ট্রাম্পের সঙ্গে লড়াইয়ে আপাতত হার সিএনএনের
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে গণমাধ্যমকর্মীদের সম্পর্কটা নির্বাচনের আগে থেকেই ভালো নয়। বিশেষ করে মার্কিন টিভি নেটওয়ার্ক সিএনএনের সঙ্গে সম্পর্কটা যেন একেবারেই তিক্ত। নির্বাচনী প্রচারণায় সিএনএনকে ‘কেব্ল নিউজ নেটওয়ার্ক’-এর পরিবর্তে ‘ক্লিনটন নিউজ নেটওয়ার্ক’ বলে মন্তব্যও করেন ট্রাম্প। সম্প্রতি হোয়াইট হাউসে প্রেস ব্রিফিংয়ে ক্যামেরাও নিষিদ্ধ করছে হোয়াইট হাউস। তবে স্কেচশিল্পী পাঠিয়ে তার জবাবও দিয়েছে সিএনএন।
তবে হারটা এবার যেন সিএনএনেরই হলো। ট্রাম্প ও রাশিয়া নিয়ে ভুল প্রতিবেদন প্রকাশ করায় এবার তিন সাংবাদিকের পদত্যাগ মেনে নিতে হলো সিএনএনকে।
সম্প্রতি রাশিয়ার একটি বিনিয়োগ তহবিলের সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের সহযোগী অ্যান্থনি স্কারামুচির সম্পর্ক নিয়ে কংগ্রেস তদন্ত করছে—এমন প্রতিবেদন প্রকাশ করে সিএনএন অনলাইন। প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তা শেয়ারও করা হয়।
প্রতিবেদনটি তৈরি করেন সাংবাদিক থমাস ফ্রাংক, এটি সম্পাদনায় ছিলেন গণমাধ্যমটির নতুন তদন্ত প্রতিবেদনসংক্রান্ত বিভাগের নির্বাহী সম্পাদক এরিক লিস্টব্লোও ও সাংবাদিক লেক্স হ্যারিস। এরিক লিস্টব্লোও ২০০৬ সালে পুলিৎজার পুরস্কার পান। গতকাল সোমবার বিকেলে এই তিন সাংবাদিকের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে সিএনএন।
সিএনএন বলছে যে তারা তদন্ত করে দেখেছে, প্রতিবেদনটি কেবল একটি সূত্রের ওপর নির্ভর করে তৈরি করা হয়েছে। সূত্রের সঙ্গে অন্য দিকগুলো যাচাই-বাছাই করা হয়নি। অথচ এ ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশের আগে সিএনএনের কয়েকটি বিভাগ তা পর্যালোচনা করে। সাংবাদিকতার সবদিক মূল্যায়ন করেই একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়, যা এই প্রতিবেদনের ক্ষেত্রে করা হয়নি। এমন ধরনের ভুলের কারণে তাই ক্ষমাই চাইল সিএনএন।
তবে গতকাল সিএনএনের বার্তা সংস্থার সভায় পদত্যাগ করা সাংবাদিকেরা দাবি করেন, এটি প্রত্যাহার করার মানে এই নয় যে প্রতিবেদনটি ভুল ছিল, বরং প্রতিবেদনটি প্রকাশের জন্য যথেষ্ট মূল্যায়িত ছিল না।
এই দ্বন্দ্বের শুরু গত শুক্রবার। যখন প্রতিবেদনটি নিয়ে নিজের অবস্থান তুলে ধরে টুইট করেন অ্যান্থনি স্কারামুচি। তিনি সিএনএনের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে দাবি করেন, ‘আমি কোনো ভুল করিনি।’ ওই দিন রাতেই সিএনএন নিজের প্রতিবেদনের বিষয়ে তদন্তে নামে। দেখা যায়, প্রতিবেদনটি প্রকাশে সম্পাদকীয় নিয়মাবলি মানা হয়নি। এরপর প্রতিবেদনটি সিএনএন ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে ফেলে। পরে সম্পাদকীয় বিবৃতির মাধ্যমে তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, প্রতিবেদনটিতে সম্পাদকীয় মান বজায় রাখা হয়নি। তাই তা প্রত্যাহার করা হলো। এই সংবাদের কোনো ভিত্তি নেই। এমনকি এটি প্রকাশের জন্য স্কারামুচির কাছে দুঃখ প্রকাশ করে সিএনএন।
এরপর এক টুইট বার্তায় স্কারামুচি লেখেন, ‘ক্ল্যাসিক পদক্ষেপ, ক্ষমা করা হলো।’ পরদিন আরেক টুইটে তিনি বলেন, ‘সবাই ভুল করে, এগিয়ে যাও।’ সূত্র: রয়টার্স।