বাইডেনের গাজা নীতিতে ঝুঁকিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা

গাজায় ইসরায়েলের হামলার সবচেয়ে বড় শিকার নারী ও শিশুরাফাইল ছবি: এএফপি

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনকে সমর্থন দেওয়ার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এতে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে। গতকাল মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ১২ কর্মকর্তার এক খোলা চিঠিতে এ কথা বলা হয়েছে। গাজা নিয়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের নীতির প্রতিবাদ জানিয়ে গত ৯ মাসে এসব কর্মকর্তা পদত্যাগ করেন।

এই কর্মকর্তারা বলেছেন, ইসরায়েলের প্রতি প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সমর্থনের মানে হলো গাজায় ফিলিস্তিনিদের হত্যা এবং অনাহারে রাখার ঘটনায় ওয়াশিংটনের ‘এমন সম্পৃক্ততা রয়েছে, যা অস্বীকার করার মতো নয়’। গাজা উপত্যকার যুদ্ধের বিষয়ে হোয়াইট হাউসের নীতিকে ‘ব্যর্থতা এবং যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি হুমকি’ হিসেবেও চিহ্নিত করেন তাঁরা।

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয় প্রেসিডেন্ট বাইডেন ও তাঁর প্রশাসন ইসরায়েলকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানানোর মাধ্যমে লোকদেখানো প্রচেষ্টা জারি রেখেছে। একই সময়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তাঁর জোট সরকারকে সামরিক ও কূটনৈতিক সমর্থন দিয়ে আসছে। নেতানিয়াহুর জোট সরকারে শরিক হিসেবে কট্টর জাতীয়তাবাদী কয়েকটি দলও রয়েছে।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। জবাবে ওই দিন থেকে গাজায় নির্বিচার হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। এর পর থেকে নেতানিয়াহুর সরকারকে অনেকটা নিঃশর্ত সমর্থন দিয়ে আসছে জো বাইডেনের প্রশাসন। এই নীতির প্রতিবাদে তাঁর প্রশাসনের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা পদত্যাগ করেন। তাঁদের মধ্যে গতকাল সর্বশেষ পদত্যাগ করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী মারিয়াম হাসানেইন।

আরও পড়ুন

খোলা চিঠিতে স্বাক্ষরকারী কর্মকর্তাদের মধ্যে মারিয়াম ছাড়াও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা ইউএসএআইডি ও সামরিক বাহিনীর পাশাপাশি চারজন রাজনৈতিক কর্মীও রয়েছেন। চিঠিতে বলা হয়, ‘ইসরায়েলকে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সুরক্ষা প্রদান এবং অব্যাহত অস্ত্র সরবরাহ করাটা গাজার অবরুদ্ধ জনগণের ওপর চালানো হত্যাকাণ্ড এবং চাপিয়ে দেওয়া ক্ষুধার সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততার বিষয়টিই নিশ্চিত করে, যা অস্বীকার করার মতো নয়।’

সাবেক এই কর্মকর্তাদের চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘এটি কেবল নৈতিকভাবে নিন্দনীয় এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইন ও মার্কিন আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘনই নয়, এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ক্ষোভেরও সৃষ্টি করেছে।’

এদিকে গাজায় প্রায় ৯ মাস ধরে চলা ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বরং ইতিপূর্বে স্থল অভিযান চালানো হয়েছে, এমন এলাকাগুলোয় নতুন করে স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। আরেক দফায় বিধ্বস্ত বাড়িঘর ছাড়তে হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আজ বুধবার জানিয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ২৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১২৫ জন। এ নিয়ে গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় ৩৭ হাজার ৯৫৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ৮৭ হাজার ২৬৬ জন।

আরও পড়ুন