দেশে দেশে ফেসবুক-টুইটার বন্ধ করা উচিত: ট্রাম্প
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, দেশে দেশে টুইটার ও ফেসবুক বন্ধ করে দেওয়া উচিত। গতকাল মঙ্গলবার দেওয়া এক বিবৃতিতে ট্রাম্প টুইটার ও ফেসবুক বন্ধ করে দিতে বিভিন্ন দেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
এরই মধ্যে নাইজেরিয়া সরকার টুইটার বন্ধ করে দিয়েছে। দেশটির এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, এ ব্যাপারে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর উচিত নাইজেরিয়াকে অনুসরণ করা।
নাইজেরিয়াকে অভিনন্দন জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, দেশটির প্রেসিডেন্টের টুইট মুছে দেওয়ার পর তারা সে দেশে সামাজিক যোগাযোগের এই মাধ্যমটিকে নিষিদ্ধ করেছে। অন্য সব দেশেরও উচিত টুইটারের পাশাপাশি ফেসবুককে নিষিদ্ধ করা।
দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের গত সপ্তাহের প্রতিবেদনে বলা হয়, নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদু বুহারির একটি পোস্ট টুইটার মুছে দেয়। নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট তাঁর পোস্টটিতে কিছু লোকজনকে শায়েস্তার হুমকি দিয়েছিলেন। বিধি ভঙ্গের অভিযোগে পরে পোস্টটি মুছে দেয় টুইটার। গত শুক্রবার নাইজেরিয়া সরকার সে দেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য টুইটার নিষিদ্ধ করে।
একসময় ফেসবুক-টুইটারে ঘন ঘন পোস্ট দিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাতেন ট্রাম্প। গত ৬ জানুয়ারি ট্রাম্পের উসকানিতে ক্যাপিটল হিলে হামলার অভিযোগ ওঠে। রক্তক্ষয়ী এই হামলার জেরে সামাজিক যোগাযোগের প্রধান প্রধান মাধ্যমে ট্রাম্পকে নিষিদ্ধ করা হয়।
টুইটারে ট্রাম্পকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ফেসবুকে তাঁর নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ আরও দুই বছরের জন্য বাড়ানো হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে নিষিদ্ধ হয়ে ট্রাম্প বেশ ক্ষুব্ধ। কারণ, তিনি আগের মতো আর তাঁর ভক্ত-অনুরাগী-সমর্থকদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারছেন না। ফলে তাঁকে নানা বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য এখন বিবৃতি দেওয়ার ওপরই নির্ভর করতে হচ্ছে। মঙ্গলবার ট্রাম্প তাঁর বিবৃতিতে বলেন, এসব মাধ্যমে মুক্তভাবে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না।
সামাজিক মাধ্যমে সব ধরনের বক্তব্য প্রকাশের অবাধ সুযোগ থাকার পক্ষে মত প্রকাশ করে ট্রাম্প বলেন, এসব মাধ্যম আপাতত বন্ধ রাখলে অন্যরা এগিয়ে আসবে। নতুন সব যোগাযোগের মাধ্যম প্রতিযোগিতা করতে এগিয়ে আসতে পারবে।
ট্রাম্প অভিযোগ করে বলেন, এসব প্রযুক্তি কোম্পানি নিজেরাই অশুভ কাজে লিপ্ত। তিনি প্রশ্ন রাখেন, কোন বক্তব্য অশুভ, তা নির্ধারণ করার তারা কে?
সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, তিনি যখন ক্ষমতায় ছিলেন, তখনই ফেসবুক-টুইটার নিষিদ্ধ করা উচিত ছিল। কিন্তু তিনি তা করেননি। কারণ, ফেসবুকের প্রধান মার্ক জাকারবার্গ তাঁকে নিয়মিত ফোন করতেন। তিনি হোয়াইট হাউসে আসতেন। তাঁর প্রশংসা করতেন।
গত জানুয়ারি মাসে ট্রাম্পের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, তিনি অনেক বড় করে নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম গড়ে তুলবেন। গত মে মাসে ট্রাম্প তাঁর নিজস্ব যোগাযোগ মাধ্যম ‘ফ্রম দ্য ডেস্ক অব ডোনাল্ড জে ট্রাম্প’ চালু করেন। এক মাসের মধ্যেই সাইটটি বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি। ট্রাম্পের উপদেষ্টা জেসন মিলার বলেছেন, সামনে আরও বড় করে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম গড়ে তোলার জন্য চালু করা সাইটটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কবে, কী যোগাযোগের মাধ্যম চালু করা হবে, এ নিয়ে অবশ্য বিস্তারিত কিছু ট্রাম্পের পক্ষ থেকে জানানো হয়নি।