সাধারণ প্রচারেই ট্রাম্পের ‘হঠকারী মিথ্যা’ উতরে যাব: কমলা হ্যারিস
যুক্তরাষ্ট্রের আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হারাতে যথেষ্ট চড়াই–উতরাই পার হতে হবে বলে স্বীকার করেছেন দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস। তবে বলেছেন, তিনি সাদামাটা প্রচার দিয়েই তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান প্রার্থীর ‘হঠকারী মিথ্যা’ কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবেন।
নির্বাচনী প্রচারের অংশ হিসেবে গতকাল শনিবার ডোনাল্ড ট্রাম্প টেনেসিতে এক বিটকয়েন সম্মেলনে বক্তব্য দেন। একই দিন কমলা হ্যারিস বক্তব্য দেন ম্যাসাচুসেটসে নির্বাচনী তহবিল জোগাড়ের অনুষ্ঠানে। গায়ক ও সংগীত রচয়িতা জেমস টেলর এবং বাদ্যযন্ত্রশিল্পী ইয়োইয়ো মায়ের উপস্থিতিতে এ অনুষ্ঠানে ওই মন্তব্য করেন কমলা হ্যারিস।
আমার কর্মকাণ্ড সম্পর্কে ডোনাল্ড ট্রাম্প কিছু বেপরোয়া মিথ্যার আশ্রয় নিচ্ছেন। তিনি ও তাঁর রানিং মেট যা বলছেন, বলুন, এগুলো শুধুই বাগাড়ম্বর।কমলা হ্যারিস, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট
অনুষ্ঠানে কমলা হ্যারিস সমবেত জনতার উদ্দেশে বলেন, ‘এ নির্বাচনী লড়াইয়ে আমরা আন্ডারডগ (অপেক্ষাকৃত দুর্বল), তবে জনগণই এ প্রচারের শক্তি।’ তাঁর প্রচারশিবির বলেছে, অনুষ্ঠানটি থেকে তারা ১৪ লাখ (১ দশমিক ৪ মিলিয়ন) ডলার তুলতে পারবে।
কমলা হ্যারিস বলেন, ‘আমার কর্মকাণ্ড সম্পর্কে ডোনাল্ড ট্রাম্প কিছু বেপরোয়া মিথ্যার আশ্রয় নিচ্ছেন। তিনি ও তাঁর রানিং মেট (নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে তাঁর ভাইস প্রেসিডেন্ট) যা বলছেন, বলুন, এগুলো শুধুই বাগাড়ম্বর।’
কমলার বিষয়ে ট্রাম্প যেসব অভিযোগ তুলছেন, সেসবের একটি, তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নবজাতক হত্যাকে বৈধতা দিতে চান। গর্ভপাতের অধিকারের পক্ষে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলার শক্ত অবস্থানের প্রেক্ষাপটে ট্রাম্প এ দাবি করেন।
এদিকে, ক্যালিফোর্নিয়ার সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল কমলা হ্যারিস তাঁর সঙ্গে বিতর্কের মঞ্চে আসতে ট্রাম্পের প্রতি চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন। এর আগে চলতি সপ্তাহে ট্রাম্পের প্রচারশিবির জানিয়েছে, আগামী ১০ সেপ্টেম্বর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত টেলিভিশন বিতর্ক অনুষ্ঠান তারা চালিয়ে যেতে ইচ্ছুক নয়।
কমলার বিষয়ে ট্রাম্প যেসব অভিযোগ তুলছেন, সেসবের একটি, তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নবজাতক হত্যাকে বৈধতা দিতে চান। গর্ভপাতের অধিকারের পক্ষে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলার শক্ত অবস্থানের প্রেক্ষাপটে ট্রাম্প এ দাবি করেন।
এ প্রসঙ্গে কমলা হ্যারিস বলেন, ‘আমি আশা করি, তিনি (ট্রাম্প) ওই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবেন। কেননা, আমাদের অনেক কথা বলার আছে।’
উল্লেখ্য, সম্প্রতি মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের নানা বর্ণের মানুষ আর তরুণ ভোটারদের মধ্যে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের চেয়ে কমলা হ্যারিসের প্রতি সমর্থন বেশ ভালো বলা চলে। বাইডেন প্রেসিডেন্ট পদের প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেওয়ার আগে তাঁর প্রতি যে সমর্থন ছিল, এখন কমলার প্রতি সমর্থন তাঁর তুলনায় বেশ খানিকটা বেড়েছে।
সিএনএন/এসএসআরএসের সর্বশেষ জরিপে উঠে এসেছে এমনই চিত্র। জরিপের তথ্য বলছে, কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের মধ্যে কমলার প্রতি সমর্থন ৭৮ শতাংশ, অন্যদিকে ট্রাম্পের প্রতি সেই সমর্থন ১৫ শতাংশ। গত এপ্রিল ও জুন মাসে সিএনএনের জরিপের তথ্য বলছে, এই ভোটারদের মধ্যে বাইডেনের প্রতি সমর্থন ছিল ৭০ শতাংশ ও ট্রাম্পের প্রতি ২৩ শতাংশ।
হিসপানিক ভোটারদের মধ্যেও কমলার প্রতি সমর্থন বেড়েছে। এই ভোটারদের মধ্যে কমলার প্রতি ৪৭ শতাংশ এবং ট্রাম্পের প্রতি ৪৫ শতাংশের সমর্থন রয়েছে। কিন্তু এপ্রিল ও জুনের জরিপে হিসপানিকদের মধ্যে ৫০ শতাংশ ট্রাম্পের প্রতি এবং ৪১ শতাংশ বাইডেনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছিলেন।
৩৫ বছরের কম বয়সী ভোটারদের মধ্যেও আগের তুলনায় পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে। এসব ভোটারের মধ্যে ৪৭ শতাংশ কমলার প্রতি এবং ৪৩ শতাংশ ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। অথচ এপ্রিল ও জুনের জরিপে ট্রাম্পের প্রতি ৪৯ শতাংশ এবং বাইডেনের প্রতি ৪২ শতাংশ ভোটার সমর্থন জানিয়েছিলেন।