নির্বাচনী জরিপ: কমলার চেয়ে এগিয়ে ট্রাম্প
হাতে সময় দুই মাসেরও কম। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে জোরেশোরে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কমলা হ্যারিস। তবে ভোটের মাঠে রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটিক পার্টির এই দুই প্রার্থীর মধ্যে যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে যাচ্ছে—তার ইঙ্গিত মিলছে বিভিন্ন জনমত জরিপ থেকে। আর এসব জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়েছে ট্রাম্প–কমলার প্রথম সম্মুখ বিতর্কের ঠিক আগে।
স্থানীয় সময় আগামীকাল মঙ্গলবার (বাংলাদেশ সময় বুধবার সকাল ৭টা) ফিলাডেলফিয়ায় বিতর্কের মঞ্চে মুখোমুখি হচ্ছেন ট্রাম্প–কমলা। এর আগে রোববার একটি জরিপের ফল প্রকাশ করে নিউইয়র্ক টাইমস ও সিয়েনা কলেজ। তাতে দেখা গেছে, পুরো যুক্তরাষ্ট্রকে হিসাবে নিলে জনসমর্থনে এগিয়ে রয়েছেন ৭৮ বছর বয়সী ট্রাম্প। এই জরিপে তিনি পেয়েছেন ৪৮ পয়েন্ট। প্রতিদ্বন্দ্বী কমলা ৪৭ পেয়ে ১ পয়েন্ট পিছিয়ে রয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্যগুলোর হিসাবে উইসকনসিন, মিশিগান ও পেনসিলভানিয়ায় সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন ৫৯ বছর বয়সী কমলা। আর নির্বাচনের ফল যেকোনো পক্ষে যেতে পারে, এমন দোদুল্যমান চার অঙ্গরাজ্য—নেভাদা, জর্জিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা ও অ্যারিজোনায় দুজনের অবস্থা সমানে সমান। নির্বাচনের জয়–পরাজয়ের হিসাবে বড় ভূমিকা রাখে দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলো।
রোববারই আরেকটি জরিপ প্রকাশ করেছে সিবিএস ও ইউগভ। তাতে দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোয় ট্রাম্প–কমলার তুমুল লড়াইয়ের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এই জরিপ অনুযায়ী, মিশিগানে ৫০ শতাংশ সমর্থন পেয়েছেন কমলা। ১ শতাংশ কম পেয়েছেন ট্রাম্প। আর উইসকনসিনে ২ শতাংশ সমর্থনে এগিয়ে কমলা। পেনসিলভানিয়ায় দুজনই সমান সমর্থন পেয়েছেন।
দুই জরিপের ফল থেকে এটা পরিষ্কার যে ৫ নভেম্বরের নির্বাচনে ট্রাম্প–কমলা কেউ কাউকে ছাড় দিতে যাচ্ছেন না। এমন পরিস্থিতিতে জনসমর্থনে কিছুটা মোড় বদলাতে পারে সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজ আয়োজিত আজকের বিতর্ক। যত দূর মনে হচ্ছে, এটি নির্বাচন ঘিরে দুই প্রার্থীর মধ্যে একমাত্র বিতর্ক হতে যাচ্ছে। তাই অনেক হিসাব–নিকাশ করে কথা বলতে হবে দুজনকে।
বেশি সাবধান থাকতে হবে ট্রাম্পকে। কারণ, বিতর্কে তাঁর অপমান–অপদস্থ করে কথা বলার প্রবণতা রয়েছে। তার ওপর আবার এই বিতর্কে তাঁর প্রতিপক্ষ একজন কৃষ্ণাঙ্গ নারী। অন্যদিকে কমলার জন্য এটি মানুষের আরও কাছে পৌঁছানোর সুযোগ। ট্রাম্পকে সামলানোর দিকেও নজর দিতে হবে তাঁকে। গত বিতর্কে ট্রাম্পের মিথ্যা বক্তব্য ও কথার তোড়ে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
যদিও বিতর্কের আগেই কমলাকে ঘিরে ট্রাম্পের নানা বক্তব্যে বৈষম্য ফুটে উঠেছে। নির্বাচনী সমাবেশে দেওয়া বিভিন্ন বক্তব্যে তিনি বারবার কমলার নাম ভুলভাবে উচ্চারণ করেছেন। তাঁকে ‘উন্মাদ’ ও ‘মার্ক্সবাদী’ বলেও ডেকেছেন। কমলার বর্তমান সচিবদের একজন পিট বুটিগিয়েগ সিএনএনকে বলেন, ‘বিতর্কে ট্রাম্পকে সামলাতে প্রায় অতিমানবের মতো মনোযোগ ও শৃঙ্খলা প্রয়োজন।’
এবারের মার্কিন নির্বাচন বেশ ঘটনাবহুল। সমালোচনার মুখে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থিতা ছাড়তে হয়েছে বাইডেনকে। তাঁরই জায়গায় এসেছেন কমলা। এরপর হামলাকারীর গুলিতে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচেছেন ট্রাম্প। এখন সামনের দিনগুলোয় দেখার বিষয়—যুক্তরাষ্ট্র কি ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নারী প্রেসিডেন্ট পেতে যাচ্ছে, নাকি দ্বিতীয় মেয়াদে আবার হোয়াইট হাউসে ফিরছেন ট্রাম্প?