ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দণ্ডাদেশ ঘোষণা হতে পারে আজ
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে পর্ন তারকাকে ঘুষ দেওয়ার মামলায় দণ্ডাদেশ ঘোষণা করা হতে পারে আজ শুক্রবার। যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট গতকাল বৃহস্পতিবার এ–সংক্রান্ত এক আদেশে এই কথা বলেন। পাঁচজন বিচারপতি এর পক্ষে ও চারজন বিপক্ষে (৫-৪) মত দেন।
এ আদেশের আগে সর্বোচ্চ আদালত দণ্ডাদেশ ঘোষণার প্রক্রিয়া বিলম্বিত করার জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক জরুরি আবেদন নাকচ করে দেন। এ অবস্থায় দ্বিতীয় দফায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ২০ জানুয়ারি শপথ গ্রহণ করার মাত্র কয় দিন আগে তাঁর দণ্ডিত হওয়ার ক্ষেত্র প্রস্তুত হলো।
গতকাল ওই আদেশ প্রদানকালে চার রক্ষণশীল বিচারপতি ক্লেয়ারেন্স থমাস, স্যামুয়েল অ্যালিটো, নেইল গরসাচ ও ব্রেট কাভানাফ বলেন, তাঁরা ট্রাম্পের অনুরোধ রাখতেন। তবে তাঁর বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার বিষয়ে প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস ও বিচারপতি অ্যামি কোনি ব্যারেট সর্বোচ্চ আদালতের অপর তিনজন উদারপন্থী বিচারপতির সঙ্গে যোগ দেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার ওই আদেশ প্রদানকালে চার রক্ষণশীল বিচারপতি ক্লেয়ারেন্স থমাস, স্যামুয়েল অ্যালিটো, নেইল গরসাচ ও ব্রেট কাভানাফ বলেন, তাঁরা ট্রাম্পের অনুরোধ রাখতেন। তবে তাঁর বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার বিষয়ে প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস ও বিচারপতি অ্যামি কোনি ব্যারেট সর্বোচ্চ আদালতের অপর তিনজন উদারপন্থী বিচারপতির সঙ্গে যোগ দেন।
চলতি মাসের শুরুর দিকে নিউইয়র্কের ম্যানহাটান আদালতের বিচারক হুয়ান মারচ্যান আজ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দণ্ডাদেশ ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছিলেন। অবশ্য তিনি এমন ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, ট্রাম্পকে কোনো ধরনের শাস্তি বা কারাদণ্ডের সম্মুখীন হতে হবে না।
ট্রাম্পই হলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কোনো প্রেসিডেন্ট, যাঁর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার বিচার শুরু হয়। মামলায় গত বছরের মে মাসে ম্যানহাটানের ডিস্ট্রিক্ট আদালতের বিচারকেরা তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেন। দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর প্রাথমিকভাবে তাঁর বিরুদ্ধে দণ্ডাদেশ ঘোষণার কথা ছিল গত ১১ জুলাই। কিন্তু কয়েক দফায় তা পেছানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় আজ সকাল সাড়ে ৯টায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দণ্ডাদেশের ওপর শুনানি শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন এমন একজন জানান, নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মার-এ-লাগো থেকে ভার্চ্যুয়ালি এতে যুক্ত হবেন।
সুপ্রিম কোর্টে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওই অনুরোধকে এক বিরল আবেদন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কেননা, অঙ্গরাজ্য পর্যায়ের কোনো ফৌজদারি মামলায় স্থানীয় আদালতগুলোতে সব আপিলের পুরোপুরি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সর্বোচ্চ আদালত খুব বিরল ক্ষেত্রেই তাতে হস্তক্ষেপ করেন। পর্ন তারকাকে ঘুষ দেওয়ার মামলায় স্থানীয় আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের করা আপিল এখনো চলমান। এ ছাড়া ম্যানহাটান ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি আলভিন ব্র্যাগ যুক্তি দিয়েছেন যে দণ্ডাদেশপ্রক্রিয়া স্থগিত করার ট্রাম্পের অনুরোধ শোনার এখতিয়ারও সুপ্রিম কোর্টের নেই।
ট্রাম্পের বিবাদীপক্ষের কৌঁসুলিরা যুক্তি দিয়েছেন, প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনের মেয়াদে মামলাটি জিইয়ে রাখলে তা তাঁর শাসনকার্য পরিচালনার ক্ষমতা বাধাগ্রস্ত করবে। কিন্তু বিচারক হুয়ান মারচ্যান এ যুক্তি নাকচ করে বলেছেন, জুরির রায় পাশ কাটালে তা আইনের শাসন অপরিমেয়ভাবে ক্ষুণ্ন করবে।
প্রসঙ্গত, যৌন সম্পর্কের বিষয় ধামাচাপা দিতে পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ঘুষ দেওয়া–সংক্রান্ত ফৌজদারি মামলাটিতে ম্যানহাটান আদালতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিচার চলছে। এরই মধ্যে গত বছরের মে মাসে তঁকে মামলায় দোষীসাব্যস্ত করেন আদালত।
মামলায় স্টর্মি ড্যানিয়েলস অভিযোগ করেন, ২০০৬ সালে নেভাডা অঙ্গরাজ্যে একটি হোটেলে ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর যৌন সম্পর্ক হয়। সে ঘটনা যাতে তিনি কাউকে না বলেন, সে জন্য ব্যক্তিগত আইনজীবীর মাধ্যমে এর ১০ বছর পর ২০১৬ সালে তাঁকে ১ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার দেন ট্রাম্প। সেই সময় ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। ঘুষ দেওয়ার তথ্য তিনি তাঁর ব্যবসায়িক নথিতেও গোপন করেন।
অবশ্য ট্রাম্প স্টর্মির সঙ্গে যৌন সম্পর্ক ও ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ বরাবর অস্বীকার করেছেন। ট্রাম্পের দাবি, এ সবকিছু রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তাঁর হোয়াইট হাউসে প্রবেশ ঠেকাতে বাইডেন প্রশাসন এসব করেছে।
ট্রাম্পই হলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কোনো প্রেসিডেন্ট, যাঁর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার বিচার শুরু হয়। মামলায় গত বছরের মে মাসে ম্যানহাটানের ডিস্ট্রিক্ট আদালতের বিচারকেরা তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেন। দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর প্রাথমিকভাবে তাঁর বিরুদ্ধে দণ্ডাদেশ ঘোষণার কথা ছিল গত ১১ জুলাই। কিন্তু কয়েক দফায় তা পেছানো হয়।