ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সামরিক ক্ষমতা অপব্যবহারের সাক্ষ্য
শীর্ষ দুজন মার্কিন কূটনীতিক দৃঢ়তার সঙ্গে সাক্ষ্য দিয়েছেন, ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনকে তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। প্রেসিডেন্টের অভিশংসন তদন্তের শুনানি এবার নতুন করে টেলিভিশনে প্রচার করা হবে। খবর এএফপির।
মার্কিন ইতিহাসে এই নিয়ে চতুর্থবার অভিশংসনের প্রক্রিয়া চলছে।
ট্রাম্প ডেমোক্রেটিক নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি পরিষদের এই তদন্তকে ‘ডাইনি নিধন অভিযান’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘খুব ব্যস্ত’ থাকায় তিনি জনশুনানির প্রথম পর্ব দেখতে পারেননি। এ ব্যাপারে তিনি রিপাবলিকান সংসদ সদস্যদের জোর সমর্থন পেয়েছেন।
ইউক্রেনের শীর্ষ মার্কিন কূটনীতিক উইলিয়াম টেলর গতকাল বুধবার ইউক্রেনকে চাপ দেওয়ার ব্যাপারে ট্রাম্পের প্রচেষ্টা সম্পর্কে নতুন তথ্য নিয়ে হাউস ইন্টেলিজেন্স কমিটির সামনে সাক্ষ্য দেন।
ডেমোক্র্যাটদের অভিযোগ, ইউরোপীয় গ্যাস সংস্থা বুরিসমার বোর্ডে দায়িত্ব পালনকারী ডেমোক্র্যাট বাইডেন এবং তাঁর ছেলে হান্টারের বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে চাপ দিয়েছেন ট্রাম্প। মার্কিন বাহিনীর সহায়তায় এবং হোয়াইট হাউসে সম্ভাব্য এক বৈঠক করে ট্রাম্প তাঁর ক্ষমতা লঙ্ঘন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ অভিযোগের মূল প্রমাণ হলো ট্রাম্প ও জেলেনস্কির মধ্যে ২৫ জুলাইয়ের ফোনালাপ। সে আলাপের হোয়াইট হাউসের সরকারি প্রতিলিপি অনুযায়ী, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করতে বলেছিলেন। এই তদন্ত না করলে ইউক্রেনের জন্য সামরিক সাহায্য স্থগিত রাখা হবে বলেও ট্রাম্প হুমকি দিয়েছিলেন মর্মে অভিযোগ ওঠে।
টেলর সাক্ষ্য দিয়েছেন, ট্রাম্প ইউক্রেনকে সাহায্য করার চেয়ে ইউক্রেনকে দিয়ে তদন্ত করানোর ব্যাপারে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন।
ধূসর চুলের সাবেক সেনা কর্মকর্তা এবং প্রবীণ এক কূটনীতিক গত মাসে এক রুদ্ধদ্বার শুনানিতে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। তিনি শুরু থেকে ট্রাম্প এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মার্কিন রাষ্ট্রদূত গর্ডন সন্ডল্যান্ডের মধ্যকার ফোনালাপের বিষয়ে জানতেন। টেলরের দলের এক সদস্য তা শুনে ফেলেন। ফোনালাপ শেষে ইউক্রেন সম্পর্কে ট্রাম্পের চিন্তাভাবনা কী, তা ওই সদস্যের কাছে জানতে চাওয়া হয়। টেলর তার বরাত দিয়ে বলেন, ট্রাম্পের চিন্তাভাবনাজুড়ে এখন বাইডেনদের ব্যাপারে তদন্ত গুরুত্ব পাচ্ছে।
ট্রাম্পের স্পষ্টবাদী সমালোচক ফ্রেশম্যান হাউস ডেমোক্র্যাট আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্টেজ বলেন, টেলরের এই নতুন মন্তব্য প্রেসিডেন্টের জন্য চাপের কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
নিউইয়র্কের প্রতিনিধি সিএনএনকে বলেন, ট্রাম্প নিজেই এই ফোন কলগুলোর কয়েকটিতে অংশ নিয়েছিলেন। এটি সরকারের ক্ষমতা ব্যবহারের সঙ্গে তাঁর জড়িত থাকার প্রমাণ দিচ্ছে। সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেলে প্রেসিডেন্টের অভিশংসন তদন্ত জোরদার হবে।
নতুন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গতকাল হোয়াইট হাউসে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে থাকা ট্রাম্প জবাব দেন, ‘এমন কথা প্রথমবার শুনলাম।’