নিউইয়র্কে ভুয়া ফোন কলের বিড়ম্বনা
ভুয়া ফোন কলের বিড়ম্বনায় অতিষ্ঠ লোকজন। পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা প্রতারকদের ধরতে বেশ তৎপর। এর মধ্যে সংঘবদ্ধ চক্রের বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার ও বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। এ প্রতারকচক্র এখন শুধু নিউইয়র্কেই নয়, ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন দেশে। এরা আন্তর্জাতিক প্রতারক চক্র।
ভুয়া ফোন কলের মাধ্যমে অভিবাসীদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে তারা প্রতারণা করছে। সহজ-সরল স্বভাবের অনেকেই প্রতারকদের খপ্পরে পড়ে নাজেহাল হয়েছেন।
প্রথম আলো উত্তর আমেরিকায় নানা প্রতারণার ব্যাপারে অভিবাসীদের সতর্ক করতে বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
ভুয়া ফোন কলের মাধ্যমে অভিবাসী ও সরলমনাদের একান্ত ব্যক্তিগত জরুরি তথ্য সংগ্রহ করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে প্রতারকেরা। আমেরিকার গণমাধ্যমগুলো বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে অভিবাসীদের সতর্ক থাকতে বলেছে। এবার ভুয়া ফোন কল চক্র তাদের কৌশল পরিবর্তন করেছে। এবার প্রতারণায় যুক্ত করেছে ফেডারেল সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর ও অভিবাসীদের সর্বোচ্চ স্পর্শকাতর বিষয় সোশ্যাল সিকিউরিটি। এ দপ্তর থেকেই অভিবাসীরা ফুড স্টাম্প, মেডিকেইড, অবসরজীবনের ভাতা পেয়ে থাকেন। বিত্তবান ও মধ্যবিত্ত-সবাই নির্ভরশীল সোশ্যাল সিকিউরিটির ওপর। সবকিছু বণ্টন করা হয় সেখান থেকে। জন্মসূত্রে অথবা বৈধ সব নাগরিকের একটি নম্বর সংযুক্ত কার্ড ইস্যু করা হয়। যেটাকে বলা হয় এসএস কার্ড ।
৩১ জানুয়ারি বিকেলে একটি ফোন কল আসে এই প্রতিবেদকের নম্বরে। হ্যালো বলতেই একটি কর্কশ আওয়াজ। অনতিবিলম্বে তোমার এসএস কার্ড জমা দাও। তোমার কার্ডটির বৈধতা যাচাই হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তোমার সব ব্যাংকের কার্যক্রম স্থগিত করা হবে। এটা ছিল ধারণ করা কথামালা। অজানা আতঙ্ক পেয়ে বসে। তিনি ভেবে পাচ্ছিলেন না কী করবেন। নিজের কোনো অপরাধ খুঁজে না পেয়ে উদ্বেগ ও বিষণ্নতা নিয়ে কলব্যাক করেন। কিন্তু কোনো উত্তর নাই। অর্থাৎ অপর প্রান্তের ফোন বন্ধ। ভুয়া কল বলে অনুমানে করলেও তিনি স্বস্তি পাচ্ছিলেন না । যেহেতু এসএস কার্ড সম্পর্কিত কল। পরদিন সকালে এসএস কার্ড অফিসে দৌড়। লাইনে অপেক্ষা ৩ ঘণ্টা। অফিসারকে সব জানানো হলো। চেক করে জানালেন ভুয়া কল। পরামর্শ দিলেন পুলিশকে কল করে রিপোর্ট করতে।
বাসায় ফিরে এসেই পুলিশকে কল দেওয়া হলো। পুলিশ আসার পর কলদাতার নম্বরে আবার কল ব্যাক করতে বলল। ফোন ধরলে অপর প্রান্ত থেকে আওয়াজ এল, এসএস অফিস। কি চাও? এসএস কার্ড নম্বর দাও। কণ্ঠ শুনে মনে হলো, মধ্যপ্রাচ্যের বা ইন্ডিয়ান। পুলিশের পরামর্শে ভুল এসএস নম্বর দিতেই ফোন কেটে দেয়। পুলিশ জানাল, এদের গ্রেপ্তারের কাজ অব্যাহত রয়েছে। আরও পরামর্শ দিল এ ধরনের ভুয়া কল থেকে সাবধান থাকতে। ফেডারেল সরকারের প্রতিটি জরুরি বার্তা মেইলে আসে এবং মেইল সত্যায়িত প্রক্রিয়ায় আসে। আইআরএস বা সোশ্যাল সিকিউরিটি অফিস থেকে ফোন আসে না। এ ব্যাপারে অতিরিক্ত সতর্কতা জরুরি হয়ে উঠেছে সবার জন্য।