ইতিহাস ঘেঁটে আনা 'পূর্বপুরুষ'
আশীফ এন্তাজ রবি কয়েক দিন আগে পাণ্ডুলিপি দিয়েছেন পড়তে। খুলে দেখি এ যে বিশাল উপন্যাস! আমাদের ইতিহাসের ষাটের দশকের সব সেলিব্রেটিদের তিনি কীভাবে উপন্যাসের চরিত্র হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন, সেটা বিস্ময়ের ব্যাপার। হাতে নিলে শেষ না করে ওঠা মুশকিল। মনে হয় সুচিত্রা সেন, উত্তম কুমার বা নির্মলেন্দু গুণ—এরা কী সত্যি এমন ঘটনার মধ্যে পড়েছিলেন? এমন কথা বলেছিলেন? মনে হয় তাঁদের নাম নিয়ে বানিয়ে বানিয়ে একটা সুখপাঠ্য কাল্পনিক লেখা লিখেছেন লেখক। সেখানে আরও আশ্চর্য হতে হলো। সবকিছুই প্রায় ঐতিহাসিক সত্য, কিন্তু বোঝার উপায় নেই। সুচিত্রার হাতে একটা খেলনা পিস্তল থেকে শুরু করে, একজন তরুণ ময়মনসিংহ থেকে ঢাকায় এসে সাইকেল অ্যাক্সিডেন্ট করলেন, তিনিই পরবর্তীতে নির্মলেন্দু গুণ। সবকিছুই নাকি ঐতিহাসিক সত্য! বঙ্গবন্ধুর জেলখানার দিনগুলো, উনসত্তরের গণ অভ্যুত্থান-তিনি ছবির মতো করে তুলে ধরেছেন। ষাটের দশকের বড় কোনো ঘটনাই যেন বাদ পড়েনি। যারা সেই সময় ঢাকা শহরে ছিলেন, বিশেষত পুরান ঢাকায়, তাঁরা হয়তো বানরের উৎপাতের কথা জানেন। তিনি সেটাকেও কাহিনির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছেন। সেখানেও মনে হবে কাল্পনিক, কিন্তু নয়।
একটি চিত্তাকর্ষক বই। বিস্তর কাল্পনিক চরিত্র অবশ্যই আছে, একটি উপন্যাসে যা থাকার কথা। কিন্তু এ বইটি ইতিহাস খুঁড়ে তৈরি করা রূপ-বর্ণ-গন্ধ এবং বিপুল ঘটনাময় ষাটের দশক। বইটির নাম ‘পূর্বপুরুষ’। লেখকের মানিকগঞ্জের কালিগঙ্গা নদীর পারের পূর্বপুরুষদেরও বর্ণিল বিচরণ আছে সেখানে। ‘পূর্বপুরুষ’ এ বছরের একুশে মেলায় আদর্শ প্রকাশনী থেকে একটি অন্যতম বই হতে যাচ্ছে, সন্দেহ নেই। আসলে মেলার আগেই বের হয়ে গেছে। ৩৫০ পৃষ্ঠার এই বইটি সবার খুব ভালো লাগবে, এ কথা নিশ্চিত বলা যায়। বইটির প্রচ্ছদ করেছেন রহমান আজাদ।