৫১ বছর পর মা-বাবার কাছে

মা-বাবার সঙ্গে মেলিসা (মাঝে)
ছবি: ভিক্টোরিয়া হাইস্মিথের ফেসবুক গ্রুপ থেকে

৫১ বছর পর ফিরে আসা কতটা আনন্দের হতে পারে, তা সম্প্রতি ধরা পড়েছে মেলিসা হাইস্মিথ নামের এক নারীর ভেতর। এক ভিডিওতে দেখা গেল, মেলিসা যেমন কাঁদছেন, তেমনি কাঁদছেন তাঁর মা। কথা বলতে বলতে তাঁদের মুখে আবার হাসিও ফুটে উঠছে।

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের বাসিন্দা মেলিসাকে চুরি করে নিয়েছিলেন বেবিসিটার (শিশুর দেখাশোনার দায়িত্ব থাকা নারী)। যখন তাঁকে চুরি করা হয়েছিল, তখন তাঁর বয়স ছিল ২২ মাস। ফলে তিনি জানতেন না যে তিনি মা-বাবার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছেন।

তবে মেলিসা হারিয়ে যাওয়ার পরই তাঁর পরিবারের লড়াইটা শুরু হয়। তাঁর মা আলতা আপানতেনকো ও বাবা জেফ্রি হাইস্মিথ তাঁকে ফিরে পাওয়ার জন্য পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। এতেও কাজ না হলে নিজেরাও নানা উপায়ে খোঁজ–খবর করার চেষ্টা করেন। প্রায় এক দশক ধরে এই চেষ্টা চালিয়ে যান তাঁরা। কিন্তু কাজ হয়নি। এরপর চেষ্টা ছেড়েই দিয়েছিলেন জেফ্রি ও আলতা।

জেফ্রি দম্পতি কীভাবে মেয়েকে হারিয়েছিলেন, সেটা আগে জেনে নেওয়া যাক। ১৯৭২ সালে এই দম্পতি বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন যে তাঁদের বেবিসিটার লাগবে। এই বিজ্ঞাপন থেকে রুথ জনসন নামের এক নারী সাড়া দিয়েছিলেন। ওই নারী মেলিসাকে নিয়ে পালিয়েছিলেন এবং বিক্রি করে দিয়েছিলেন মাত্র ৫০০ ডলারে। যাঁর কাছে বড় হয়েছেন, তিনি একটা সময় মেলিসার কাছে স্বীকার করেছিলেন যে মেলিসাকে তিনি রাস্তা থেকে কিনে এনেছিলেন। কিন্তু মেলিসার যেহেতু বয়স কম ছিল, তাই কোনো স্মৃতি তাঁর মনে ছিল না।

মেলিসা বেড়ে উঠেছেন ফোর্ট ওর্থ এলাকায়। মেলানিয়া ব্রাউন পরিচয়ে বেড়ে উঠেছেন তিনি। প্রযুক্তির কল্যাণে তিনি মা–বাবার কাছে ফিরে এলেন।

মেলিসার বোন ভিক্টোরিয়া হাইস্মিথ জানিয়েছেন, গত বছর তাঁর মা-বাবা তাঁদের ডিএনএর নমুনা দিয়েছিলেন টোয়েন্টি থ্রি অ্যান্ড মি নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে। জনসাধারণের ডিএনএ সংগ্রহ করে থাকে এই প্রতিষ্ঠান। সেখানেই তাঁদের ডিএনএর সঙ্গে মিলে যায় মেলিসার সন্তানের ডিএনএর। এরপর মেলিসার সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ হয়। মেলিসা ফিরে পান মা–বাবাকে।