রক্তাক্ত ট্রাম্প মঞ্চেই বললেন, ‘ফাইট ফাইট ফাইট’
নির্বাচনী প্রচারের মঞ্চে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সবে বক্তব্য শুরু করেছেন। হঠাৎই গুলির শব্দ। মঞ্চে বসে পড়েন ট্রাম্প। নিরাপত্তাকর্মীরা ঘিরে ধরেন তাঁকে। শুরু হয়ে যায় হইচই, হট্টগোল।
পরে ট্রাম্প উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন। দেখা যায়, ডান কান থেকে রক্ত ঝরছে তাঁর। মুখমণ্ডলেও রক্ত। তখন ট্রাম্প মুষ্টিবদ্ধ হাত ওপরে তুলে বলে ওঠেন, ‘ফাইট, ফাইট, ফাইট!’
এ ঘটনা ঘটে পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের বাটলার এলাকায়, স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে। এই হামলায় দর্শক সারিতে থাকা একজন নিহত ও আরও দুজন গুরুতর আহত হয়েছেন। সিক্রেট সার্ভিসের সদস্যদের গুলিতে নিহত হন সন্দেহভাজন হামলাকারীও। চিকিৎসার পর ট্রাম্প ভালো আছেন বলে জানিয়েছে তাঁর প্রচার শিবির।
তবে নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মাস চারেক আগে ট্রাম্পের ওপর কেন হামলা হলো, সেটা এখনো জানা যায়নি। জানানো হয়নি সন্দেহভাজন হামলাকারীর পরিচয়। তদন্ত শুরু হয়েছে।
হামলার পরপরই ৭৮ বছর বয়সী ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে একটি পোস্ট দেন। তাতে নিজেই জানান, ‘এটা অবিশ্বাস্য যে আমাদের দেশে এ রকম একটি ঘটনা ঘটেছে। হামলাকারী সম্পর্কে এখনো কিছু জানা যায়নি। হামলাকারী নিহত হয়েছেন।’ পোস্টের শেষে ট্রাম্প লিখেন, ‘ঈশ্বর আমেরিকার মঙ্গল করুন!’
গুলিতে ডান কানের ওপরের অংশে ফুটো হয়ে গেছে বলেও ওই পোস্টে জানিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি জানান, ‘হঠাৎ আমি শব্দ শুনি, সঙ্গে সঙ্গে বুঝতে পারি অঘটন ঘটেছে। আর তখনই অনুভব করি গুলি আমার চামড়া ফুটো করে দিয়েছে। অনেক রক্ত পড়তে থাকে, আমি তখন বুঝতে পারি কী ঘটেছে।’
হামলার সময় ট্রাম্প সবে তাঁর বক্তব্য শুরু করেছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা ও সিক্রেট সার্ভিস জানিয়েছে, সমাবেশস্থলের কাছে একটি একতলা ভবনের ছাদ থেকে মঞ্চ লক্ষ্য করে পরপর কয়েকটি গুলি করা হয়।
গুলি লাগার পর ট্রাম্প ডান হাত দিয়ে তাঁর ডান কান চেপে ধরেন। এরপর হাঁটু গেড়ে মঞ্চে বসে পড়েন তিনি। দ্রুত ছুটে আসেন সিক্রেট সার্ভিসের সদস্যরা। ঘিরে ফেলেন ট্রাম্পকে। তখন ট্রাম্পের মাথায় থাকা ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ লেখা টুপি মঞ্চে পড়ে যায়।
ঘিরে ধরেই সেখান থেকে ট্রাম্পকে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন সিক্রেট সার্ভিসের সদস্যরা। এ সময় ট্রাম্প মুষ্টিবদ্ধ হাত শূন্যে তুলে বলে ওঠেন, ‘ফাইট, ফাইট, ফাইট!’ পরে পাশেই একটি গাড়িতে নিয়ে তোলা হয় ট্রাম্পকে। সেখান থেকে নেওয়া হয় স্থানীয় হাসপাতালে।
হামলার পর ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে ট্রাম্প সিক্রেট সার্ভিস ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। হামলাকারী গুলি ছোড়ার সঙ্গে সঙ্গেই দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ায় তিনি তাঁদের ধন্যবাদ দেন। দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ায় ট্রাম্পের মেয়ে ইভাঙ্কাও সিক্রেট সার্ভিস ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।