হারিকেন বেরিল আরও শক্তিশালী হচ্ছে, ক্যারিবীয় অঞ্চলে সতর্কতা
হারিকেন বেরিল আরও শক্তিশালী হওয়ায় আজ রোববার থেকে ক্যারিবিয়ানের দক্ষিণ–পূর্বাঞ্চলের বেশির ভাগ এলাকায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পূর্বাভাসদাতারা সতর্ক করে বলেছেন, এটি শিগগির একটি বড় ঝড়ে পরিণত হবে।
ইউএস ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি) বলেছে, বেরিল বর্তমানে বারবাডোসের প্রায় ৫৩০ মাইল (৮৫০ কিলোমিটার) পূর্বে আটলান্টিক মহাসাগরে অবস্থান করছে। আগামীকাল সোমবার সকালে যখন এটি উইন্ডওয়ার্ড দ্বীপপুঞ্জে আঘাত হানবে তখন এটি ‘বড় ধরনের বিপজ্জনক ঝড়’ হয়ে আসবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
এনএইচসি সতর্ক বার্তায় বলেছে, ঝড়টি ‘শক্তিশালী হয়ে উঠছে’। ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে আঘাত হানার সময় এটি আরও বিপজ্জনক রূপ নেবে।
সর্বশেষ সতর্ক বার্তায় এনএইচসি বলেছে, যখন গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এই ঝড়ের সতর্কতা, টোবাগো ও ডোমিনিকান রিপাবলিকে কার্যকর করা হয়, তখন বারবাডোস, সেন্ট লুসিয়া, সেন্ট ভিনসেন্ট, গ্রেনাডাইনস ও গ্রেনাডা এলাকায়ও হারিকেনের সতর্কতা জারি করা হয়।
এদিকে ভয়াবহ ঝড় আঘাত হানার আশঙ্কায় বার্বাডোজের রাজধানী ব্রিজটাউনের গ্যাস স্টেশনগুলোয় সারিবদ্ধভাবে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। এ ছাড়া সুপার মার্কেট এবং মুদিদোকানে খাবার, পানি ও অন্যান্য সামগ্রী কেনার জন্য মানুষের ভিড় লক্ষ করা গেছে। কিছু কিছু পরিবার ইতিমধ্যে তাঁদের মালামাল সরিয়ে নিয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, ঝড়টি ক্যাটাগরি-৩ বা এরও বড় হারিকেনে রূপ নেবে। ঘণ্টায় এর বাতাসের গতিবেগ থাকবে ১১১ মাইল (১৭৯ কিলোমিটার)।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, আটলান্টিক হারিকেন মৌসুমের শুরুতে এই ধরনের শক্তিশালী ঝড় তৈরি হওয়া ব্যতিক্রম। আটলান্টিক হারিকেন মৌসুম সাধারণত জুনের শুরু থেকে নভেম্বরের শেষ পর্যন্ত চলে।
এনএইচসি বলেছে, আজ দিবাগত রাত দুইটা পর্যন্ত বেরিলের সর্বাধিক স্থায়ী বাতাস উচ্চ দমকাসহ ঘণ্টায় প্রায় ৯০ মাইল বেড়েছে। এর প্রভাবে ভারী বৃষ্টি, বন্যা এবং ঝড়ের সতর্কতা রয়েছে, যা স্বাভাবিকের চেয়ে সাত ফুট পর্যন্ত পানির স্তর বাড়াতে পারে। কিছু এলাকায় বাতাসের গতিবেগ পূর্বাভাসের চেয়েও ৩০ শতাংশ বেশি শক্তিশালী হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমসফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন মে মাসের শেষের দিকে বলেছিল, চলতি বছরটি একটি ‘ব্যতিক্রমী’ হারিকেনের মৌসুম হতে পারে। এ সময় ৩ বা তার বেশি ক্যাটাগরি পর্যন্ত সাতটি ঝড় হতে পারে। সংস্থাটি এ জন্য প্রশান্ত মহাসাগরের লা নিনা প্রভাবের কথা উল্লেখ করেছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় হারিকেনসহ চরম আবহাওয়ার ঘটনা আরও ঘন ঘন ও আরও বিধ্বংসী হয়ে উঠেছে।