‘বুড়ো’ বাইডেনের সাক্ষাৎকারেও কমেনি ডেমোক্র্যাটদের উদ্বেগ

উইসকনসিনের ম্যাডিসনে গত শুক্রবার একটি নির্বাচনী সমাবেশে জো বাইডেনকে সরে যাওয়ার দাবিসংবলিত প্ল্যাকার্ড হাতে এক ডেমোক্র্যাট সমর্থকছবি: রয়টার্স

বয়স বেশি হয়ে যাওয়ায় দেশ পরিচালনায় নিজের সক্ষমতা নিয়ে দেখা দেওয়া উদ্বেগ, আলোচনা-সমালোচনা নানাভাবে চেষ্টা করেও থামাতে পারছেন না যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বিশেষ করে আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিপক্ষে প্রথম বিতর্কে বাইডেন তাঁকে দুর্বলভাবে উপস্থাপন করার পর এ উদ্বেগ বেড়েছে। নিজ দল ডেমোক্রেটিক পার্টির একের পর এক নেতা প্রকাশ্যে তাঁর প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে সরে যেতে বলছেন তাঁকে।

এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে প্রচার-প্রচারণা শুরু হওয়ার আগেই ৮১ বছর বয়সী বাইডেনের বয়স নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। দিন যত গড়াচ্ছে, প্রচার যত জোরালো হচ্ছে, তাঁর বয়স নিয়ে আলোচনা-উদ্বেগও তত বাড়ছে। বাইডেনকে এখন নিজ বয়স এবং দেশ পরিচালনার সক্ষমতা নিয়ে দলের নেতা, অর্থদাতা, সমর্থকদের আশ্বস্ত করতেই বেশি সময় ব্যয় করতে হচ্ছে।

দলের নেতা ও সমর্থকদের উদ্বেগ কমাতে গত শুক্রবার রাতে বাইডেন এবিসি নিউজকে একটি সাক্ষাৎকারও দেন; যদিও নির্বাচনের আগে প্রেসিডেন্ট প্রার্থীরা সাধারণত এ ধরনের সাক্ষাৎকার দেন না।

২২ মিনিটের ওই সাক্ষাৎকারে সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা হয়েছে বাইডেনের বয়স নিয়ে। বয়স হলেও তা তাঁর দেশ পরিচালনার সক্ষমতায় কোনো বাধা সৃষ্টি করবে না, নানাভাবে এমনটাই বোঝাতে চেয়েছেন তিনি।

এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে প্রচার-প্রচারণা শুরু হওয়ার আগেই ৮১ বছর বয়সী বাইডেনের বয়স নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। দিন যত গড়াচ্ছে, প্রচার যত জোরালো হচ্ছে, তাঁর বয়স নিয়ে আলোচনা-উদ্বেগও তত বাড়ছে। বাইডেনকে এখন নিজ বয়স এবং দেশ পরিচালনার সক্ষমতা নিয়ে দলের নেতা, অর্থদাতা, সমর্থকদের আশ্বস্ত করতেই বেশি সময় ব্যয় করতে হচ্ছে।

কিন্তু দলের নেতা-কর্মীদের উদ্বেগ কমেনি; বরং কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের আরেক ডেমোক্র্যাট সদস্য মিনেসোটার অ্যাঞ্জি ক্রেগ গতকাল শনিবার বাইডেনকে প্রার্থিতা থেকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানান। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত পাঁচজন ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতা প্রকাশ্যে তাঁকে সরে যেতে বললেন। অবশ্য এখনো দলের কোনো জ্যেষ্ঠ নেতা বাইডেনকে এ ধরনের আহ্বান জানাননি। উল্টো প্রেসিডেন্টের ওপর আস্থা প্রকাশ করে যাচ্ছেন তাঁরা।

সাক্ষাৎকারে বাইডেনকে বলা হয়, তাঁর মিত্ররা তাঁকে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ জানাতে পারেন। জবাবে তিনি বলেন, ‘তাঁরা এটা করবেন না।’ সাক্ষাৎকারগ্রহীতা স্টেফানোপোলোস আরেক দফা প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনে বাইডেনের সক্ষমতা নিয়ে জানতে চান। এ সময় বাইডেন বলেন, ‘আমি মনে করি না এ নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট হওয়ার কিংবা জেতার যোগ্য আমার চেয়ে বেশি কেউ আছেন।’

আমি মনে করি না, এ নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট হওয়ার কিংবা জেতার যোগ্য আমার চেয়ে বেশি কেউ আছেন।
-জো বাইডেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট

কয়েকটি জনমত জরিপে বাইডেনের চেয়ে ট্রাম্পকে এগিয়ে থাকতে দেখা গেছে। এমনকি কোথাও কোথাও এ উদ্বেগও প্রকাশ করা হয়েছে, যদি বাইডেনই প্রার্থী থাকেন, তবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাঁর হেরে যাওয়া ছাড়াও প্রতিনিধি পরিষদে ডেমোক্র্যাটদের আসন কমতে পারে। সিনেটেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাতে পারেন তাঁরা।

অ্যাঞ্জি ক্রেগ গতকাল বলেন, বাইডেন কার্যকরভাবে নির্বাচনী প্রচার চালিয়ে যেতে ও ট্রাম্পের বিপক্ষে জিততে পারবেন বলে তাঁর বিশ্বাস হয় না। দশকের পর দশক ধরে বাইডেন যে কাজ করে গেছেন, তার প্রতি সম্মান রেখে তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয়বার ফিরে আসার ঝুঁকি নেওয়া একটু বেশিই ঝুঁকি হয়ে যায়।’

প্রতিনিধি পরিষদে ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে টেক্সাসের লয়েড ডগেট প্রথম প্রকাশ্যে বাইডেনকে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে বলেছিলেন। গত শুক্রবার বাইডেনের সাক্ষাৎকার প্রচারের পর তিনি সিএনএনকে বলেন, ‘প্রথম যেদিন এ আহ্বান জানিয়েছিলাম, আজ রাতে এটা (বাইডেনের প্রার্থিতা প্রত্যাহার) তার চেয়েও বেশি জরুরি বলে মনে হচ্ছে।’

‘প্রেসিডেন্ট বাইডেন প্রার্থী হিসেবে সরে যাওয়া নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে যত দেরি করবেন, নতুন প্রার্থীর জন্য সামনে এসে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হারানো তত কঠিন হয়ে পড়বে’, বলেন লয়েড ডগেট।

আরও পড়ুন:

কেবল ‘ঈশ্বর’আমাকে সরে যেতে রাজি করাতে পারেন: বাইডেন

ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কে ‘প্রায় ঘুমিয়ে পড়েছিলেন’বাইডেন

বাইডেনের পরিবার চায়, তিনি নির্বাচনে থাকুন

সিএনএন জরিপ: বাইডেনের সঙ্গে বিতর্কে ট্রাম্প জয়ী

ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কের পর বাইডেনের বিকল্প নিয়ে আলোচনা