কারও সঙ্গে কথা বলতে রাজি নন রুশদির ‘হামলাকারীর’ বাবা
ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক সালমান রুশদিকে হামলার ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে আটক হওয়া তরুণ হাদি মাতারের বাবা কারও সঙ্গে কথা বলতে রাজি হচ্ছেন না। লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ইয়ারুনে নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন তিনি। বাড়ির দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করে রেখেছেন। ইয়ারুনের মেয়র আলী তেহফের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এসব তথ্য জানিয়েছে।
গত শুক্রবার সালমান রুশদির ওপর হামলার পর ২৪ বছর বয়সী হাদি মাতারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি ‘পূর্বপরিকল্পিতভাবে হামলা’ করেছেন বলে অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে হাদি মাতার হত্যার উদ্দেশ্যে হামলার কথা অস্বীকার করেছেন।
লেবানিজ বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক হাদি মাতার। তাঁর মা-বাবা লেবাননের ইয়ারুন শহরের বাসিন্দা। ইয়ারুনের মেয়র আলী তেহফে বলেন, মাতারের মা-বাবা পরবর্তীকালে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসী হয়েছিলেন। সেখানেই মাতারের জন্ম, সেখানেই তিনি বড় হয়েছেন। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির বাসিন্দা। তবে কয়েক বছর আগে মাতারের মা-বাবা আবারও লেবাননে ফিরে গেছেন।
তেহফে রয়টার্সকে বলেন, ‘তাঁর বাবা এখন এ দেশে আছেন। তবে তিনি নিজেকে ঘরবন্দী রেখেছেন। কারও সঙ্গে কোনো ধরনের কথা বলতে রাজি হচ্ছেন না। আমরা তাঁর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছিলাম, সেখানে লোকজন পাঠিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে বাড়ির দরজায় কড়া নাড়ার পর তিনি কারও সঙ্গে কথা বলতে রাজি হচ্ছেন না।’
লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর এক কর্মকর্তা শনিবার বলেছেন, রুশদির ওপর হামলা নিয়ে যেসব তথ্য প্রকাশ পেয়েছে, তার চেয়ে বেশি কিছু তাদের জানা নেই। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা এ ব্যাপারে কিছুই জানি না। সুতরাং এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না।’
সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর প্রতি ইরানের সমর্থন রয়েছে। আর এ দেশেরই সাবেক সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লা আলী খোমেনি ১৯৮৯ সালে রুশদির বিরুদ্ধে ফতোয়া দিয়েছিলেন। ইসলাম অবমাননার দায়ে রুশদিকে হত্যার জন্য মুসলিমদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি।
মাতার কিংবা তাঁর মা-বাবা হিজবুল্লাহর সঙ্গে জড়িত ছিলেন কি না কিংবা সংগঠনটিকে সমর্থন করতেন কি না, তা নিয়ে আলী তেহফের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল। জবাবে তিনি বলেন, মাতার ও তাঁর মা-বাবার রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপারে তাঁর কাছে কোনো তথ্যই নেই।
গত শুক্রবার নিউইয়র্কের শিটোকোয়া ইনস্টিটিউটে সাহিত্যবিষয়ক একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার আগে হামলার শিকার হন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ৭৫ বছর বয়সী সালমান রুশদি।
আহত রুশদিকে হেলিকপ্টারে করে পেনসিলভানিয়ার একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তাঁর অস্ত্রোপচার হয়। রুশদিকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল। রোববার তাঁর ছেলে এবং সহযোগী বলেছেন, রুশদির শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে।