সংখ্যায় সংখ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন

ফাইল ছবি: এএফপি

দোদুল্যমান রাজ্য, ইলেকটোরাল কলেজ ভোট, প্রার্থীদের জনপ্রিয়তার উত্থান-পতন কিংবা লাখ লাখ সম্ভাব্য ভোটার। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কত কিছুই না বিবেচনায় নিতে হয়।

নিচে সংখ্যার ভিত্তিতে একনজরে এবারের ভোটের গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য তুলে ধরা হলো:

দুই

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে একাধিক স্বতন্ত্র প্রার্থী ভোটের লড়াইয়ে নামেন বটে। তবে শেষ পর্যন্ত এই প্রতিযোগিতা হয় মূলত দুই বড় দলের দুই প্রার্থীর মধ্যে। এবারের দুই প্রার্থী হলেন, ডেমোক্রেটিক দল থেকে কমলা হ্যারিস এবং রিপাবলিকান দল থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্প।

পাঁচ

ভোট হবে ৫ নভেম্বর। যুক্তরাষ্ট্রে ঐতিহ্যগতভাবে নভেম্বর মাসের প্রথম সোমবারের পরের মঙ্গলবারে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট হয়ে থাকে।

সাত

দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য সাতটি। দোদুল্যমান অর্থ, এই সাত অঙ্গরাজ্যে কোনো দলই স্পষ্ট ব্যবধানে এগিয়ে নেই। এসব অঙ্গরাজ্যে নিরপেক্ষ ভোটার থাকেন যাঁরা যেকোনো প্রার্থীর ভালোমন্দ বিবেচনা করে ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সাধারণত ভোটে জয়-পরাজয়ের ব্যবধান নির্ধারণে দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলো মূল ভূমিকা রাখে। দোদুল্যমান এই সাত অঙ্গরাজ্য হলো অ্যারিজোনা, জর্জিয়া, মিশিগান, নেভাদা, নর্থ ক্যারোলাইনা, পেনসিলভানিয়া এবং উইসকনসিন।

নিজেদের জয় নিশ্চিত করতে কমলা এবং ট্রাম্প উভয়ই এই সাত অঙ্গরাজ্যের ভোটারদের দলে টানতে চাইছেন। এ জন্য এসব অঙ্গরাজ্যে নিরবচ্ছিন্নভাবে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।

অধিকাংশ জনমত জরিপে, এবারের ভোটে যেহেতু হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া গেছে, তাই এসব রাজ্যে সামান্য ভোটের ব্যবধানে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হতে পারে।

৩৪ থেকে ৪৩৫

ভোটের দিন ভোটাররা শুধু দেশের প্রেসিডেন্টই বেছে নেবেন না। তাঁরা মার্কিন কংগ্রেসেরও নতুন আকার দেবেন। ৫ নভেম্বরের ভোটে তাঁরা ৩৪ জন সিনেটর এবং কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের ৪৩৫ আসনের সবাইকে বেছে নেবেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের সদস্যরা দুই বছরের জন্য নির্বাচিত হন। বর্তমান প্রতিনিধি পরিষদে রিপাবলিকানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ।

কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে আসনসংখ্যা ১০০। একজন সিনেটর ছয় বছরের জন্য নির্বাচিত হন।

৫৩৮

সরাসরি সাধারণ ভোটারদের (পপুলার ভোট) ভোটে নয় বরং ৫৩৮ ইলেকটোরাল কলেজ ভোটে যুক্তরাষ্ট্রে একজন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। জয়ের জন্য অন্তত ২৭০টি ভোট পেতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রে ৫০টি অঙ্গরাজ্য। একেকটি অঙ্গরাজ্যে ইলেকটোরাল ভোট একেক রকম। প্রতিটি অঙ্গরাজ্য কতটি কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট রয়েছে, তার ভিত্তিতে কতজন ইলেকটোরাল কলেজ হবেন, তা নির্ধারিত হয়। সঙ্গে প্রতিটি রাজ্যে থাকা দুজন সিনেটর ইলেকটোরাল কলেজ হন। কোন অঙ্গরাজ্যে কতটি ডিস্ট্রিক্ট থাকবে, তা নির্ধারিত হয় সেখানে মোট জনসংখ্যার আকারের ভিত্তিতে।

যেমন প্রত্যন্ত ভারমন্ট অঙ্গরাজ্যে ইলেকটোরাল কলেজ ভোট মাত্র তিনটি। এবারও যথারীতি সবচেয়ে বেশি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট ক্যালিফোর্নিয়ায়, ৫৪টি।

৭ লাখ ৭৪ হাজার

পিউ রিসার্চ সেন্টারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২০ সালে ৭ লাখ ৭৪ হাজার নির্বাচনকর্মী ভোটের মাঠে কাজ করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রে তিন ধরনের নির্বাচনকর্মী ভোটের দায়িত্ব পালন করেন।

নির্বাচনকর্মীদের একটি বড় অংশ ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের স্বাগত জানান, ভাষাগত সমস্যায় সহায়তা করেন, ভোটের সরঞ্জাম ঠিকঠাক করেন এবং ভোটারদের পরিচয়পত্র ও নিবন্ধন যাচাই করেন।

নির্বাচনকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়াসহ অধিক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের জন্য নির্বাচনী কর্মকর্তাদের বেছে নেওয়া হয়, ভাড়া করা হয় বা নিয়োগ দেওয়া হয়।

আর রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের পক্ষে পোলিং এজেন্টদের নিয়োগ দেন। তাঁরা ভোট গণনা পর্যবেক্ষণ করেন।

সাড়ে ৭ কোটি

এবার ২ নভেম্বর পর্যন্ত সাড়ে সাত কোটি ভোটার আগাম ভোট দিয়ে ফেলেছেন। ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যকেন্দ্র থেকে এই সংখ্যা জানা গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বেশির ভাগ রাজ্যে সরাসরি বা ডাকযোগে আগাম ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা আছে। সব ভোটারকে ভোটের আওতায় আনতে এই আগাম ভোটের ব্যবস্থা।

২৪ কোটি ৪০ লাখ

এবার যুক্তরাষ্ট্রে মোট ২৪ কোটি ৪০ লাখ ভোট দেওয়ার যোগ্য নাগরিক রয়েছেন। তাদের মধ্যে কতজন ভোট দেন, সেটা অবশ্যই দেখার বিষয়।

পিউ রিসার্চ সেন্টারের ওয়েবসাইটে থাকা তথ্যানুযায়ী, ২০২০ সালে দুই-তৃতীয়াংশ (৬৬ শতাংশ) ভোটার ভোট দিয়েছিলেন। ১৯০০ সালের পর যুক্তরাষ্ট্রে কোনো জাতীয় নির্বাচনে এটাই সর্বোচ্চ ভোট।’

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন