ট্রাম্পকে নিয়ে এপেক সম্মেলনেও উদ্বেগের ছাপ, একতরফাবাদের সমালোচনা করলেন সি

চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংছবি: রয়টার্স ফাইল ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে জয়ী হওয়ার বিষয়টি নিয়ে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংস্থার (এপেক) সম্মেলনেও উদ্বেগের ছাপ দেখা গেছে। গতকাল শুক্রবার সম্মেলনে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বলেছেন, অর্থনৈতিক বিশ্বায়নের স্বার্থে একতরফাবাদ ও সুরক্ষাবাদকে প্রত্যাখ্যান করা দরকার।

ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর চীন কোন অবস্থানে থাকার চেষ্টা করবে, তারই ইঙ্গিত দিচ্ছে সির এই বক্তব্য।

চীন থেকে পণ্য আমদানিতে ৬০ শতাংশের বেশি শুল্কারোপের অঙ্গীকার করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে বেইজিং ও চীনা কোম্পানিগুলোর আশা, ট্রাম্পের বাণিজ্যিক সুরক্ষা নীতিগুলো ইউরোপ ও এশিয়া অঞ্চলে মার্কিন মিত্রদের মধ্যেও বিরক্তি তৈরি করবে। এতে চীন বিশ্বজুড়ে নিজেদের প্রভাব বাড়ানোর পাশাপাশি বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়নেরও ভালো সুযোগ পাবে।

চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও গতকাল এপেক সিইও সম্মেলনে সি চিন পিংয়ের একটি লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান। ওই বক্তব্যে সি বলেন, বর্তমানে অর্থনৈতিক বিশ্বায়ন ‘প্রতিকূল পরিস্থিতির’ মধ্যে আছে। তবে বক্তব্যে নির্দিষ্ট করে কোনো দেশ বা নেতার নাম উল্লেখ করা হয়নি।

চীনের প্রেসিডেন্ট বলেন, অস্থিরতা ও পরিবর্তনের একটি নতুন যুগে প্রবেশ করেছে বিশ্ব। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে একতরফাবাদ ও সুরক্ষাবাদ। বিশ্ব অর্থনীতিতে ভাঙন আরও তীব্র হচ্ছে। নানা অজুহাতে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাধাগ্রস্ত করা এবং পরস্পর নির্ভরশীল বিশ্বকে বিচ্ছিন্ন করার ওপর জোর দেওয়ার বিষয়গুলো ইতিহাসের ধারাকে উল্টে দিচ্ছে।

২০১৬ সালে ট্রাম্প প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন। বিশ্লেষকদের কেউ কেউ বলছেন, তখন সুরক্ষাবাদ নীতিতে বিশ্বাসী ট্রাম্পের শাসনাধীন যুক্তরাষ্ট্রের বিকল্প হিসেবে বিশ্ববাজারে চীন ভালো বিকল্প হয়ে উঠতে পারলেও এখন দেশটি সে জৌলুশ হারিয়েছে।

ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের রাষ্ট্রবিজ্ঞানী জা ইয়ান চং বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি ২০১৬ সালের মতো নয়। শিল্প খাতে চীনের রাষ্ট্রীয় ভর্তুকি এবং এর ফলে দেশটির চাহিদার তুলনায় অতিরিক্ত উৎপাদনসক্ষমতা কীভাবে অন্যান্য দেশের অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে, সেটিই এখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বড় উদ্বেগের বিষয়।’

জা ইয়ান চং মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র যতটা সুরক্ষাবাদী, চীনও ততটাই সুরক্ষাবাদী। দেশটির অর্থনীতি আগের চেয়ে অনেক কম উন্মুক্ত।