মিশিগানে কমলার পক্ষে সমাবেশে মিশেল, মুসলিমদের ভোট চাইলেন ট্রাম্প

মিশিগানের কালামাজুতে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের সমাবেশে সাবেক মার্কিন ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা। ২৬ অক্টোবর, ২০২৪ছবি: রয়টার্স

মিশিগানে গতকাল শনিবার এক নির্বাচনী সমাবেশে মুসলিম ভোটারদের কাছে তাঁকে ভোট দেওয়ার আবেদন করেছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। একই দিন নির্বাচনী লড়াইয়ের ময়দান বলে পরিচিত এই অঙ্গরাজ্যে ডেমোক্রেটিক পার্টির সমাবেশ হয়।

সমাবেশে কমলা হ্যারিসের পক্ষে ভোটারদের কাছে আবেগপূর্ণ আবেদন রাখেন সাবেক মার্কিন ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা।

মিশিগানে যে ভোটারদের ভোট পেতে কমলা ও ট্রাম্প লড়াই করছেন, তাঁদের মধ্যে আরব বংশোদ্ভূত আমেরিকান এবং মুসলিম ভোটাররাও আছেন। তাঁরা গাজায় ইসরায়েলের বোমাবর্ষণ নিয়ে উদ্বিগ্ন।

ভোটারদের মধ্যে আরও আছেন অটোশিল্পের শ্রমিকেরা। বৈদ্যুতিক যানবাহন কীভাবে মার্কিন অটোশিল্পকে বদলে দিতে পারে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্যরা। তাদের (ইউনাইটেড অটো ওয়ার্কার্স) সদর দপ্তর মিশিগানের সর্ববৃহৎ নগর ডেট্রয়েটে।

আগামী ৫ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে ভোটের দিন। তবে মিশিগানসহ বেশ কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে আগাম ভোট শুরু হয়ে গেছে।

ডেট্রয়েটের বাইরে এক জনসমাবেশে ট্রাম্প বলেন, তিনি মাত্রই স্থানীয় একদল ইমামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এসেছেন। তাঁর যুক্তি, মুসলিম ভোটারদের সমর্থন তাঁর প্রাপ্য। কারণ, তিনি লড়াই শেষ করবেন এবং মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফিরিয়ে আনবেন।

ডেট্রয়েট শহরতলি নোভিতে জনসমাবেশে ট্রাম্প বলেন, ‘তারা এটুকুই চায়।’

(গাজা যুদ্ধে) ট্রাম্প ইসরায়েলকে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছেন। তিনি কীভাবে সেখানে যুদ্ধ শেষ করবেন, সে বিষয়ে কিছু বলেননি।

অটোশ্রমিকদের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ট্রাম্প বলেন, তিনি ডেট্রয়েট এলাকা এবং দেশব্যাপী অর্থনৈতিক পতনের ধারাকে উল্টো দিকে নিয়ে যাবেন।

যুক্তরাষ্ট্রে যে সাতটি প্রতিযোগিতাপূর্ণ অঙ্গরাজ্য নির্বাচনের ফলাফল নির্ধারণ করে দেবে, মিশিগান তার একটি। সেখানে ৮৪ লাখ নিবন্ধিত ভোটার রয়েছেন। মিশিগানে ১৫টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট রয়েছে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় পেতে অন্তত ২৭০টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পেতে হবে।

ওদিকে প্রায় ১৩০ মাইল (২১০ কিলোমিটার) দূরে মিশিগানের দক্ষিণের নগর কালামাজুতে গর্ভপাতের অধিকার, কর, স্বাস্থ্যসেবাসহ আরও কিছু বিষয়ে নিজের সঙ্গে ট্রাম্পের মতের পার্থক্য তুলে ধরেন ডেমোক্রেটিক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা।

কমলার আগে সমাবেশে বক্তব্য দেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার স্ত্রী মিশেল ওবামা। তিনি দুই প্রার্থীর ব্যক্তিগত চরিত্র এবং যোগ্যতার মধ্যে পার্থক্য তুলে ধরে উপস্থিত দর্শকদের মাতিয়ে তোলেন।

মিশেল ওবামা বলেন, ট্রাম্প ও হ্যারিসের প্রতি যে আচরণ করা হচ্ছে, সেখানে দুমুখোপনা আছে।

আরও পড়ুন

মিশেল নারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়েও বিস্তারিত কথা বলেন। তিনি বলেন, বিষয়টি কতটা জটিল, তা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন ট্রাম্প। এ কারণে তিনি ‘অ্যাফোরডেবল কেয়ার অ্যাক্ট’ (সাধ্যের মধ্যে সেবাসংক্রান্ত আইন) প্রত্যাহার করার প্রতিশ্রুতি দেন। বারাক ওবামার আমলে ওই আইন পাস হয়েছিল।

মিশেল বলেন, ‘আপনার (ট্রাম্প) জেদের কারণে নারী হিসেবে আমরা আনুষাঙ্গিক খরচের খাতায় চলে যাব।’

এদিন ট্রাম্প মিশিগান থেকে পেনসিলভানিয়া যান। তিনি সেখানে পেন স্টেট ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে সমাবেশ করেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘নভেম্বরের ৫ তারিখে বড় জয় দিয়ে আমাদের শেষ করতে হবে।’