ইউএস ওপেন টেনিস
আগস্ট মাসের শেষ সোমবার থেকে নিউইয়র্কে শুরু হয় বিশ্ব টেনিসের অন্যতম বড় উৎসব ইউএস ওপেন, অর্থাৎ এই বছর ২৮ আগস্ট থেকে শুরু হচ্ছে ইউএস ওপেন টেনিস। পৃথিবীতে যে চারটি বড় টেনিস টুর্নামেন্ট হয়ে থাকে, যেগুলোকে বলা হয় গ্র্যান্ড স্লাম। তার মধ্যে অন্যতম ও শেষটি হলো এই টুর্নামেন্ট। প্রথমটি হলো অস্ট্রেলিয়ান ওপেন, দ্বিতীয়টি ফ্রেঞ্চ ওপেন ও তৃতীয়টি হলো উইম্বলডন।
১৮৮১ সালে প্রথম এই ইউএস ওপেন টুর্নামেন্ট শুরু হয়। এ বছর এই টুর্নামেন্ট হবে ১৩৭তম। দুই সপ্তাহব্যাপী এই প্রতিযোগিতার আসর বসে কুইন্সের ফ্লাসিং মেডোতে অবস্থিত আন্তর্জাতিক টেনিস মাঠ, যার নাম হলো ইউএসটিএ বিলি জিন কিং ন্যাশনাল টেনিস সেন্টার। এর আয়তন হলো ৪৬.৫ একর। এখানে আছে ২২টি টেনিস কোর্ট। এই কমপ্লেক্সে একাধিক স্টেডিয়াম অবস্থিত, সবচেয়ে বড়টি হলো আর্থার অ্যাস স্টেডিয়াম। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় টেনিস স্টেডিয়াম, যার দর্শক ধারণক্ষমতা ২৩ হাজার ২০০। এই টেনিস টুর্নামেন্টটি পরিচালনা করেন ইউনাইটেড স্টেটস টেনিস অ্যাসোসিয়েশন (ইউএসটিএ)। এটি একটি অলাভজনক সংগঠন। এই টুর্নামেন্ট থেকে যত অর্থ আয় হয়, তা টেনিসের উন্নয়নে ব্যয় করা হয়।
এ বছর টেনিসের যে সমস্ত উল্লেখযোগ্য তারকাকে টুর্নামেন্টে দেখা যাবে তাঁরা হলেন—(পুরুষদের মধ্যে) রাফায়েল নাদেল, রজার ফেদেরার, আলেকজান্ডার যেরিফ, মারিন ক্লিক। আঘাতের কারণে খেলছেন না অ্যান্ডি মারে
ও নোভাক জোকোভিচ। (মেয়েদের মধ্যে) ক্যারোলিনা পিলসকোভা, সিমনা হেলেপ, ভেনাস উইলিয়াম, জহানা কনটা। এবার দেখা যাবে না আমেরিকার অন্যতম টেনিস তারকা সেরেনা উইলিয়ামসকে। তিনি অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার কারণে খেলছেন না।
ইউএস ওপেন টুর্নামেন্টের অন্যতম আকর্ষণ হলো এর বিশাল অঙ্কের প্রাইজ মানি, যার পরিমাণ ৫০.৪ মিলিয়ন ডলার। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অঙ্কের এই প্রাইজ মানি এই টুর্নামেন্টের গুরুত্ব খেলোয়াড়দের কাছে সব সময়ই বাড়তি আকর্ষণ। যিনি চ্যাম্পিয়ন হবেন (মহিলা এবং পুরুষ), তিনিই পাবেন ৩৭ লাখ ডলার, রানারআপ পাবেন ১৮ লাখ ২৫ হাজার ডলার। এ ছাড়া যাঁরা বিভিন্ন রাউন্ড পর্যন্ত খেলার যোগ্যতা অর্জন করেন, তাঁরাও মোটামুটি ভালো অঙ্কের অর্থ পেয়ে থাকেন।
ইএসপিএন ৮২৫ মিলিয়ন ডলার দিয়ে এই টুর্নামেন্টর প্রচারস্বত্ব কিনে নিয়েছে। মূল স্টেডিয়াম আর্থার অ্যাসের অন্যতম সমস্যা ছিল উচ্চমাত্রার শব্দ, কারণ স্টেডিয়ামের খুব কাছেই হলো লাগরডিয়া এয়ারপোর্ট, সেখানে বিমান ওঠানামার শব্দে খেলোয়াড়েরা খেলায় মনোনিবেশ করতে পারেন না। তাই এই স্টেডিয়ামে ১৫০ মিলিয়ন ডলার খরচ করে চলন্ত ছাদের ব্যবস্থা করা হয় কিন্তু এতে নতুন সমস্যা দেখা দেয়, শব্দ কমার পরিবর্তে দর্শক এবং খেলোয়াড়েরা একধরনের গুঞ্জন শুনতে পান। গত বছর বেশির ভাগ সময়ই এ কারণে ১৫০ মিলিয়ন ডলার খরচ করে লাগানো ছাদ ব্যবহার করা যায়নি। সাউন্ড ইঞ্জিনিয়াররা বলছেন, মাঠের এক কোনায় থাকা বিরাট আকারের শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র এবং অদূরে অবস্থিত সেলফোন টাওয়ার থেকে এই শব্দ। এ বছর এই শব্দ থাকবে না বলে কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে।