যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন
এক মাস আগেও এগিয়ে থাকলেন কমলা
যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকেরা তাঁদের নতুন প্রেসিডেন্ট বেছে নিতে আগামী ৫ নভেম্বর নির্বাচনে ভোট দেবেন।
যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকেরা তাঁদের প্রেসিডেন্ট বেছে নিতে আগামী ৫ নভেম্বর নির্বাচনে ভোট দেবেন। এবারের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ২০২০ সালের নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গত জুলাই মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়ে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হিসেবে সমর্থন দেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র কি প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট পেতে যাচ্ছে, নাকি দ্বিতীয় মেয়াদে ফিরছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প?
নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসছে, ততই বিভিন্ন জরিপের ফল গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান পার্টির নানা প্রচার–কৌশল জরিপে সমর্থন বাড়া–কমার ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলছে। তবে এক মাস আগেও জরিপে এগিয়ে থাকলেন কমলা।
এ মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় জরিপের গড়ে ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন কমলা। গত জুলাই মাসে নির্বাচনে দৌড় শুরুর পর কমলা জাতীয় জরিপে ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে থেকেছেন। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের এবিসি নিউজের জরিপ বিশ্লষণে কাজ করা ওয়েবসাইট ফাইভ থার্টি এইটের তথ্য অনুযায়ী, জাতীয় জরিপ গড়ে ট্রাম্পের চেয়ে দুই পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছেন কমলা। কমলার সমর্থন ৪৮ শতাংশ আর ট্রাম্পের ৪৬ শতাংশ।
এর আগে গত ১০ সেপ্টেম্বর দুই প্রার্থী পেনসিলভানিয়ায় মুখোমুখি টেলিভিশন বিতর্কে অংশ নিয়েছেন। ওই বিতর্ক দেখেছিলেন ৬ কোটি ৭০ লাখ মানুষ। ওই সপ্তাহে করা অধিকাংশ জরিপে দেখা যায়, বিতর্কে কমলার পারফরম্যান্সের প্রভাব ইতিবাচক। অনেক জরিপে তিনি এগিয়েছেন। এক দিনে তিনি আড়াই শতাংশ পর্যন্ত এগিয়েছিলেন। কিন্তু বিতর্কের আগে ট্রাম্পের সমর্থন বাড়ছিল। বিতর্কের পর তাঁর সমর্থন কিছুটা কমে যায়। বিতর্কের এক সপ্তাহ পর দেখা যায়, ট্রাম্পের সমর্থন দশমিক ৫০ শতাংশ কমেছে।
এসব জরিপে মূলত দেশজুড়ে কোন প্রার্থী কতটা জনপ্রিয় অবস্থায় রয়েছেন, তার ইঙ্গিত পাওয়া যায়। তবে নির্বাচনী ফলাফল নির্ধারণের ক্ষেত্রে এগুলো নিখুঁত পূর্বাভাস দিতে পারে না। এর কারণ, যুক্তরাষ্ট্রে ইলেকটোরাল কলেজ সিস্টেম রয়েছে। এতে জনসংখ্যার ভিত্তিতে অঙ্গরাজ্যগুলোর ইলেকটোরাল ভোট নির্ধারিত হয়। এতে যুক্তরাষ্ট্রের মোট ৫৩৮টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের মধ্যে হোয়াইট হাউসে যেতে ২৭০টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের মাইলফলক পার হতে হবে। এ হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রের দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোর হিসাব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
এ মুহূর্তে জরিপ অনুযায়ী, সাতটি গুরুত্বপূর্ণ দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যে দুই প্রার্থীর হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। দুই প্রার্থীর মধ্যে এক বা দুই পয়েন্টের পার্থক্য এসব অঙ্গরাজ্যে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয় পেনসিলভানিয়াকে। কারণ, এ অঙ্গরাজ্যে ইলেকটোরাল কলেজ ভোট ১৯টি। তাই এখানে জিতলে ২৭০ ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পাওয়ার কাজ সহজ হয়ে যায়।
ফাইভ থার্টি এইটের তথ্য অনুযায়ী, পেনসিলভানিয়ায় এক পয়েন্টে এগিয়ে কমলা। এরপর ১৬ ইলেকটোরাল কলেজ ভোট থাকা নর্থ ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্যে এক পয়েন্টে এগিয়ে ট্রাম্প। কমলা নেভাদা এক পয়েন্টে, মিশিগান ও উইসকনসিনে দুই পয়েন্টে এগিয়ে। ট্রাম্প অ্যারিজোনা ও জর্জিয়ায় এক পয়েন্টে এগিয়ে।
পেনসিলভানিয়ায় নির্বাচনে প্রচারে ট্রাম্প
দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য পেনসিলভানিয়ায় নির্বাচনে প্রচারে ফিরলেন ট্রাম্প। এখানেই গত ১৩ জুলাই তাঁকে হত্যাচেষ্টা চালানো হয়েছিল। একটি গুলি তাঁর কান ছুঁয়ে চলে যায়। অল্পের জন্য বেঁচে যাওয়া ট্রাম্প আবার এই অঙ্গর্যাজে গতকাল শনিবার থেকে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছেন। এখানে টানানো বিলবোর্ডে ট্রাম্পের গুলি খাওয়ার পরের এই ছবি ব্যবহার করে লেখা হচ্ছে ‘বুলেটপ্রুফ’।
মুসলিম নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ কমলার
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত কমলা। সেখানকার ফ্লিন্ট শহরে আরব–আমেরিকান ও অন্য মুসলিম নেতাদের সঙ্গে গত শুক্রবার সাক্ষাৎ করেছেন তিনি। ফিলিস্তিনের গাজা ও লেবাননে ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত সমর্থনে ক্ষুব্ধ দেশটির আরব–আমেরিকান ও মুসলিম ভোটাররা। এ অবস্থায় তাঁদের সমর্থন পুনরুদ্ধারের চেষ্টার অংশ হিসেবে ওই সাক্ষাৎ করলেন কমলা হ্যারিস।