বাইডেনকে ঘিরে আশা কমছে, বাড়ছে চাপ
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কী বলছেন আর কী করছেন, সেদিকে নজর সবার। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কে বিপর্যয়ের পর প্রতিদিনই নতুন পরীক্ষার মুখে পড়ছেন ডেমোক্রেটিক দলের এই নেতা। এ পরিস্থিতি থেকে উতরাতে তাই তাঁর প্রতিটি পদক্ষেপই এখন গুরুত্বপূর্ণ।
৮১ বছর বয়সী বাইডেনের শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা নিয়ে যে প্রশ্ন ছিল, সপ্তাহ দুয়েক আগে ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কে নাস্তানাবুদ হওয়ার পর তা আরও জোরালো হয়েছে। নিজের দলের নেতা ও অর্থদাতারা অনেকেই এখন তাঁকে আর নির্বাচনে চান না। বাইডেনবিরোধীদের এ তালিকা দিন দিন বড় হয়েছে। এরই মধ্যে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছেন হলিউড তাঁরকা জর্জ ক্লুনি।
জর্জ ক্লুনি ডেমোক্র্যাটদের বড় অর্থদাতাদের একজনও। যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী দৈনিক দ্য নিউইয়র্ক টাইমস–এ এক নিবন্ধে তিনি বাইডেনকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ২০১০ বা ২০২০ সালে যে বাইডেনকে তিনি দেখেছিলেন, তাঁর সঙ্গে আজকের বাইডেনের মিল নেই। ক্লুনির এ মন্তব্যকে বাইডেনের জন্য বড় হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বাইডেনের ওপর বড় ঝাপটা এসেছে তাঁর দলীয় মার্কিন সিনেটের সদস্য পিটার ওয়েলচের দিক থেকেও। প্রথম সিনেট সদস্য হিসেবে বাইডেনের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে সংবাদপত্রে একটি নিবন্ধ লিখেছেন তিনি। গতকাল বুধবার ওই মতামতে ওয়েলচ লিখেছেন, ‘দেশের ভালোর জন্য’ বাইডেন আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে পারেন।
ঘোরতর এ সংকট কাটিয়ে সমর্থন নিজের দিকে টানতে বাইডেনের সামনে একটি সুযোগ ছিল সম্প্রতি সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকার। তবে সেখানে ভালো কিছু করে দেখাতে পারেননি তিনি। আশার আলো দেখাতে পারেননি নর্থ ক্যারোলাইনা, নিউইয়র্ক, নিউ জার্সি, পেনসিলভেনিয়া, উইসকনসিন ও ভার্জিনিয়ায় নির্বাচনী সমাবেশেও।
এরই মধ্যে বাইডেনের সামনে আরেকটি সুযোগ হতে পারে আজ বৃহস্পতিবারের ন্যাটো সম্মেলন। পশ্চিমা সামরিক জোটের এ সম্মেলনে তাঁকে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে। এ সংবাদ সম্মেলন অনেকটাই পরিষ্কার করবে—সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে কতটা সাবলীলভাবে উত্তর দিতে পারেন তিনি।
এ সম্মেলন নিয়ে বাইডেনের প্রচার শিবিরের মতো আশাবাদী মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের সাবেক স্পিকার ন্যান্সি পেলোসিও। প্রভাবশালী এই ডেমোক্র্যাট নেতার আহ্বান—সমালোচকেরা যেন অন্তত ন্যাটো সম্মেলন পর্যন্ত নিজেদের মুখে লাগাম টানেন। তিনি বলেন, ‘চলতি সপ্তাহে আমরা কেমন করি, তা না দেখা পর্যন্ত, আপনাদের ভাবনাগুলো সামনে আনবেন না।’
বাইডেন এখনো নির্বাচনে লড়াই করার সিদ্ধান্তে অটল রয়েছেন। এ অবস্থান আঁকড়ে রেখে তিনি যদি বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলন বা সামনের দিনগুলোতে ভালোও করেন, তারপরও তাঁকে আগামী ১০ সেপ্টেম্বর আবার বিতর্কে ট্রাম্পের মুখোমুখি হতে হবে। সেখানে তিনি কেমন করবেন, তা অনিশ্চিত। আর ওই বিতর্কও হতে যাচ্ছে নির্বাচনের মাত্র মাস দুয়েক আগে। সেখানে খারাপ করলে ঘুরে দাঁড়ার আর তেমন সুযোগ পাবেন না বাইডেন।