কলম্বিয়া কাউন্টি সাংচুয়ারি মুভমেন্ট নামের অলাভজনক একটি সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ব্রায়ান ম্যারকরম্যানের (৩০) একটি ভিডিও গত সপ্তাহে অনলাইনে ভাইরাল হয়। এটিতে দেখা যায়, তাঁর গাড়িতে ভ্রমণরত দুজন কাগজপত্রহীন অভিবাসীর পাসপোর্ট জব্দ করার জন্য ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইস) পুলিশের কর্মকর্তারা গাড়ি আটকানোর চেষ্টা করছেন। ম্যারকরম্যান নিজ গাড়ির দরজা খুলতে অস্বীকার করেন।
৫ মার্চ হাডসনের একটি স্থানীয় আদালতে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনের মামলার শুনানি শেষে ওই দুই অননুমোদিত অভিবাসীকে গন্তব্যস্থলে নিয়ে যাওয়ার পথে আইসের কর্মকর্তারা ম্যাককরম্যাকের গাড়িটি আটকান।
২১ মার্চ এক সাক্ষাত্কারে ম্যাককরম্যাক বলেন, ‘আমার ধারণা তারা গাড়িতে করে আদালতের বাইরে অপেক্ষা করছিল এবং আদালত প্রাঙ্গণ ছাড়তে দেখেই আমাদের তাঁরা অনুসরণ করেন।’
যাত্রীদের একজনের কাছে থাকা মুঠোফোনের ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, ম্যাককরম্যাক একজন কর্মকর্তার অ্যাকশনের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলে বলছেন যে, যদি কোনো বিচারক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি না করেন তবে তিনি গাড়ির দরজা খুলতে সম্মত নয়। ম্যাককরম্যাকের জবাবে তাঁরা বলেন, তাঁদের কাছে ‘এলিয়েন গ্রেপ্তার’ এর ওয়ারেন্ট আছে। প্রত্যুত্তরে সাহসিকতার সঙ্গে জবাব দেন ম্যাককরম্যাক। তিনি বলেন, হ্যাঁ, এটা এলিয়েন গ্রেপ্তারের পরোয়ানা। কিন্তু এতে বিচারকের সই নেই। এটা বিচারিক পরোয়ানা নয়।
কর্মকর্তাদের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি তর্ককালে ম্যাককরম্যাক বলেন, গ্রেপ্তারের নোটিশটি হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের অনুমোদিত হলেও এটি, কোনো কর্মকর্তাকে কারও অনুমতি ছাড়া জোর-জবরদস্তি করে অন্যের বাড়ি বা গাড়ির দরজা খুলে, কোনো অপরাধীকে গ্রেপ্তার করার অনুমতি দেয় না। ম্যাককরম্যাক বলেন, ‘এটি যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের অধীনে কোনো পরোয়ানা নয়। আমি একজন আমেরিকার নাগরিক ও এই গাড়ির চালক। আপনার এই নোটিশ আমার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।’ একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে হাডসন পুলিশকে ডাকা হয়। কিন্তু ম্যাককরম্যাকের অ্যাটর্নি ও অন্য স্থানীয় কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপের পর কর্মকর্তারা ও আইস এজেন্টরা পিছিয়ে পড়তে বাধ্য হন।
বিষয়টি নিয়ে অভিবাসন বিভাগের একজন মুখপাত্র বলেন, অভিবাসন কর্মকর্তারা দুজন অবৈধ বিদেশি নাগরিককে খোঁজার চেষ্টা করেছিলেন। ম্যাককরম্যাক তাঁদের কাজে হস্তক্ষেপ করেছেন। এই হস্তক্ষেপে কর্মকর্তারা পরিবর্তিত জটিলতা এড়াতে স্থান ত্যাগ করেন। অন্যদিকে ম্যাককরম্যাক অভিযোগ করে বলেন, এলাকার বৈধ ও অবৈধ অভিবাসীরা প্রয়োজনীয় আইনি সেবা পাচ্ছেন না। কলম্বিয়া কাউন্টিতে একজনও ইমিগ্রেশন অ্যাটর্নি নেই বলে তিনি জানান।
ম্যাককরম্যাক বলেন, তিনি আশা করেন যে এ ঘটনা অন্যদেরকে তাদের সাংবিধানিক অধিকার জানার সুযোগ করে দেবে। নিজ অধিকার সম্পর্কে সচেতনতার কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে বলে তিনি মনে করেন। নিজ অধিকার সম্পর্কে প্রশিক্ষণ নিতে একটি ওয়েবসাইটের কথা উল্লেখ করেন তিনি। ওয়েবসাইটটিতে ইংরেজি ও স্প্যানিশ ভাষায় নির্দেশাবলি লেখা আছে বলে তিনি জানান।
ওয়েবসাইটটি হলো- https://www.sanctuarycolumbiacounty.org/ know-your-rights. ইমিগ্রেশন আইনকে তিনি অনৈতিক আইন আখ্যা দিয়ে বলেন, মানুষ যত নিজ অধিকার চর্চা করবে, ততই তার অধিকার শক্তিশালী হবে।