দক্ষিণ চীন সাগরে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। গত বুধবার বিরোধপূর্ণ ওই জলসীমায় বেইজিং চারটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে, যার মধ্যে একটি ছিল যুদ্ধবিমানবাহী রণতরি ধ্বংসকারী ক্ষেপণাস্ত্র। আর এসব ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ এমন এক সময় করা হলো, যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন বেশ কিছু চীনা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। চীনের ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ওয়াশিংটন। বলেছে, এটা চরম উসকানিমূলক আচরণ।
ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি ও কাতারের আল-জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, পরিচয় প্রকাশ না করে যুক্তরাষ্ট্রের এক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা বলেছেন, চীনের সেনাবাহিনী পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) বিশাল সামরিক মহড়ার অংশ হিসেবে বুধবার দক্ষিণ চীন সাগরে মাঝারি পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে চীন। হাইনান দ্বীপ ও প্যারাসেল দ্বীপপুঞ্জের মাঝামাঝি এলাকায় সাগরে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো পড়ে। এর আগের দিন ওই জলসীমা দিয়ে একটি মার্কিন গুপ্তচর উড়োজাহাজ উড়ে যাওয়ায় বেইজিং এর প্রতিবাদ জানিয়েছিল।
বেইজিংয়ের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর ভাইস অ্যাডমিরাল স্কট ডি কন গতকাল বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, যতটা সম্ভব তারা আন্তর্জাতিক আইন ও নীতি মেনেই এটা করেছে। তাদের এটা করার অধিকার রয়েছে। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, অঞ্চলটিতে যেকোনো ধরনের হুমকি মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত রয়েছে। তবে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান সবার জন্য মঙ্গলের।
তবে চীনের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার বিষয়ে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপারের প্রতিক্রিয়া ছিল আরও কঠোর। বুধবার হাওয়াই সফরে গিয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, চীন আন্তর্জাতিক আইন ও নীতিমালার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে চলে না। তারা আন্তর্জাতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে চায়। আর সেটার জন্যই কাজ করছে। দক্ষিণ চীন সাগরে পিএলএ নিশ্চিতভাবে উসকানিমূলক আচরণ করছে। তিনি আশা করেন, চীন আন্তর্জাতিক আইন ও নীতিমালার প্রতিশ্রুতি মেনে চলবে। একই সঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল চলবে। এটা তার দায়িত্ব। এখানকার ভূখণ্ডের এক ইঞ্চিও কোনো দেশের কাছে ছেড়ে দেবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
বুধবারই দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের দখল সুসংহত করতে এবং বিতর্কিত তল্লাশিচৌকিগুলো সামরিকীকরণে সাহায্য করার জন্য ২৪টি চীনা প্রতিষ্ঠানের ওপর ভিসা ও বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেয় ওয়াশিংটন। এই পদক্ষেপ নিন্দা জানায় বেইজিং।
সম্প্রতি দক্ষিণ চীন সাগর ও অঞ্চলটির ছোট দেশগুলোতে চীনের মোড়লিপনা ঠেকাতে উঠেপড়ে লাগে ট্রাম্প প্রশাসন। বাণিজ্যবিরোধসহ নানা কারণে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে উত্তেজনা চলছে।