যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম সংগঠনের সমর্থন পেলেন কমলা

গাজায় ইসরায়েলি হামলা নিয়ে উদ্বেগ সত্ত্বেও কমলার প্রতিই আস্থা রাখার কথা বলেছে মার্কিন মুসলিম অধিকার সংগঠন এমগেজ অ্যাকশন।

কমলা হ্যারিসছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম অধিকার সংগঠন এমগেজ অ্যাকশনের সমর্থন পেলেন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস। গাজায় চলমান ইসরায়েলি হামলা নিয়ে উদ্বেগ সত্ত্বেও মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলার প্রতিই আস্থা রাখার কথা বলেছে সংগঠনটি। এমগেজ অ্যাকশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মুসলিম দেশগুলোত ভ্রমণসংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা পুনবর্হালের কথা বলেছেন, যা বড় বিপদের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। কমলার প্রচারশিবিরের পক্ষ থেকে একে স্বাগত জানানো হয়েছে।

আগামী ৫ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এ নির্বাচনে কমলা ও ট্রাম্পের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যেই কমলাকে মুসলিম এ প্রভাবশালী সংগঠনটির পক্ষ থেকে সমর্থন দেওয়ার ঘটনা ঘটল। এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আরব আমেরিকান ও মুসলিম ভোটাররা মিশিগান, পেনসিলভানিয়া, জর্জিয়া ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যের ফলাফল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এর আগে ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এসব ভোটারের ভোটে জো বাইডেন ট্রাম্পকে হারাতে পেরেছিলেন।

গাজায় ইসরায়েলের হামলায় তেল আবিবকে সমর্থন দেওয়ায় এমগেজ অ্যাকশনসহ যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু মুসলিম সংগঠন বাইডেন প্রশাসনের সমালোচনা করে আসছে। কমলা হ্যারিসের পক্ষ থেকে গাজায় দ্রুত যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন ও জিম্মি মুক্তির কথা বলা হয়েছে। তিনি বলেছেন, ইসরায়েলের আত্মরক্ষার বিষয়টিকে সমর্থন করেন তিনি। একই সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের আত্মসংকল্পের অধিকারেরও পক্ষে তিনি।

এমগেজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়ায়েল আলজায়াত এক বিবৃতিতে বলেন, ‘যদিও আমরা কমলার সব নীতির সঙ্গে একমত নই, বিশেষ করে গাজার যুদ্ধের বিষয়ে, তারপরও আমরা বাস্তববাদ এবং বিশ্বাস নিয়ে তাকে সমর্থন দিচ্ছি। ব্যালট বাক্সে কাকে নির্বাচন করবেন, ভোটারদের জন্য কঠিন পরিস্থিতিকে সহজ করতে আমরা সৎ পথনির্দেশনা দিচ্ছি।’

এর আগে ২০২০ সালের নির্বাচনে বাইডেনকে সমর্থন দিয়েছিল এমগেজ অ্যাকশন। তাদের দাবি, ১০ লাখের বেশি ভোটারকে তারা উদ্বুদ্ধ করেছিল। এমগেজের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ট্রাম্পকে পরাজিত করতেই কমলাকে সমর্থন দেওয়া হচ্ছে, যাতে আবার ইসলামভীতি ছড়ানো ও ক্ষতিকর নীতিমালা থেকে মুসলিম সম্প্রদায়কে রক্ষা করা যায়।

ট্রাম্পের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। তাঁর প্রচারশিবির ইতিমধ্যে দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোতে আরব আমেরিকান ও মুসলিম ভোটারদের নিয়ে বেশ কিছু অনুষ্ঠান করেছে। এ সপ্তাহে মিশিগানে আরেকটি অনুষ্ঠান করছেন তিনি। ট্রাম্প বলেছেন, মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ সীমাবদ্ধ করে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করবেন। ২০২১ সালে বাইডেন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর এ নিষেধাজ্ঞা তুলে দিয়েছিলেন।

ট্রাম্পের সমালোচনায় কমলা

এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ডোনাল্ড ট্রাম্পকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ‘সবচেয়ে ব্যর্থ’ নেতা বলেছেন নির্বাচনে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস। গত বুধবার তিনি রিপাবলিকান পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ট্রাম্পকে ধনকুবেরদের একজন বন্ধু বলেও বর্ণনা করেন।

অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে একটি বক্তৃতায় এবং পরে টেলিভিশন নেটওয়ার্ক এমএসএনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কমলা সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ট্রাম্প বিদেশ থেকে পণ্য আমদানির ওপর আবার বড় ধরনের শুল্ক আরোপ করার পরিকল্পনা করেছেন। এতে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবিত্ত শ্রেণির পকেটে টান পড়বে।

পিটসবার্গে দেওয়া এক বক্তৃতায় ‘দেশকে নতুন দিশায় এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কমলা। তিনি এখানেও সাধারণ আমেরিকানদের জন্য পণ্যমূল্য কমিয়ে রাখার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য পেনসিলভানিয়ার শিল্পনগর পিটসবার্গ।