আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারে ‘কঠিন পরিণতি’ দেখছেন হিলারি
আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের বিরোধিতা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন। মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ‘কঠিন পরিণতি’ নিয়েও সতর্ক করেছেন তিনি। গতকাল রোববার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হিলারি এই সতর্কতার কথা জানান।
আজ সোমবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজের খবরে বলা হয়েছে, গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আফগানিস্তান থেকে অবশিষ্ট আড়াই হাজার মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সেনা প্রত্যাহার শেষ করার সময়সীমাও বেঁধে দেন বাইডেন। কিন্তু আফগানিস্তান থেকে সব সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়ার বিষয়ে খোদ যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের মধ্যে তীব্র মতভেদ রয়েছে। অনেকে আফগানিস্তান থেকে পুরোপুরি সেনা প্রত্যাহারের বিরোধিতা করে আসছেন।
এই সেনা প্রত্যাহার বিষয় নিয়ে সিএনএনের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেন সাবেক মার্কিন ফার্স্ট লেডি হিলারি। এক প্রশ্নের জবাবে হিলারি বলেন, ‘আমার মতে, এটা একটি কঠিন সিদ্ধান্ত। এটাকে আমরা উভয় সমস্যা হিসেবে দেখি। আমরা জানি, সেনা প্রত্যাহার বা থেকে যাওয়া, উভয়েরই পরিণতি রয়েছে। প্রেসিডেন্ট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’ এই সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে দুটি বিশাল পরিণতির বিষয়টিও উল্লেখ করেছেন হিলারি। সাবেক এই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সেনা প্রত্যাহারের পর কাবুল সরকারের পতন হতে পারে এবং ক্ষমতা চলে যেতে পারে তালেবানের হাতে। এতে বৈশ্বিক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের আবার পুনরুত্থান হতে পারে। এই বিষয়গুলোর ওপর মার্কিন সরকারের মনোনিবেশ করাও উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
হিলারি বলেন, ‘আমার মতে, এই দুটি কঠিন বিষয় মোকাবিলা করতে হবে। আফগান নিরাপত্তা বাহিনী ও সেনাবাহিনীকে সমর্থন দেওয়া সেনাদের প্রত্যাহার করে নিলে তাদের প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। কিন্তু সেই সম্ভাব্য পরিণতি থেকে আমরা মুখ ফিরিয়ে নিতে পারি না।’
মার্কিন অনলাইন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওসের খবরে বলা হয়েছে, আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার নিয়ে এর আগে কংগ্রেসের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক কমিটির সদস্যদের কথা বলেন সাবেক দুই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ও কন্ডোলিসা রাইস। এ সময় তাঁরা সেনা প্রত্যাহার নিয়ে বাইডেনের সিদ্ধান্তের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। কংগ্রেসের কাছে তাঁরা সেনা প্রত্যাহারের সরাসরি বিরোধিতা করে মন্তব্য করেন।
এরই মধ্যে গত শনিবার থেকে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার শুরু হয়েছে। পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সেনা প্রত্যাহার শুরুর কয়েক দিন পরই মার্কিন সেনা প্রত্যাহার শুরু হলো। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেন। উত্তরসূরি বাইডেন সেটাকে আরও এগিয়ে নিলেন।
আফগানিস্তানে ২০ বছর ধরে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা দেশগুলো। আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সম্প্রতি দেশটির সশস্ত্রগোষ্ঠী তালেবানের সঙ্গে চুক্তি করে যুক্তরাষ্ট্র। চুক্তিমতে, আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়ার বিনিময়ে তালেবানেরা হামলা বন্ধ করবে।