ট্রাম্পের নির্দেশেই স্টর্মিকে ঘুষ দিয়েছি: কোহেন
সম্পর্কের বিষয়ে মুখ বন্ধ রাখতে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশেই পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ঘুষ দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন ট্রাম্পের সাবেক আইনজীবী মাইকেল কোহেন। সোমবার নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের আদালতে জবানবন্দি দেওয়ার সময় তিনি এ কথা বলেন।
জবানবন্দি দেওয়ার সময় কৌঁসুলি সুসান হফিংগারের প্রশ্নের জবাবে কোহেন বলেন, ‘আমি যা করেছি, ট্রাম্পের নির্দেশনায় এবং তাঁর লাভের জন্যই করেছি।’
কোহেনের এই বক্তব্য ঘুষের অর্থ প্রদানের নেপথ্যে যে ট্রাম্প ছিলেন, সে বিষয়ে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনে কৌঁসুলিদের সুবিধা হবে। এমনকি ট্রাম্প যদি নিজেই ওই অর্থ না দিয়েও থাকেন।
একপর্যায়ে ফোন রেকর্ড বের করে কৌঁসুলিরা দেখান, ঘুষ দেওয়ার ওই সময় ফোনে কথা বলেছিলেন ট্রাম্প ও কোহেন। কোহেন ২০১৬ সালের ২৮ অক্টোবর ট্রাম্পকে কল দিয়ে পাঁচ মিনিটের বেশি সময় কথা বলেন। ওই দিনই স্টর্মির সঙ্গে সমঝোতা চূড়ান্ত হয়েছিল।
কোহেন আরও বলেন, শেষ পর্যন্ত তিনি স্টর্মির আইনজীবীর কাছে ব্যাংকের মাধ্যমে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার হস্তান্তর করেছিলেন। স্টর্মি সমঝোতা চুক্তি এবং অতিরিক্ত নথিতে স্বাক্ষর করেছিলেন যা তাঁকে নীরব হতে বাধ্য করেছিল।
বিষয়টি ট্রাম্প জানতেন কি না— কৌঁসুলি সুসানের এমন প্রশ্নের জবাবে কোহেন বলেন, ‘তাৎক্ষণিকই’ জেনেছেন। তিনি বিষয়টি ট্রাম্পকে জানিয়েছেন। তাঁকে দেওয়া কাজটি যে সম্পন্ন হয়েছে তিনি তা জানতেন।
ঘুষের অর্থ দিতে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে অনুমতির জন্য ট্রাম্পকে দুইবার ফোন করেছেন বলেও জানান কোহেন। পরে ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের সিএফও অ্যালেন উইসেলবার্গ ওই অর্থ কোহেনকে পরিশোধ করেন। অবশ্য সেটাকে ‘আইনি ফি’ হিসেবে দেখানো হয়েছিল।
মঙ্গলবার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেছেন আদালত। এ দিনও জবানবন্দি দেবেন কোহেন। সোমবার যখন কোহেন জবানবন্দি এবং বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন, তখন আদালত কক্ষ বসা ট্রাম্পকে চোখ বন্ধ করে সেসব শুনতে দেখা যায়।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০০৬ সালে স্টর্মি ড্যানিয়েলসের সঙ্গে তাঁর যৌন সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। পরে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে এ বিষয়ে মুখ না খুলতে ট্রাম্পের পক্ষ থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার ঘুষ দেওয়া হয়েছিল স্টর্মিকে। ব্যবসায়িক রেকর্ডে এ তথ্য গোপন করেছিলেন ট্রাম্প।
ব্যবসায়িক তথ্য নিয়ে জালিয়াতি করার অভিযোগে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ৩৪টি অভিযোগ আনা হয়েছে। মুখ বন্ধ রাখতে স্টর্মিকে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার অর্থ দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর এসব অভিযোগ আনা হয়।