টাইটানের নিরাপত্তা নিয়ে আগেই সতর্ক করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা

‘টাইটান’ সাবমেরিন
ছবি: রয়টার্স

টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখাতে পাঁচ আরোহী নিয়ে আটলান্টিকের তলদেশে গিয়ে ধ্বংস হওয়া টাইটান সাবমেরিনের নিরাপত্তা নিয়ে আগেই উদ্বেগ ছিল। এ বিষয়ে টাইটানের মালিকপ্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোম্পানি ওশানগেটকে কয়েক দফায় চিঠিও দিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা।

টাইটানে নিরাপত্তার ঘাটতি ছিল বলে মনে করেন মার্কিন বিশেষজ্ঞ উইলিয়াম কোহনেন। তিনি লস অ্যাঞ্জেলেসের ‘ম্যানড আন্ডার ওয়াটার ভেহিক্যাল কমিটির’ প্রধান। ২০১৮ সালে টাইটানের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে ওশানগেটকে চিঠি দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর মতে, সাবমেরিনটি যে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে, তা এড়ানোর সুযোগ ছিল।

আরও পড়ুন

বিবিসিকে উইলিয়াম কোহনেন বলেন, গত শতকের ষাটের দশক থেকে এ ধরনের সাবমেরিনগুলোকে কোনো দুর্ঘটনার মুখে পড়তে দেখেননি। তবে এভাবে সাবমেরিন পরিচালনার পক্ষে নন তিনি। কোহনেন বলেন, যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডার জলসীমায় পর্যটক নিয়ে এসব সাবমেরিন চলাচলের অনুমতি দেওয়া উচিত নয়।

টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখাতে গত রোববার পাঁচ আরোহীকে সাগরের তলদেশে নিয়ে গিয়েছিল টাইটান। যাত্রা শুরুর পৌনে দুই ঘণ্টা পর সেটি নিখোঁজ হয়। সেটির সন্ধানে শুরু হয় ব্যাপক তল্লাশি। চার দিন ধরে ব্যাপক তল্লাশি ও নানা আশা-আশঙ্কা শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার টাইটানিকের কাছেই পাওয়া যায় টাইটানের ধ্বংসাবশেষ। সাগরের গভীরে পানির প্রবল চাপে সাবমেরিনটি বিস্ফোরিত হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টদের ধারণা।

আরও পড়ুন

টাইটান নিয়ে কথা বলেছেন যুক্তরাজ্যের ইউনির্ভাসিটি অব সাউদাম্পটনের সমুদ্রবিজ্ঞানবিষয়ক জ্যেষ্ঠ প্রভাষক সিমন বক্সাল। তিনি বলেন, সাগরে চলাচলকারী অন্য যানগুলোর মতো টাইটানকে হয়তো একই ধরনের পরীক্ষা–নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয়নি। কারণ, সেটি আন্তর্জাতিক জলসীমায় পরিচালনা করা হতো। আর গভীর সাগরে অনুসন্ধানের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই।

আরও পড়ুন

যুক্তরাজ্যের যেকোনো জলযান পানিতে নামানোর আগে নিরাপত্তাসংক্রান্ত কঠোর পরীক্ষা–নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয় বলে জানান সিমন বক্সাল। তিনি বলেন, ‘তবে সমস্যাটা হলো, এই বিশেষ সাবমেরিনটি কোনো কর্তৃপক্ষের নজরদারির আওতায় ছিল না।’

গভীর সাগরে চলাচলকারী ডুবোজাহাজ সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোও টাইটানের নিরাপত্তা নিয়ে সতর্ক করেছিল বলে জানিয়েছেন বিখ্যাত চলচ্চিত্র ‘টাইটানিক’–এর পরিচালক জেমস ক্যামেরন। এ নিয়ে ওশানগেটকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। জেমস ক্যামেরনের ভাষায়, চিঠিতে লেখা হয়েছিল, ‘তোমরা (ওশানগেট) বিপর্যয়ের পথে এগিয়ে চলেছ।’

টাইটানিকের করুণ পরিণতির সঙ্গে টাইটানের দুর্ঘটনাকে মিলিয়েছেন ক্যামেরন। তিনি বলেন, ওশানগেটকে সতর্ক করা হয়েছিল। তবে টাইটানিকের মতোই সতর্কবার্তা আমলে না নেওয়ায় টাইটানও দুর্ঘটনার কবলে পড়ল। ১৯১২ সালে প্রথম যাত্রাতেই ডুবে যায় টাইটানিক। মৃত্যু হয় জাহাজটির দেড় হাজারের বেশি যাত্রীর।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন