পৃথিবীতে দ্রুত উষ্ণতা বৃদ্ধির নতুন কারণ জানালেন বিজ্ঞানীরা

ইংল্যান্ডের লুন্ডি দ্বীপের দৃশ্যফাইল ছবি: রয়টার্স

হিমবাহ গলছে, বাড়ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উষ্ণতা। এ পরিস্থিতিতে গত বছর পৃথিবী উষ্ণ হওয়ার নতুন রেকর্ড হয়েছে। পৃথিবীর উষ্ণতা কেন ক্রমে বাড়ছে, তা নানাভাবে বোঝার চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা।

পৃথিবীর উষ্ণতা বাড়ার পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে। এসব কারণের মধ্যে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি এবং এল নিনোর মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ অন্যতম। কিন্তু পৃথিবীর উষ্ণতা যে হারে দ্রুতগতিতে বাড়ছে, তা শুধু এসব পরিচিত কারণ দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় না।

এ পরিস্থিতিতে গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধির নতুন একটি কারণ বলা হয়েছে। বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী সায়েন্সে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনের মূল কথা, পৃথিবীর উষ্ণতা দ্রুত বৃদ্ধির পেছেন মেঘের একটি ভূমিকা আছে।

নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, মহাসাগরগুলোর ওপরে নিচু মেঘের আচ্ছাদন (লো ক্লাউড কভার) দ্রুতগতিতে কমেছে। এটা উষ্ণতা বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখছে। ভবিষ্যতে এ প্রবণতা নানা ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

নতুন গবেষণা প্রতিবেদনের লেখক ও জার্মানির আলফ্রেড ওয়েজেনার ইনস্টিটিউটের জলবায়ু পদার্থবিদ হেলগে গোয়েসলিং বলেন, কম উজ্জ্বল ও কম নিচু মেঘের অর্থ, পৃথিবী আগের চেয়ে ‘অন্ধকার’ হয়েছে।

এই প্রবণতাকে বলা হয় অ্যালবেডো। এর মাধ্যমে পৃথিবীতে প্রতিফলিত ও বিচ্ছুরিত সূর্যরশ্মি ক্ষুদ্র তরঙ্গরূপে আবার মহাশূন্যে ফিরে যাওয়াকে বোঝায়।

গবেষণায় দেখা গেছে, ১৯৭০–এর দশক থেকে পৃথিবীর অ্যালবেডো কমছে। অন্যান্য কারণ থাকলেও হালকা রঙের তুষার ও সাগরের বরফ গলে যাওয়ায় এমনটি হচ্ছে বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা। এতে মহাসাগর ও স্থলভাবে অন্ধকারাচ্ছন্ন অংশের পরিমাণ বেড়েছে, যা বেশি পরিমাণে সূর্যতাপ ধরে রাখছে। এ কারণে পৃথিবীর উষ্ণতা বাড়ছে।

নতুন গবেষণার কাজে বিজ্ঞানীরা নাসার কৃত্রিম উপগ্রহের তথ্য, আবহাওয়া তথ্য ও নানা ধরনের জলবায়ু মডেল ব্যবহার করেছেন। এতে দেখা গেছে, গত বছর নিচু মেঘ পৃথিবীর অ্যালবেডো রেকর্ড পরিমাণ কমেছে। উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে অ্যালবেডো উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমেছে।

গোয়েসলিং সিএনএনকে বলেন, সাধারণত এক দশকে যে পরিমাণ নিচু মেঘের আচ্ছাদন কমে, শুধু গত এক বছরে সে পরিমাণ কমেছে। তবে কেন এমনটি হচ্ছে, তা এখনো বিশ্লেষণ করা যাচ্ছে না। ব্যাখ্যা করাটা বেশ কঠিন।