ফিলিস্তিনের জন্য বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করছে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়
যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে ফিলিস্তিনপন্থীদের বিক্ষোভ জোরালো হয়ে উঠেছে। আটক করা হয়েছে কয়েক শ বিক্ষোভকারীকে। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস থেকে সরে না যাওয়ায় তাঁদের বহিষ্কার করছে নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
সপ্তাহ দু-এক আগে এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই ফিলিস্তিনপন্থীদের তুমুল বিক্ষোভ শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে তা পুরো যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তাঁবু বানিয়ে চলে বিক্ষোভ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁবু সরিয়ে নিতে ও বিক্ষোভ বন্ধ করতে গতকাল সোমবার পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল। নির্দেশ না মানলে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে কর্তৃপক্ষের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা উপেক্ষা করে গতকালও বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন।
এদিকে টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের অস্টিনে ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসের ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করেছে পুলিশ। সেখান থেকে বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। সেখানকার কর্তৃপক্ষ বলছে, বিক্ষোভকারীদের তাঁবু সরিয়ে নিতে বলা হয়েছিল। তাঁরা নির্দেশ মানেননি।
এক বিবৃতিতে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ক্যাম্পাসে ‘বেসবলের সমান’ পাথর পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বেশির ভাগ বিক্ষোভকারীর কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
জর্জ লোব নামের এক আইনজীবী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কাজ করেছেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, অস্টিন ক্যাম্পাস থেকে সোমবার প্রায় ৫০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে জানতে বিবিসির পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তবে তাঁরা কেউ কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি।
এদিকে নিউইয়র্কের আপার ম্যানহাটন এলাকার অভিজাত আইভি লিগ বিশ্ববিদ্যালয় কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ওপর চাপ প্রয়োগ করেছে। আইভি লিগ বিশ্ববিদ্যালয় বলেছে, বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে না পারলে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে পদত্যাগ করতে হবে।
মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার মাইক জনসন এক এক্স (সাবেক টুইটার) বার্তায় লিখেছেন, কলম্বিয়ায় যা ঘটছে, সেটা অপমানজনক। ইহুদিবিদ্বেষী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসটি দখল করে ফেলছেন। এই রিপাবলিকান নেতা কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট নেমাত শফিকের পদত্যাগ দাবি করেছেন।
গত শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বিদ্যাপীঠ হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে ফিলিস্তিনি পতাকা নিয়ে শিক্ষার্থীরা গাজায় ইসরায়েলি হামলা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন।
কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বেশ কয়েকটি ক্যাম্পাসে ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এর মধ্যে বিক্ষোভের মুখে ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট পলিটেকনিক ইউনিভার্সিটির হামবোল্ডট ক্যাম্পাসসহ কয়েকটি ক্যাম্পাস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। চলছে অনলাইন ক্লাস।