ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করলেন পর্ন তারকা স্টর্মি
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসের আইনি লড়াই এবার নতুন রূপ নিয়েছে। গতকাল সোমবার নিউইয়র্কের এক ফেডারেল আদালতে ড্যানিয়েলস প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেন। এর আগে এক টুইটে ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, ২০১১ সালে টেক্সাসের এক পার্কিং স্থলে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি তাঁকে হুমকি দেয়, স্টর্মির এই দাবি একদম মিথ্যা। ট্রাম্পের এই কথা অসম্মানজনক, এই যুক্তিতে ড্যানিয়েলস মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছেন।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এটি ড্যানিয়েলসের দ্বিতীয় মামলা। স্টর্মির দাবি অনুযায়ী, প্রায় এক দশক আগে ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর দৈহিক সম্পর্ক ছিল। ২০১৬ সালের নির্বাচনের দেড় সপ্তাহ আগে এ বিষয়ে কোনো কথা না বলার জন্য স্টর্মিকে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত আইনজীবী মাইকেল কোহেন এক লাখ ৩০ হাজার ডলার ঘুষ দেন। শুধু তাই নয়, এই অর্থ গ্রহণের বদলে ড্যানিয়েলস ট্রাম্পের সঙ্গে একটি অপ্রকাশযোগ্য বা নন-ডিসক্লোজার চুক্তিতে সই করেন। ট্রাম্প অবশ্য আগাগোড়া বলে এসেছেন পুরো ব্যাপারটাই মিথ্যা, অর্থ লেনদেনের ব্যাপার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। অথচ গত সপ্তাহে ফক্স টিভির সঙ্গে এক টেলিফোন সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, স্টর্মি ড্যানিয়েলসের সঙ্গে “ওই পাগলামি কাণ্ডটা” অর্থাৎ তাঁকে দেওয়া এক লাখ ৩০ হাজার ডলারের ঘুষ মাইকেল কোহেনের হাত দিয়েই হয়েছে। অন্য কথায়, এই পর্ন তারকার সঙ্গে তাঁর যে একটি নিষিদ্ধ সম্পর্ক ছিল, সেটি তিনি কার্যত স্বীকার করে নেন। কোহেনের মাধ্যমে সম্পাদিত অপ্রকাশযোগ্য চুক্তিটি রদ করার জন্য ড্যানিয়েলস ক্যালিফোর্নিয়ার আদালতে ভিন্ন একটি মামলা দায়ের করেছেন। এদিকে অর্থ লেনদেনে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে কোহেনের বিরুদ্ধে এফবিআই তদন্ত করছে, ড্যানিয়েলসের ব্যাপারটিও এই তদন্তের অন্তর্গত।
ড্যানিয়েলস দাবি করেছিলেন, ২০১১ সালে ‘ইন টাচ’ নামক একটি সাময়িকীর সঙ্গে ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে একটি সাক্ষাৎকার দেন তিনি। এই সাক্ষাৎকার যাতে না ছাপা হয় এবং ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে তিনি যাতে মুখ না খোলেন সে জন্য টেক্সাসের এক পার্কিং স্থলে এক অচেনা লোক এসে তাঁকে হুমকি দেয়। ওই সময় ড্যানিয়েলসের সঙ্গে তাঁর শিশু কন্যাও ছিল। তার দিকে তাকিয়ে লোকটি বলে, এমন সুন্দর একটি শিশু যদি অনাথ হয়, তাহলে বড় দুঃখের কথা হবে। মাস খানেক আগে ড্যানিয়েলস অজ্ঞাতনামা এই লোকটির একটি স্কেচ পত্রিকায় প্রকাশ করেন। সেটি দেখেই ট্রাম্প পুরো ব্যাপারটা ‘ফেক নিউজ’ বলে উড়িয়ে দেন।
ড্যানিয়েলসের আইনজীবী মাইকেল আভেনাতি বলেছেন, ট্রাম্পের এই টুইট ‘মিথ্যা ও অসম্মানজনক’। স্টর্মি ড্যানিয়েলস যদি তাঁর ওপর হুমকির অভিযোগ নিয়ে মিথ্যা বলে থাকেন, তাহলে সেটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আভেনাতির যুক্তি, ‘আমার মক্কেলকে মিথ্যাবাদী হিসেবে অভিযুক্ত করে ট্রাম্প মানহানিকর কাজ করেছেন।’ এক পাল্টা টুইটে আভেনেতি দাবি করেন, ট্রাম্প এই হুমকির ব্যাপারে শুধু জানতেনই না, এর পেছনেও তিনি ছিলেন।