টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখাতে গিয়ে আরোহীসহ নিখোঁজ সাবমেরিন
টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখাতে দর্শনার্থীদের আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে নিয়ে যাওয়া একটি সাবমেরিনের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। গত রোববার যাত্রা শুরুর ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পর নিখোঁজ হয় সেটি। সাবমেরিনটির সন্ধানে জোর তৎপরতা চলছে।
হারিয়ে যাওয়া সাবমেরিনটির নাম টাইটান। সাগরের তলদেশে যাত্রী পরিবহনের কাজে সেটি ব্যবহার করা হতো। ট্রাকের আকৃতির এই সাবমেরিনটিতে চালক ও একজন ক্রুসহ মোট পাঁচজন আরোহী থাকতে পারেন। পানির নিচে সেটি চার দিনের অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারে।
টাইটানের মালিক মার্কিন প্রতিষ্ঠান ওশানগেট। পানির তলদেশে গবেষণা, অনুসন্ধান, এমনকি ভ্রমণ করতে ইচ্ছুক—এমন লোকজনকে সাবমেরিনের মাধ্যমে পানির নিচে নিয়ে যায় প্রতিষ্ঠানটি। ওশানগেটের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, হারিয়ে যাওয়া সাবমেরিনের আরোহীদের ফিরিয়ে আনতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে তারা।
এদিকে নিখোঁজ টাইটানের আরোহীদের মধ্যে যুক্তরাজ্যের একজন ধনকুবের ছিলেন বলে জানা গেছে। তাঁর নাম হামিশ হার্ডিং। দিন কয়েক আগে ৫৮ বছর বয়সী এই শত কোটিপতি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে জানিয়েছিলেন, তিনি টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে যাচ্ছেন।
কানাডার নিউফাউন্ডল্যান্ড প্রদেশের সেন্ট জন শহর থেকে টাইটানের যাত্রা শুরু হয়। আটলান্টিকের তলদেশে যেখানে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ রয়েছে, সেখান থেকে এর দূরত্ব ৬০০ কিলোমিটার। সেন্ট জন থেকে টাইটানকে পোলার প্রিন্স নামের একটি জাহাজে করে ধ্বংসাবশেষস্থলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে সাগরের তলদেশে যাত্রীদের নিয়ে যায় সাবমেরিনটি। টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ ঘুরিয়ে আনতে এটির সময় লাগে প্রায় আট ঘণ্টা।
গত বছর টাইটানে চড়েছিলেন সংবাদমাধ্যম সিবিএসের প্রতিবেদক ডেভিড পগ। বিবিসিকে তিনি বলেন, টাইটান পানির নিচে যাওয়ার পর যোগাযোগের জন্য সেটির ওপরে থাকা পোলার প্রিন্স থেকে ছোট ছোট বার্তা পাঠানো হয়। তবে এবার ওই বার্তার কোনো জবাব আসছে না। আর টাইটানে থাকা আরোহীদের বাইরে বেরিয়ে আসার কোনো উপায় নেই। কারণ, সেটির প্রবেশ পথগুলো বাইরে থেকে আটকানো থাকে। তাই সাবমেরিনটি পানির ওপরে ভেসে উঠলেও, সেটি বাইরে থেকেই কাউকে খুলতে হবে।
১৯১২ সালে যুক্তরাজ্য থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের উদ্দেশে প্রথম যাত্রা শুরু করে টাইটানিক। সেবারই এক হিমশৈলির সঙ্গে ধাক্কা লেগে ডুবে যায় সে সময়ের সবচেয়ে বড় এ জাহাজটি। এতে জাহাজটিতে থাকা ২ হাজার ২০০ যাত্রীর ১ হাজার ৫০০ জনের বেশি মারা যান। ১৯৮৫ সালে আটলান্টিকের তলদেশে ১২ হাজার ৫০০ ফুট গভীরে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের সন্ধান পাওয়া যায়।