গ্রহাণুর আঘাতে বিলুপ্ত ডাইনোসরের জীবাশ্মের সন্ধান
পৃথিবীর বুকে ৬ কোটি ৬০ লাখ বছর আগে আঘাত হেনেছিল একটি গ্রহাণু। এর প্রভাবে সৃষ্ট বিপর্যয়ে ডাইনোসরের বিলুপ্তি ঘটে বলে ধারণা বিজ্ঞানীদের। বছর কয়েক আগে যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ডাকোটা অঙ্গরাজ্যের টানিস এলাকায় একটি ডাইনোসরের পায়ের জীবাশ্মের খোঁজ পেয়েছেন তাঁরা। মনে করা হচ্ছে, গ্রহাণুর আঘাতের জেরে সে সময় ডাইনোসরটির মৃত্যু হয়েছিল।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান-এর খবরে বলা হয়, নতুন সন্ধান পাওয়া পা-টি থেসকেলোসরাস প্রজাতির একটি ডাইনোসরের। আর সেটি এতটাই অক্ষত রয়েছে যে এর ত্বকের অস্তিত্বও পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
সাড়ে ছয় কোটির বেশি বছর আগে ওই গ্রহাণুর আঘাতে পৃথিবীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। গ্রহাণুর ধ্বংসাবশেষের নমুনা পাওয়া গেছে ডাইনোসরের ওই পায়ের জীবাশ্মেও। এ থেকেই ডাইনোসরটির মৃত্যুর সময় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন বিশেষজ্ঞরা।
ডাইনোসরের পায়ের এই সন্ধানকে ‘একেবারেই বিস্ময়কর’ ঘটনা বলে অভিহিত করেছেন যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফিলিপ ম্যানিং। বিবিসি রেডিও ফোরের ‘টুডে’ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘এটার অস্তিত্ব থাকার কথা নয়। আর এটা আশ্চর্য রকমের সুন্দর। এত পুরোনো ও সুন্দর এবং অসাধারণ একটি গল্প আছে, আর এমন কিছু দেখার সুযোগ পাব, তা আমি আমার পেশাগতজীবনে স্বপ্নেও ভাবিনি।’
ডাইনোসরটির পা-টি খননের পুরো সময় ক্যামেরায় ধারণ করা হয়েছে বিবিসির একটি তথ্যচিত্রের জন্য। ডাইনোসরস: দ্য ফাইনাল ডে উইথ স্যার ডেভিড অ্যাটেনবোরহ শিরোনামের ওই তথ্যচিত্র ১৫ এপ্রিল সম্প্রচার করা হবে। এ নিয়ে ফিলিপ ম্যানিং বলেন, ‘যখন স্যার ডেভিড সেটি দেখলেন (ডাইনোসরের পা), তিনি হেসে বললেন, “এটি অবিশ্বাস্য একটি জীবাশ্ম।” আমিও তাঁর সঙ্গে একমত।’
গ্রহাণুটি আঘাত হেনেছিল মেক্সিকো উপসাগর থেকে তিন হাজার কিলোমিটার দূরে। যেখানে ডাইনোসরের পায়ের খোঁজ পাওয়া গেছে, সেখানে একই সময়ের একটি মাছের জীবাশ্মও পেয়েছেন খননকাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গবেষকেরা।
টানিস এলাকায় এই খননকাজের নেতৃত্ব দিয়েছেন ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রবার্ট ডি পালমা। তিনি বলেন, ‘আমরা এই এলাকা থেকে এমন অনেক কিছু পেয়েছি, যেগুলো তখন ক্ষণে ক্ষণে কী ঘটেছিল, তার গল্প বলে। এটা প্রায় সিনেমায় ঘটনা দেখার মতো। আপনি এখানের পাথরের সারির দিকে তাকাবেন, জীবাশ্মগুলো দেখবেন, আর এগুলো আপনাকে সেই দিনগুলোয় ফিরিয়ে নিয়ে যাবে।’