তিন ছাত্রের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, ১৮ বছর পর নারী স্বীকার করলেন গল্প ফেঁদেছিলেন

ডারহ্যামের ডিউক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। নর্থ ক্যারোলাইনা, যুক্তরাষ্ট্র, ২০০৬ছবি: এপি

যুক্তরাষ্ট্রের ডারহ্যামে ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থী ও ল্যাকরস খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে ২০০৬ সালে ধর্ষণের অভিযোগ করেছিলেন এক নারী। ঘটনাটি তখন জাতীয় গণমাধ্যমে শিরোনাম হয়েছিল। উত্তেজনা উসকে দিয়েছিল বর্ণবাদ, শ্রেণিবৈষম্য এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাথলেটদের সুযোগ–সুবিধা দেওয়া নিয়ে।

এত কিছু ও দীর্ঘ ১৮ বছর পর এসে ওই নারী প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে স্বীকার করলেন, ধর্ষণের অভিযোগ আসলে মিথ্যা ছিল। এ নিয়ে তিনি গল্প বানিয়েছিলেন।
অভিযোগকারী নারী ক্রিস্টাল ম্যানগাম (৪৬) একজন কৃষ্ণাঙ্গ। সম্প্রতি লেট’স টক উইথ ক্যাট পডকাস্টে একটি সাক্ষাৎকার দেন। সেখানে ম্যানগাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়টির তিনজন শ্বেতাঙ্গ শিক্ষার্থী ও খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে তিনি ওই গল্প তৈরি করেছিলেন, যা সত্য ছিল না।

ম্যানগামের এ সাক্ষাৎকার গত সোমবার প্রকাশিত হয়। গত মাসে নর্থ ক্যারোলাইনায় নারীদের একটি সংশোধনকেন্দ্রে সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করা হয়েছিল। ২০১১ সালে বন্ধুকে ছুরিকাঘাতে গুরুতর জখম করার দায়ে কেন্দ্রটিতে আটক আছেন তিনি।

ম্যানগাম বলেন, ‘তিন শিক্ষার্থী একটি পার্টিতে গিয়েছিলেন। সেখানে আমাকে নাচের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। আমি স্রষ্টার নয়, লোকজনের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেয়েছিলাম।’

সাক্ষাৎকারে এই নারী বলেন, ‘আমি তাঁদের বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছিলাম। বলেছিলাম, তাঁরা আমাকে ধর্ষণ করেছেন। যদিও তাঁরা তা করেননি। অভিযোগ ভুল ছিল।’

এ সাক্ষাৎকার গত সোমবার প্রকাশিত হয়। গত মাসে নর্থ ক্যারোলাইনায় নারীদের একটি সংশোধনকেন্দ্রে ম্যানগামের এ সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়েছিল। ২০১১ সালে বন্ধুকে ছুরিকাঘাতে গুরুতর জখম করার ঘটনায় কেন্দ্রটিতে আটক আছেন তিনি।

ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই তিন ছাত্রের বিরুদ্ধে তদন্ত হয়। পরে ২০০৭ সালেই তাঁদের নির্দোষ বলে রায় দেন আদালত।

আমি তিন শিক্ষার্থীকে জানাতে চাই, আমি তাঁদের ভালোবাসি এবং আমি যে অভিযোগ করেছি, তাঁরা সেটার যোগ্য ছিলেন না।
ক্রিস্টাল ম্যানগাম, ধর্ষণের অভিযোগ করা নারী

ওই ঘটনা নিয়ে নর্থ ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় এই বলে সমাপ্তি টেনেছিল যে অভিযোগকারী নারীকে ধর্ষণের কোনো গ্রহণযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাঁর গল্পের সত্যতার পক্ষে তদন্তে কোনো ডিএনএ, সাক্ষী বা অন্য কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

তবে এ মিথ্যা অভিযোগের কারণে ম্যানগামের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার পক্ষে ছিলেন না ডারহ্যামের কৌঁসুলিরা। অবশ্য ২০১১ সালে বন্ধুকে ছুরিকাঘাতের ঘটনায় ২০১৩ সালে তাঁর বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়। ২০২৬ সালের মধ্যে তিনি মুক্তি পেতে পারেন।

ইতিমধ্যে ম্যানগাম সাক্ষাৎকার গ্রহণকারীকে বলেছেন, তাঁর আশা, অন্যায়ভাবে অভিযোগের শিকার তিন শিক্ষার্থী তাঁকে ক্ষমা করে দেবেন। তিনি বলেন, ‘আমি তিন শিক্ষার্থীকে জানাতে চাই, আমি তাঁদের ভালোবাসি এবং আমি যে অভিযোগ করেছি, তাঁরা সেটার যোগ্য ছিলেন না।’