বাইডেনের সঙ্গে বৈঠক থেকে কী পেলেন সি
যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকো শহরে গত বুধবার এক নৈশভোজে অংশ নেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং। বিশ্বের বিভিন্ন নামীদামি প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীরাও এতে অংশ নেন। চীনা প্রেসিডেন্ট এই নির্বাহীদের মুখোমুখি হলে মার্কিন ব্যবসায়ী নেতারা একবার নয়, তিন–তিনবার দাঁড়িয়ে তাঁকে অভিবাদন জানান।
ছয় বছর পর যুক্তরাষ্ট্রে সির প্রথম সফর এটি। সফরে চীনের নেতা যেসব ক্ষেত্রে জয়ী হলেন, মার্কিন ব্যবসায়ী নেতাদের দাঁড়িয়ে তাঁকে অভিবাদন জানানোর এই ঘটনা সেসবেরই একটি। সান ফ্রান্সিসকোতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গেও বৈঠক করেন সি। দুই পরাশক্তির রাষ্ট্রপ্রধানদের বৈঠকে ফেন্টানিল মাদক থেকে শুরু করে পারস্পরিক সামরিক যোগাযোগ ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো ইস্যুতে সমঝোতা হয়েছে।
বাইডেন–সি বৈঠক সম্পর্কে জানেন, এমন দুই মার্কিন কর্মকর্তা জানান, সির এ সফরে এই তিন বিষয়ে সুরাহা করতে চেয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। তিন ক্ষেত্রেই বলতে গেলে ওয়াশিংটন সফল। মার্কিন কর্মকর্তারা মনে করছেন, এই বৈঠক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উত্তেজনা কমাতেও সাহায্য করবে।
কিন্তু মনে হচ্ছে চীনের প্রেসিডেন্ট সি তাঁর নিজের লক্ষ্য অর্জনেও সমর্থ হয়েছেন। এসব লক্ষ্য ছিল—সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিগত ছাড় আদায় করা; দ্বিপক্ষীয় উত্তেজনা কমানো, যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর আরও বেশি মনোযোগী হওয়ার সুযোগ করে দেবে এবং বিদেশি বিনোয়োগ আকর্ষণ (বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অনেকে এখন চীন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন)।
যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াইভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্যাসিফিক ফোরামের অ্যাডজাঙ্কট ফেলো আলেক্সান্দার নেইল বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও চীন তাদের বিরোধ মেটাতে পারলে সি চিন পিংকে তাঁর সব মনোযোগ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে দিতে হবে না। তিনি অভ্যন্তরীণ নানা সমস্যায় মনোযোগ দিতে পারবেন।’
বাইডেনের সঙ্গে আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান চেয়েছেন সি। বিশ্বে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার দিক থেকে এ সম্পর্ককে বিবেচনা করতে বাইডেনকে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। বিশ্লেষকেরা বলছেন, চীনের অর্থনীতির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সম্পর্কের গুরুত্ব ভালোই বোঝেন সি।
সিঙ্গাপুরের রাজারত্নম স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের অধ্যাপক লি মিংজিয়াং বলেন, ‘চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক রাখা যে এখনো গুরুত্বপূর্ণ, চীন সেটা মানে। বাইডেনের সঙ্গে সির বৈঠকের মূল চালিকা শক্তিও আসলে এ বিষয়টিই।’