হংকংয়ের আরও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নতুন ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
চীনশাসিত হংকংয়ের আরও কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। হংকংয়ে মানবাধিকার ও স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করাকে কেন্দ্র করে এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে।
এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, গত এক বছরে হংকংয়ে উচ্চপর্যায়ের স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা এবং অধিকার ও স্বাধীনতা নিশ্চিতের প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে চীনকে অনবরত পদক্ষেপ নিতে দেখা গেছে। এসব পদক্ষেপের মধ্যে সম্প্রতি আর্টিকেল ২৩ নামে নতুন একটি জাতীয় নিরাপত্তা আইন কার্যকরের ঘটনাও আছে। এর জবাবে হংকংয়ের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নতুন ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিতে যাচ্ছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর।
তবে কোন কোন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে, তা বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়নি।
গত নভেম্বরে, হংকংয়ের ৪৯ জন কর্মকর্তা, বিচারক ও কৌঁসুলির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিলের সমালোচনা করে হংকং। তারা বলে, মার্কিন আইনপ্রণেতারা লোক দেখানো অবস্থান নিয়েছেন এবং শহরটিকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছেন।
নাগরিকদের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করার অভিযোগে অতীতেও হংকংয়ের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞাসহ অন্যান্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ কর্মকর্তাদের সঙ্গে যেসব বৈদেশিক প্রতিষ্ঠান ব্যবসা করবে, তাদের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করা হয়েছে।
দ্য ইউএস হংকং পলিসি অ্যাক্টের আওতায় মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরকে প্রতিবছর কংগ্রেসে হংকংসংক্রান্ত পরিস্থিতি অবহিত করতে হয়।
হংকংয়ে চীনের পররাষ্ট্র দপ্তরের কমিশনারের কার্যালয় থেকে ব্লিঙ্কেনের বিবৃতির নিন্দা জানানো হয়েছে। আজ শনিবার কার্যালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দেওয়ার মধ্য দিয়ে হংকংয়ের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে।
মুখপাত্র মনে করেন, হংকংয়ের নীতিমালা নিয়ে প্রতিবছর প্রতিবেদন তৈরি না করে যুক্তরাষ্ট্রের উচিত নিজের দিকে মনোযোগ দেওয়া।
গতকাল শুক্রবার সকালে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে পরিচালিত সংবাদমাধ্যম রেডিও ফ্রি এশিয়া জানায়, তারা তাদের হংকং কার্যালয় বন্ধ করে দিচ্ছে। হংকংয়ে নতুন জাতীয় নিরাপত্তা আইন কার্যকর হওয়ার পর কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হওয়ায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
হংকং এককালে যুক্তরাজ্যের উপনিবেশ ছিল। ১৯৯৭ সালে অঞ্চলটি চীনের কাছে ফেরত দেওয়া হয়। তবে শর্ত ছিল ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থা’ নীতির আওতায় সেখানে মুক্তমতের চর্চাসহ বিভিন্ন স্বাধীনতা থাকবে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোয়, হংকংয়ে অনেক গণতন্ত্রপন্থী রাজনীতিবিদ এবং কর্মীকে জেলে পাঠানো হয়েছে বা তাঁরা নির্বাসনে চলে গেছেন।