রাশিয়ার সঙ্গে বন্দিবিনিময়: নাভালনিকেও মুক্ত করার চেষ্টা চালিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র
রাশিয়ার সঙ্গে বন্দিবিনিময় চুক্তির আওতায় কয়েকজন মার্কিন নাগরিক ও ক্রেমলিনবিরোধীকে মুক্ত করার ঘটনা উদ্যাপনের মধ্যেও একজনকে মুক্ত করতে না পারার ব্যর্থতায় হোয়াইট হাউসের আক্ষেপ রয়েই গেছে। আর তিনি হলেন রুশ ভিন্নমতাবলম্বী অ্যালেক্সি নাভালনি।
রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা কয়েকটি দেশের মধ্যে স্নায়ুযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় বন্দিবিনিময় প্রক্রিয়ায় ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল পত্রিকার সাংবাদিক ইভান গার্শকোভিচসহ উভয় পক্ষের ২৬ জন মুক্তি পেয়েছেন।
তুরস্কের মধ্যস্থতায় হওয়া ওই বন্দিবিনিময় চুক্তির সঙ্গে যুক্ত আছে সাতটি দেশ। চুক্তির ফলে রাশিয়ার কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন ১৬ জন এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিভিন্ন দেশের কারাগার থেকে ১০ জন। মুক্তি পাওয়ার পর এসব বন্দীকে আঙ্কারার মাধ্যমে নিজ নিজ দেশে পাঠানো হচ্ছে।
রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা কয়েকটি দেশের মধ্যে স্নায়ুযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় বন্দিবিনিময় প্রক্রিয়ায় ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল পত্রিকার সাংবাদিক ইভান গার্শকোভিচসহ উভয় পক্ষের ২৬ জন মুক্তি পেয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বলেছেন, ‘অ্যালেক্সি নাভালনিসহ অন্য বন্দীদের মুক্তিতে আমরা আমাদের অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করছিলাম। এ প্রক্রিয়া চলার মধ্যেই দুঃখজনকভাবে তিনি মারা যান।’
রাশিয়ার কারাগার থেকে ছাড়া পাওয়া ১৬ জনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ৩ নাগরিক, ১ জন মার্কিন গ্রিন কার্ডধারী, ৫ জন জার্মান ও ৭ জন রুশ রাজবন্দী রয়েছেন। অন্যদিকে রাশিয়ার যে ১০ বন্দী ছাড়া পেয়েছেন, তাঁরা ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র, নরওয়ে, স্লোভেনিয়া, পোল্যান্ড ও জার্মানির কারাগারে। এই ১০ জনের মধ্যে ২ জন অল্পবয়সীও রয়েছে।
নাভালনিকে মুক্ত করার বিষয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে গোপন আন্তর্জাতিক আলোচনা যখন গুরুত্বপূর্ণ একপর্যায়ে পৌঁছায়, তখন রাশিয়ার আর্কটিক কারাগারে তাঁর মারা যাওয়ার তথ্য ঘোষণা করা হয়। ক্রেমলিনের দুর্নীতির খবর প্রকাশ করে মস্কোর রোষানলে পড়েছিলেন নাভালনি। পরে ১৯ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়ে ওই কারাগারে বন্দী ছিলেন তিনি।
অ্যালেক্সি নাভালনিসহ অন্য বন্দীদের মুক্তিতে আমরা আমাদের অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করছিলাম। এ প্রক্রিয়া চলার মধ্যেই দুঃখজনকভাবে তিনি মারা যান।
নাভালনির এমন আকস্মিক মৃত্যুর খবর বন্দিবিনিময় প্রক্রিয়ায় যুক্ত থাকা হোয়াইট হাউসের দলকে হতবিহ্বল করে। এ প্রসঙ্গে একজন জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, ‘নাভালনির মৃত্যুর খবরে ওই দলের মনে হয়েছিল, যেন বাতাস তাদের নৌযানের পালগুলো উল্টে দিয়েছে।’
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার যেসব রুশ রাজবন্দী মুক্তি পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন নাভালনির সাবেক দুই সহযোগী লিলিয়া চেনিশেভা (৪২) ও সেনিয়া ফেদেয়েভা (৩২)।
বন্দিবিনিময়ের বিষয়ে রাশিয়ার প্রয়াত বিরোধী নেতা নাভালনির ঘনিষ্ঠ লিওনিড ভলকভ বলেন, ঐতিহাসিক এই বন্দিবিনিময় অনেকের জন্য আনন্দের হলেও তাঁর জন্য কষ্টের। কারণ, নাভালনি বেঁচে থাকলে তাঁর নামও বন্দিবিনিময়ের এই তালিকায় থাকত।