সুপ্রিম কোর্টে ট্রাম্পের দায়মুক্তি ‘বিপজ্জনক নজির’: বাইডেন
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট থাকাকালে নেওয়া কিছু পদক্ষেপের জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিচারের মুখোমুখি হওয়া থেকে রেহাই পাওয়ার ঘটনাকে ‘বিপজ্জনক নজির’ বলেছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গতকাল সোমবার তিনি বলেন, এই আংশিক দায়মুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের জন্য ক্ষতির কারণ হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট সোমবার জানান, প্রেসিডেন্ট হিসেবে সংবিধানের অধীন ট্রাম্প যেসব পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, সেগুলোয় দায়মুক্তি পাবেন। তবে ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ডের জন্য দায়মুক্তি পাবেন না তিনি।
সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০২০ সালের নির্বাচনে কারচুপির ঘটনা খতিয়ে দেখতে বিচার বিভাগকে যে নির্দেশ ট্রাম্প দিয়েছিলেন, তা প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর দাপ্তরিক কাজের মধ্যে পড়ে।
এ ছাড়া জো বাইডেনের জয়কে স্বীকৃতি না দিতে তৎকালীন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সকে যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, তা–ও তাঁর সাংবিধানিক ক্ষমতার আওতায় ছিল। ক্যাপিটলের দিকে যাত্রা করতে ৬ জানুয়ারি সমর্থকদের প্রতি দেওয়া ট্রাম্পের নির্দেশও ছিল তাঁর এখতিয়ারের মধ্যে।
আধুনিক যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এই প্রথম সাবেক কোনো প্রেসিডেন্টকে অপরাধের অভিযোগ থেকে দায়মুক্তি দেওয়ার প্রশ্নে সিদ্ধান্ত দিলেন সুপ্রিম কোর্ট।
এর প্রতিক্রিয়ায় বাইডেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মূলনীতি হলো এ দেশে কোনো রাজা থাকবে না। আইনের চোখে সবাই সমান হবে। আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নন। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টও নন।’
সর্বোচ্চ আদালতের এই আদেশকে ‘মৌলিকত্বের পরিবর্তন’ বলে মন্তব্য করেন বাইডেন।
বাইডেন আরও বলেন, ‘আগামী নভেম্বরের নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের মামলার ফলাফল জানার অধিকার রয়েছে। এখন, আজকের সিদ্ধান্তের কারণে, এটা না ঘটার সম্ভাবনা প্রবল। এটা যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের জন্য ক্ষতির কারণ হয়েছে।’
আগামী নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প ও বাইডেন—দুজনই লড়ছেন। গত সপ্তাহে প্রথম টেলিভিশন বিতর্কে মুখোমুখি হন দুজন। তাতে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি বাইডেন। এরপর গতকাল তিনি হোয়াইট হাউস থেকে প্রথম ট্রাম্পের বিষয়ে কথা বললেন।
এর আগে ৬ জানুয়ারির ঘটনা থেকে সুরক্ষা পেতে নিম্ন আদালতে আবেদন করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওই আবেদন খারিজ হয়। গতকাল সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে নিম্ন আদালতের সেই আদেশ বাতিল হয়ে গেল। একই সঙ্গে মামলাটি আরও পর্যালোচনার জন্য নিম্ন আদালতে পাঠানো হবে বলে সিদ্ধান্তে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস।
সর্বোচ্চ আদালতের এই সিদ্ধান্তের কারণে এটা স্পষ্ট যে নভেম্বরের আগে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নির্বাচনে হস্তক্ষেপ ও ক্যাপিটলে হামলাসংক্রান্ত মামলার তেমন অগ্রগতি হবে না। আর তিনি যদি আবার ক্ষমতায় আসেন, তাহলে এ মামলায় বিচার বন্ধের চেষ্টা করতে পারেন, এমনকি নিজেকে ক্ষমা করেও দিতে পারেন।