কানাডায় মন্দিরের সামনে সহিংসতা, গ্রেপ্তার ৩
কানাডার টরন্টোর শহরতলি ব্রাম্পটনে একটি মন্দিরের সামনে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বয়স ২৩, ৩১ ও ৪৩ বছর। তাঁদের হাতে অস্ত্র ছিল। তাঁরা পুলিশকে আক্রমণ করেছিলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে বেআইনি কার্যকলাপের একাধিক অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ভারত ও কানাডার সম্পর্কে এখন চরম উত্তেজনা রয়েছে। কানাডার অভিযোগ, একজন শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতার হত্যায় ভারতীয় কূটনীতিকেরা যুক্ত।
ভারত সেই অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছে। কানাডার দাবি, তাদের হাতে প্রমাণ আছে। পরে ভারত বলছে, তারা চেয়েও কোনো নির্দিষ্ট প্রমাণ পায়নি।
কানাডার মন্দিরে কী হয়েছিল?
রোববার টরন্টোর হিন্দু সভা মন্দিরের সামনে এ সংঘর্ষ হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওতে দেখা গেছে, কিছু শিখের হাতে খালিস্তানি পতাকা ছিল। তবে কারা সহিংসতা শুরু করে, তা ভিডিও থেকে বোঝা যায়নি। ভারতের পাঞ্জাবকে স্বাধীন রাষ্ট্র করতে চায় খালিস্তানপন্থীরা।
ভারতীয় কিছু কূটনীতিক তখন মন্দিরের ভেতরে ছিলেন। তখন এই সংঘর্ষ শুরু হয়। ভিডিওতে দেখা গেছে, লড়াই শুরু হওয়ার পরেই লাঠি দিয়ে একে অন্যকে আক্রমণ করা হয়েছে। ঘুষিও সমানে চলেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, একজন পুলিশ অফিসারও বিক্ষোভে অংশ নেন। তাঁর হাতেও খালিস্তানি পতাকা ছিল বলে ভিডিওতে দেখা গেছে। সেই অফিসারকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, এরপর বেশ কিছু এলাকায় প্রতিবাদ দেখানো হয়। পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, কানাডায় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দেখানো যায়। কিন্তু কোনোরকম অশান্তি বরদাশত করা হবে না।
মোদি ও ট্রুডোর নিন্দা
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘হিন্দু মন্দিরে এই ইচ্ছাকৃত আক্রমণের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমাদের কূটনীতিকদের কাপুরুষোচিতভাবে ভয় দেখানোর চেষ্টা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এ ধরনের ঘটনার ফলে ভারতের সংকল্প দুর্বল হবে না। আমরা আশা করি, কানাডার সরকার বিচার ও আইনের শাসন বহাল রাখবে।’
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, ‘কানাডায় হিন্দু মন্দিরে যা হয়েছে, তা খুবই উদ্বেগজনক।’
অপর দিকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ‘চরমপন্থী ও বিচ্ছিন্নতাবাদীরা যেভাবে হিন্দু সভা মন্দিরে আক্রমণ করেছে, তার তীব্র নিন্দা জানানো হচ্ছে। আমরা কানাডার কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি, তারা যেন সব ধর্মীয় স্থানকে সুরক্ষিত রাখে।’
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, ‘আমরা এটাও আশা করি, যারা সহিংসতা করেছে, তাদের শাস্তি দেওয়া হবে। কানাডায় ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। আমাদের দূতাবাস সবাইকে একইভাবে সেবা করতে বদ্ধপরিকর। এভাবে তাদের ভয় পাওয়ানো যাবে না।’
এদিকে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এই সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘এ ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’
কানাডা-ভারত সম্পর্ক তলানিতে
গত সপ্তাহে কানাডার সরকার অভিযোগ করে, ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীকে হত্যার পরিকল্পনায় শামিল ছিলেন।
কানাডার দাবি, তারা ভারতের হাতে খালিস্তানপন্থীর হত্যার তথ্যপ্রমাণ তুলে দিয়েছে। কিন্তু ভারত সরকার বারবার দাবি করেছে, সম্পূর্ণ অবাস্তব অভিযোগ করা হয়েছে।