৌভিনকে ২০ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে। খবর বিবিসির।

ডিসেম্বরে চৌভিন (৪৬) ফেডারেল নাগরিক অধিকার নিয়ে আনা পৃথক অভিযোগে দোষ স্বীকার করেন। দায়িত্ব পালনকালে জর্জ ফ্লয়েডকে হত্যার দায়ে ইতিমধ্যে ২২ বছরের সাজা ভোগ করছেন তিনি।

চৌভিনের দুটি সাজা একই সঙ্গে চলবে। তাঁকে এখন একটি ফেডারেল কারাগারে স্থানান্তর করা হবে।

স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার আদালতে জর্জ ফ্লয়েডের ভাই ফিলোনিজ বলেন, ‘জর্জের জীবনেরও দাম আছে।’ চৌভিনকে সর্বোচ্চ ২৫ বছরের সাজা দিতে বিচারকের প্রতি আবেদন জানান তিনি।

মিনেসোটায় হত্যা ও নরহত্যার দায়ে দোষীসাব্যস্ত হন শ্বেতাঙ্গ চৌভিন। ৯ মিনিটের বেশি সময় ঘাড়ে হাঁটু চেপে ধরে কৃষ্ণাঙ্গ ফ্লয়েডকে শ্বাস রোধ করে হত্যা করেন তিনি।

একজন পথচারীর মুঠোফোনের ক্যামেরায় মুহূর্তটি ধরা পড়ে। এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও সারা বিশ্বে বর্ণবৈষম্য ও পুলিশের মাত্রাতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

ফ্লয়েডকে অধিকার বঞ্চিত করার দুটি ফেডারেল অভিযোগ আনা হয় চৌভিনের বিরুদ্ধে। হ্যান্ডকাপ পরিহিত অবস্থায় ফ্লয়েডের ঘাড়ে হাঁটু চেপে ধরা। তাঁকে গ্রেপ্তারের সময় চিকিৎসাসেবা প্রদানে ব্যর্থতা।

আবেদন চুক্তির অংশ হিসেবে ২০১৭ সালে ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরকে গ্রেপ্তারের সময় তাঁর অধিকার লঙ্ঘন করেছেন বলেও দোষ স্বীকার করেন চৌভিন।

অভিযোগ অনুযায়ী, চৌভিন কিশোরের গলা টিপে ধরেন, মাথায় টর্চলাইট দিয়ে আঘাত করেন এবং ঘাড়ে হাঁটু চেপে ধরেন। ওই সময় হ্যান্ডকাপ পরিহিত কিশোর কোনো ধরনের প্রতিরোধ করেনি। ফ্লয়েডের মতো এই কিশোরও ছিল কৃষ্ণাঙ্গ।

পুলিশের শরীরে বসানো ক্যামেরার অপ্রকাশিত ফুটেজে দেখা যায়, চৌভিন ১৭ মিনিট ধরে কিশোরের ঘাড়ে হাঁটু চেপে ধরে রাখেন। আর ওই কিশোর তার মায়ের জন্য কাঁদছিল।

দণ্ড ঘোষণার আগে চৌভিনকে উদ্দেশ করে বিচারক বলেন, ‘তোমার কর্মকাণ্ডের জন্য অবশ্যই তোমাকে জবাবদিহি করতে হবে।’

আরও পড়ুন

ফ্লয়েডের সন্তানদের কয়েকজন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাদের উদ্দেশ করে চৌভিন বলেন, তিনি ‘তাদের জীবনের সর্বাঙ্গীন মঙ্গল’ কামনা করেন। ভালো মানুষ হিসেবে বড় হওয়ার চমৎকার অভিভাকত্ব তাদের আছে। তবে ক্ষমা প্রার্থনা করেননি চৌভিন।

জাল নোট ব্যবহারের অভিযোগ এনে টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের হিউস্টনের বাসিন্দা জর্জ ফ্লয়েডকে ২০২০ সালের ২৫ মে আটক করে মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়োপোলিস শহরের পুলিশ।

আটকের পর পুলিশ কর্মকর্তা চৌভিন ফ্লয়েডের ঘাড় হাঁটু দিয়ে সড়কে চেপে ধরেন। এ সময় ফ্লয়েড বলতে থাকেন, ‘দয়া করুন, আমি নিশ্বাস নিতে পারছি না। আমাকে মারবেন না।’

এক পথচারী ওই সময় ফ্লয়েডকে ছেড়ে দিতে পুলিশকে অনুরোধ করেন। পরে অ্যাম্বুলেন্সে করে ফ্লয়েডকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ফ্লয়েড মিনেপোলিস শহরের একটি রেস্তোরাঁয় নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করতেন।

আরও পড়ুন