ওষুধ-ব্যবসায় দাপট বাংলাদেশিদের
নিউইয়র্ক নগরের পাঁচ বরোতে সুনামের সঙ্গে ওষুধের ব্যবসা করছেন অভিবাসী বাংলাদেশিরা। তাঁরা এই ব্যবসায় এখন বেশ সফল বলা যায়। সাফল্যের হাত ধরে নগরের বাংলাদেশি অধ্যুষিত আরও বিভিন্ন এলাকায় ফার্মেসি বা ওষুধের ব্যবসায় নামছেন বাংলাদেশিরা। আরও নতুন নতুন বাঙালি অধ্যুষিত এলাকায় দোকান খোলার উদ্যোগ নিচ্ছেন বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে গত কয়েক মাসে বেশ কয়েকটি ওষুধের দোকানের উদ্বোধনও হয়েছে।
বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকায় স্বদেশির ওষুধের দোকান থাকায় হাতের নাগালেই প্রয়োজনীয় ওষুধ পাচ্ছেন প্রবাসীরা। নতুন বাঙালি জনবহুল এলাকায় স্বদেশিদের ওষুধের দোকান খোলায় খুশি কমিউনিটির লোকজন।
খুব বেশি দিন আগের কথা নয়। নব্বইয়ের দশকেও ওষুধের ব্যবসায় বাংলাদেশিদের তেমন কোনো অবস্থান ছিল না। হাতে গোনা দু-একটি ফার্মেসি ছাড়া তেমন কোনো বাংলাদেশি মালিকানাধীন ওষুধের দোকান ছিল না। কীভাবে ওষুধের ব্যবসার লাইসেন্স নিতে হয়, সেটাও জানা ছিল না তাঁদের।
দীর্ঘদিন ধরে আমেরিকান কোম্পানি ডুয়েনরিড, ওয়ালগ্রিন, রাইট এইড, ওয়ালমার্টসহ বিখ্যাত কোম্পানিগুলো একচেটিয়া ওষুধের ব্যবসা করে আসছিল। ওষুধের কম দোকান থাকায় ভিড় এমনই ছিল যে, সে সব দোকান থেকে লাইন ধরে গ্রাহকদের ওষুধ নিতে হতো। সময়ের পালাবদলে এখন নিউইয়র্কের পাঁচ বরোতে বাংলাদেশি মালিকানাধীন ওষুধের দোকানের জয়জয়কার। গ্রাহকেরা এখন ঝামেলাহীন দোকান থেকে ওষুধ কিনছেন। কীভাবে তার ওষুধ সেবন করবেন, বাংলায় কথা বলে সহজেই তা বুঝে নিচ্ছেন।
অথচ আগে প্রবাসীদের কেউ ওষুধ সেবনের নিয়ম বুঝিয়ে দিত না। আমেরিকান কোম্পানিতে বিক্রেতারা ওষুধের গায়ে লেখা নিয়ম অনুযায়ী গ্রাহকদের ওষুধ সেবন করতে বলতেন। এতে করে যারা ভালো ইংরেজি বুঝতেন না, তাদের ওষুধ সেবন করতে চরম অসুবিধা হতো। বিশেষ করে বয়স্কদের এসব ভোগান্তি বেশি পোহাতে হতো। এখন বাঙালি মালিকানাধীন ফার্মেসি হওয়ায় সে অসুবিধা অনেকটা কমে গেছে।
ওষুধের দোকান আগের তুলনায় অনেক বেশি হওয়ায় ফার্মেসিগুলোতে প্রতিযোগিতা বেড়েছে। এতে গ্রাহক সেবার মানও বেড়েছে। গ্রাহকদের সুবিধার্থে বিনা মূল্যে রক্তচাপ পরীক্ষা, ডায়াবেটিস পরীক্ষা, ফ্লু শটসহ বিভিন্ন ধরনের সেবার সুযোগ পাচ্ছেন গ্রাহকেরা। অনেক ক্ষেত্রে দরিদ্র ও ইনস্যুরেন্সহীন গ্রাহকদের বিনা মূল্যে ওষুধ দেওয়া হয়। বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে ব্রঙ্কসের জমজম ফার্মেসি, জ্যামাইকার ফিউশন ফার্মেসি, আসসালাম ফার্মেসি, জ্যাকসন হাইটসের জান্নাত ফার্মেসি, ইলমহাষ্টের বিসমিল্লাহ ফার্মেসিসহ বেশ কয়েকটি বাংলাদেশি মালিকাধীন ফার্মেসি।