যৌন সম্পর্কের কথা গোপন রাখতে পর্ণ তারকাকে ঘুষ দেওয়ার ঘটনা ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক ‘নির্ভেজাল নির্বাচনী জালিয়াতি’ ছিল বলে মন্তব্য করেছেন কৌঁসুলিরা। ঘুষ কেলেঙ্কারির ওই ঘটনায় সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ফৌজদারির মামলার বিচারের শুনানিতে এ মন্তব্য করেন তাঁরা।
শুনানিতে কৌঁসুলিরা ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র করা ও যৌন কেলেঙ্কারি লুকানোর অভিযোগ এনেছেন।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে করা ফৌজদারি মামলায় ১৫ এপ্রিল বিচারকাজ শুরু হয়েছে নিউইয়র্কের আদালতে। সেদিন আদালতে হাজিরও হন তিনি। তিনিই প্রথম কোনো সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট, যিনি ফৌজদারি মামলায় বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেন।
নিউইয়র্কের আদালতে শুরু হওয়া ঐতিহাসিক এ মামলার বিচারে গতকাল সোমবার জুরিবোর্ডের সামনে প্রাথমিক আইনি যুক্তিতর্কে (ওপেনিং স্টেটমেন্ট) একজন আইনজীবী বলেন, ‘এটি ছিল নির্বাচনী জালিয়াতি; একেবারে নির্ভেজাল ও সোজাসাপটা।’
তবে ট্রাম্পের পক্ষ সমর্থন করে তাঁর আইনজীবী বলেন, সাবেক এই প্রেসিডেন্ট কোনো অপরাধ করেননি এবং তিনি যা করেছেন, সেটি নির্বাচনকে প্রভাবিত করার কোনো অবৈধ চেষ্টা ছিল না। তিনি নির্দোষ।
২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হন ট্রাম্প। এর আগে যৌন সম্পর্কের কথা গোপন রাখতে পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ ওঠে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। আবার ওই অর্থের বিষয়টি গোপন রাখতে তিনি তাঁর ব্যবসায়িক রেকর্ডেও জালিয়াতির আশ্রয় নেন।
এ ঘটনায় দায়ের হওয়া ফৌজদারি মামলায় ১৫ এপ্রিল ট্রাম্পের বিচার শুরু হয়েছে নিউইয়র্কের আদালতে। সেদিন আদালতে হাজিরও হন তিনি। তিনিই প্রথম কোনো সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট, যিনি ফৌজদারি মামলায় বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেন।
মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে ৭৭ বছর বয়সী ট্রাম্পের সর্বোচ্চ চার বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। তবে জরিমানা দিয়ে তিনি কারাবাস থেকে রেহাই পেতে পারবেন। অবশ্য মামলায় আনা অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন ট্রাম্প।
আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিরুদ্ধে রিপাবলিকান পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থী ট্রাম্প। এই মামলাকে ‘রাজনৈতিক’ বলে মন্তব্য করে আসছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, তথ্য গোপন রাখার বিনিময়ে গোপনে এমন অর্থ দেওয়া অবৈধ নয়। কিন্তু ম্যানহাটান ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির কার্যালয় অভিযোগ করেছে, পর্নো তারকার জন্য দেওয়া অর্থকে ট্রাম্প অবৈধভাবে আইনি ব্যয় হিসেবে দেখাতে গিয়ে আইন ভঙ্গ করেছেন।
ব্যবসায়িক রেকর্ডে জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়ার অভিযোগে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মোট ৩৪টি গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে। বিচারের রায়ের জন্য ১২ বিচারককে একমত হতে হবে যে ট্রাম্প নির্দিষ্ট অভিযোগে দোষী বা নির্দোষ।