ডেমোক্রেটিক পার্টির জাতীয় সম্মেলনের মঞ্চে কাঁদলেন বাইডেন

ডেমোক্রেটিক পার্টির জাতীয় সম্মেলনের মঞ্চে অশ্রুসিক্ত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক পার্টির জাতীয় সম্মেলন শুরু হয়েছে স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার রাতে। সম্মেলনে ভাষণ দিতে মঞ্চে উঠে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

মঞ্চে মেয়ে অ্যাশলি বাইডেনকে কিছুক্ষণ জড়িয়ে ধরে থাকেন জো বাইডেন। পরে তাঁকে চোখের পানি মুছতে দেখা যায়।

শিকাগোর ইউনাইটেড সেন্টার অ্যারেনায় শুরু হওয়া চার দিনের এই সম্মেলন শেষ হবে আগামী বৃহস্পতিবার। আগামী নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতাদের এই জমায়েত এখন আগ্রহের কেন্দ্রে।

সম্মেলনে বাইডেন বলেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেশের সেবা করতে পারাটা তাঁর জন্য সম্মানের। এই কাজকে তিনি ভালোবাসেন। তবে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন দেশকে।

আরও পড়ুন

আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে বাইডেনকে চাপ দিয়েছিলেন ডেমোক্রেটিক পার্টির অনেক নেতা। তিনি তাঁদের প্রতি ক্ষুব্ধ বলে যেসব কথা বলা হচ্ছে, তা সত্য নয় বলে উল্লেখ করেন বাইডেন।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে জয়ী করতে মার্কিন ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানান বাইডেন।

সম্মেলনে সমবেত জনতার উদ্দেশে অ্যাশলি বাইডেন বলেন, তাঁর বাবা জো বাইডেন সত্যিকার অর্থে একজন কন্যাসন্তানের বাবা। তিনি নারীদের সব সময় মূল্যায়ন করেন। তাঁদের ওপর বিশ্বাস রাখেন।

সম্মেলনে বাইডেন প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর বিভিন্ন কাজের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আরও উন্নত একটি যুক্তরাষ্ট্র তৈরিতে তাঁরা কাজ করে যাচ্ছেন।

সম্মেলনের শেষ দিন আগামী বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে কমলা ডেমোক্রেটিক পার্টির আনুষ্ঠানিক মনোনয়ন গ্রহণ করবেন।

আরও পড়ুন

সেদিনই মঞ্চে ওঠার কথা ছিল কমলার। কিন্তু তিনি প্রথম দিনই সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে দলের নেতা-কর্মীদের চমকে দেন।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ঐতিহাসিক নেতৃত্বের জন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানাতে নির্ধারিত সময়ের আগে সম্মেলনে আসেন বলে জানান কমলা।

সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীরা কমলাকে দেখে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বক্তব্য শুরু করেন কমলা। এ সময় তিনি আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পরাজিত করার অঙ্গীকার করেন।

জনমত জরিপগুলোতে দেখা গেছে, নির্বাচনী প্রচারে গতি এনেছেন কমলা। সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে জাতীয়ভাবে এবং পেনসিলভানিয়াসহ আটটি প্রতিযোগিতাপূর্ণ অঙ্গরাজ্যের অনেকগুলোতে ব্যবধান মিটিয়ে ফেলেছেন। নভেম্বরের নির্বাচনে জিতলে কৃষ্ণাঙ্গ ও এশীয় ঐতিহ্যের কমলা হবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট।

আরও পড়ুন

জাতীয় সম্মেলনে বক্তব্য দেন হিলারি ক্লিনটনও। তিনি মঞ্চে উঠলে করতালিতে মুখর হয়ে ওঠে সম্মেলনস্থল। এ সময় হিলারি বলেন, ‘আমেরিকায় কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে। আপনারা তা অনুভব করতে পারছেন। এমন কিছু ঘটতে যাচ্ছে, যার জন্য আমরা দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করছি, স্বপ্ন দেখে আসছি।’

২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে লড়ে পরাজিত হন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হিলারি। তিনি সম্মেলনে উপস্থিত জনতার উদ্দেশে বলেন, তাঁরা প্রথম নারী হিসেবে কমলাকে শিগগির যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের আসনে দেখতে পাবেন।

ডেমোক্রেটিক পার্টির জাতীয় সম্মেলন কেন্দ্রের বাইরে হাজারো মানুষ গাজা-ইসরায়েল যুদ্ধে মার্কিননীতির প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ করেছেন।