অটিস্টিক শিশুর টেডি বিয়ার খুঁজতে এল পুলিশ!
অসংখ্য মন্দ খবরের মাঝে সম্প্রতি একটি খবর পড়ে ও টিভিতে দেখে মন ভালো হয়ে গেল। ১২ বছর বয়সী এক অটিস্টিক শিশুর ৯১১-এ করা ফোন পেয়ে তার হারানো খেলনা টেডি বিয়ারকে খুঁজতে চলে এসেছে পুলিশ। সম্প্রতি নিউজার্সির উডব্রিজে এ ঘটনা ঘটেছে।
১২ বছর বয়সী ওই অটিস্টিক শিশুর নাম রায়ান পল। সে ঘরের ভেতর খেলার সময় তার খেলনা প্রিয় টেডি বিয়ারটি হারিয়ে ফেলে। বিষয়টি বাবা-মাকে না জানিয়ে সে দ্রুত ফোন করে ৯১১-এ। ফোনে সে বলেছে, ‘আমার টেডি বিয়ারটি খুঁজে পাচ্ছি না। তোমরা এটাকে উদ্ধার করে দাও।’ এরপর ‘বাই’ বলে সে কথা শেষ করলেও ফোন কাটেনি। অপর প্রান্তে ফোনটি যিনি গ্রহণ করেছিল সেই ডিসপ্যাচার উত্তরে কিছু বলার সুযোগ পাননি। এ ঘটনা শুনে পুলিশ অফিসার খারি মানজানি দ্রুত চলে যান রায়ান পলের বাসায়।
পুলিশ অফিসার খারি মানজানি বলেন, ‘আমি খবর পেয়ে যত দ্রুত সম্ভব রওনা হই। পরে রায়ান আমাকে দেখে খুব খুশি হয়। আমি আসলে এসেছিলাম ওকে খুশি করার জন্যই। তারপর আমরা বাসার মধ্যে টেডি বিয়ারটিকে খুঁজে বের করি।’
রায়ানের রেকর্ড করা ফোন কল শুনে অফিসার মানজানি বুঝতে পেরেছিলেন শিশুটি অটিস্টিক। এটা কোনো ‘ইমার্জেন্সি’ কিছু নয়, সেটাও তিনি অনুধাবন করেছিলেন। তবু তিনি রায়ানের টেডি বিয়ার খুঁজতে গিয়েছিলেন। কারণ অটিস্টিক শিশুটি যাতে আনন্দিত হয়, যাতে সে নিজেকে উপেক্ষিত মনে না করে। পুলিশ অফিসার মানজানি ‘পোয়াক অটিজম সার্ভিস’ নামে একটি সংস্থা থেকে এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন।
অটিস্টিক মানুষকে চেনার জন্য এই সংস্থাটি এখন পর্যন্ত নিউজার্সিতে প্রায় ৬৭ হাজার পুলিশ অফিসারকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। পুরো ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় সংস্থাটি জানিয়েছে, ‘তারা খুব গর্বিত যে তাদের দেওয়া প্রশিক্ষণ পেয়ে একজন পুলিশ অফিসার সেটা করে দেখিয়েছে।’
রায়ানের ফায়ার ফাইটার বাবা ছেলের এই ঘটনায় একাধারে আনন্দিত ও দুঃখিত। আনন্দিত এই জন্য যে, তাঁর অটিস্টিক ছেলে জানে কোনো সমস্যা বা বিপদ হলে কাকে ফোন করতে হবে। আর দুঃখিত কারণ বাবা ফায়ার ফাইটার হওয়ার পরেও ছেলে তাঁর কোনো সাহায্য চায়নি।
এদিকে পুলিশ অফিসার আসার পরে আনন্দিত রায়ান তাঁর সঙ্গে ছবি তোলে। পরে তাদের ছবি রায়ানের বাবা ফেসবুকে পোস্ট করে। ওই পোস্ট কিছুক্ষণের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায়। ফেসবুকের সেই পোস্ট থেকে নিউজার্সির টিভি ও পত্রিকা অফিস যোগাযোগ করে পুলিশ অফিসার মানজানির সঙ্গে। পরে তারা সবার সাক্ষাৎকার নেয়। অটিস্টিক শিশুর ফোনকে উপেক্ষা না করে তার খেলনা উদ্ধার করতে গিয়ে মানজানি এখন ‘লোকাল হিরো’।