টুইটার কিনতে ট্রাম্প উৎসাহিত করেননি দাবি মাস্কের
টুইটার কিনতে ইলন মাস্ককে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উৎসাহিত করেছেন বলে প্রকাশিত প্রতিবেদনকে মিথ্যা আখ্যা দিয়েছেন টেসলা প্রধান। এনডিটিভির অনলাইন প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
ট্রাম্পের নিজস্ব সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এর সিইও ডেভিন নুনেসকে উদ্ধৃত করে নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট চুপি চুপি ইলন মাস্ককে টুইটার কেনার জন্য উৎসাহিত করেছেন।
খবরটি টুইটারে শেয়ার করেছে মার্কিন দৈনিক নিউইয়র্ক পোস্ট। এই টুইটে রিপ্লাই দিয়েছেন মাস্ক। তিনি লেখেন, ‘এটা মিথ্যা। ট্রাম্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আমার কোনো যোগাযোগ নেই, যিনি প্রকাশ্যে বলেছেন যে তিনি কেবল ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ থাকবেন।’
গত মাসে মাস্কের কাছে টুইটার বিক্রির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদ। চুক্তি অনুযায়ী ৪ হাজার ৪০০ কোটি ডলারে টুইটার বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়।
মাইক্রো-ব্লগিং সাইট টুইটার কেনার উদ্দেশ্য সম্পর্কে মাস্ক বলেন, তিনি টুইটারকে আইডিয়া বিনিময়ের মুক্ত মঞ্চ বানাতে চান। টুইটার কেনার জন্য এই চিন্তাই তাঁকে প্রাথমিকভাবে প্রভাবিত করেছে।
আগে মাস্ক বহুবার বলেন, তিনি টুইটারকে সেন্সরশিপ মুক্ত করে বাক্স্বাধীনতার চর্চা করতে দিতে চান।
চুক্তি করার পর মাস্ক ঘোষণা দেন, টুইটারে নতুন নতুন ফিচার যুক্ত করা হবে, যাতে ব্যবহারকারীরা আরও বেশি এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে আগ্রহী হয়ে ওঠেন।
টুইটারের বাণিজ্যিক ব্যবহারকারীদের ওপর মাশুল আরোপের পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন মাস্ক।
মাস্কের টুইটার কেনার চুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানান, তাঁর অ্যাকাউন্ট পুনর্বহাল করা হলেও তিনি আর এই প্ল্যাটফর্মে ফিরবেন না।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি টুইটারে ফিরছি না। আমি ট্রুথে থাকব।’
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমি আশা করি, ইলন টুইটার কিনছেন, কারণ, তিনি মাধ্যমটির উন্নতি করবেন। তিনি একজন ভালো মানুষ। তবে আমি ট্রুথে থাকব।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফলকে কেন্দ্র করে গত বছরের ৬ জানুয়ারি ট্রাম্পের উসকানিতে তাঁর উগ্র সমর্থকেরা যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস ভবনে (ক্যাপিটল হিল) রক্তক্ষয়ী হামলা চালান। এ হামলার পর ট্রাম্পকে টুইটারে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করা হয়।
তখন টুইটারের পক্ষ থেকে বলা হয়, ট্রাম্পের টুইটগুলো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে তাঁর অ্যাকাউন্ট বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ট্রাম্পের টুইট আরও সহিংসতা উসকে দিতে পারে, এমন আশঙ্কার কারণেই তাঁর অ্যাকাউন্টটি স্থায়ীভাবে স্থগিত করা হয়।
টুইটারে ট্রাম্পকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত মিশ্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয়। কেউ কেউ এ সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেন, আবার কেউ কেউ করেন সমালোচনা।
টুইটারের পাশাপাশি ফেসবুক-ইনস্টাগ্রামেও নিষিদ্ধ হন ট্রাম্প। নিষিদ্ধের আগে টুইটারে ৮ কোটি ৯০ লাখ, ফেসবুকে ৩ কোটি ৩০ লাখ ও ইনস্টাগ্রামে ২ কোটি ৪৫ লাখ অনুসারী ছিল ট্রাম্পের।
টুইটার-ফেসবুক-ইনস্টাগ্রামে নিষিদ্ধ হয়ে ট্রাম্প ‘ট্রুথ সোশ্যাল’ নামের নিজস্ব সোশ্যাল নেটওয়ার্ক আনার ঘোষণা দেন। ট্রাম্প মিডিয়া অ্যান্ড টেকনোলজি গ্রুপ (টিএমটিজে) ট্রুথ সোশ্যাল নামের এই সামাজিক নেটওয়ার্ক পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে। ট্রাম্প নিজের প্রতিষ্ঠিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে গত মাসে প্রথম পোস্ট দেন।