জর্জ ফ্লয়েড হত্যায় আরেক পুলিশ কর্মকর্তার দোষ স্বীকার

পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক চৌভিন জর্জ ফ্লয়েডকে এভাবে ঘাড়ে হাঁটু চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন
ফাইল ছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডকে (৪৬) হত্যার ঘটনায় আরও এক পুলিশ কর্মকর্তা দোষ স্বীকার করেছেন। সহকর্মী ডেরেক চৌভিনকে ফ্লয়েডের ঘাড়ে হাঁটু চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করতে দেখা তিন পুলিশ সদস্যের একজন তিনি। ২০২০ সালের ওই মামলায় নরহত্যায় সহযোগিতা ও প্ররোচনার দায় স্বীকার করেছেন থমাস লেন। খবর রয়টার্সের।

ফ্লয়েডকে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় গত বছর শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তা চৌভিনকে ২২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

গতকাল বুধবার দায় স্বীকারের মাধ্যমে সাবেক কর্মকর্তা থমাস ‘সেকেন্ড ডিগ্রি’ খুনে সহযোগিতা ও প্ররোচনার আরও কঠিন অভিযোগের আসন্ন বিচার এড়ালেন। তিন বছরের সাজাভোগের বিষয়ে তিনি একমত হয়েছেন বলে মিনিয়াপোলিসের স্টার ট্রিবিউন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে। সাজা ঘোষণার শুনানির দিন এখনো ধার্য করা হয়নি।

হেনেপিন কাউন্টি কোর্টের অনলাইন নথির তথ্য অনুযায়ী, জর্জ ফ্লয়েডকে গ্রেপ্তারের সঙ্গে জড়িত সাবেক অপর দুই কর্মকর্তা টউ থাউ এবং জে আলেক্সান্ডার কুয়েং সহযোগিতা ও প্ররোচনার উভয় অভিযোগে জুনে বিচারের মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন।
মিনেসোটা অ্যাটর্নি জেনারেল কেইথ এলিসন এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘তিনি (থমাস) ভুল কিছু করেছেন, তাঁর এই স্বীকারোক্তি ফ্লয়েডের পরিবার, আমাদের সম্প্রদায় এবং জাতির দুঃখবোধ নিরাময়ের গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’

ডেরেক চৌভিনের হাঁটুর নিচে ৯ মিনিট ধরে থাকা ফ্লয়েড যখন অস্বস্তি বোধ করার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন, তখন তাঁকে সহায়তা দিতে ব্যর্থ হয়ে তাঁর নাগরিক অধিকার বঞ্চিত করার ফেডারেল অভিযোগে ফেব্রুয়ারিতে দোষী সাব্যস্ত হন থমাস, থাউ ও কুয়েং। ফ্লয়েডের নাগরিক অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ স্বীকার করেছেন চৌভিনও।

জাল নোট ব্যবহারের অভিযোগ এনে টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের হিউস্টনের বাসিন্দা জর্জ ফ্লয়েডকে ২০২০ সালের ২৫ মে আটক করে মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপোলিস শহরের পুলিশ। আটকের পর ফ্লয়েডের ঘাড় হাঁটু দিয়ে সড়কে চেপে ধরেন চৌভিন। এ সময় ফ্লয়েড বলতে থাকেন, ‘দয়া করুন, আমি নিশ্বাস নিতে পারছি না। আমাকে মারবেন না।’

এক পথচারী ওই সময় ফ্লয়েডকে ছেড়ে দিতে পুলিশকে অনুরোধ করেন। পরে অ্যাম্বুলেন্সে করে ফ্লয়েডকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। জর্জ ফ্লয়েড মিনিয়াপোলিস শহরের একটি রেস্তোরাঁয় নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করতেন।

এই হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশি নির্মমতা ও বর্ণবাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয়। এই আন্দোলনের সময় বিভিন্ন স্থানে লুটপাটের ঘটনাও ঘটে। এ ছাড়া পরবর্তীকালে এ আন্দোলন ও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।

আরও পড়ুন