মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট বললেন, ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনায় সীমান্তের দিকে অভিবাসী আসা বন্ধে তিনি সম্মত হননি

মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেনবাউম (বাঁয়ে) ও যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পছবি : রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেনবাউম বুধবার ফোনে কথা বলেছেন। আলাপের পর ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তের দিকে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আসা বন্ধের বিষয়ে তাঁরা সম্মত হয়েছেন। কিন্তু ট্রাম্পের এমন দাবির প্রতিক্রিয়ায় শেনবাউম বলেছেন, তাঁদের মধ্যে এমন কোনো সম্মতি হয়নি।

গত বুধবার ফোনালাপের পর অনলাইনে এক পোস্টে ট্রাম্প লিখেছিলেন, ‘তিনি (শেনবাউম) মেক্সিকো হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন বন্ধ করতে সম্মত হয়েছেন। এতে আমাদের (যুক্তরাষ্ট) দক্ষিণ সীমান্ত কার্যকরভাবে বন্ধ করা যাবে।’

ট্রাম্পের এমন দাবির প্রতিক্রিয়ায় শেনবাউম জোর দিয়ে বলেছেন, ‘সীমান্ত বন্ধ করা মেক্সিকোর অবস্থান ছিল না। মানবাধিকারকে সম্মান করে আমরা অভিবাসনের বিষয়টি নিয়ে আলাপ-আলোচনা করা হবে বলে জানিয়েছি।’

গত সোমবার ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য অংশীদারদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, জানুয়ারিতে ক্ষমতা গ্রহণের পর তিনি মেক্সিকো ও কানাডার সঙ্গে আন্তবাণিজ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন। আর চীন পণ্য আমদানির ওপর শুল্ক আরোপ করবেন ১০ শতাংশ।

তখন ট্রাম্প আরও বলেছিলেন, অবৈধ অভিবাসনপ্রত্যাশী ও মাদক চোরাচালান বন্ধ হলেই কেবল মেক্সিকো ও কানাডা থেকে পণ্য আমদানির ওপর শুল্ক প্রত্যাহার করা হবে।

আর চীনা পণ্যে আরোপ করা শুল্ক প্রত্যাহারের জন্য দেশটিকে (যুক্তরাষ্ট্রে) ফেন্টানিল চোরাচালান বন্ধে কঠোর হতে হবে।

বুধবার ট্রাম্প যখন মেক্সিকো, কানডা ও চীনের ওপর শুল্কারোপের ঘোষণা দেন, তখন পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে শেনবাউমের ফোনালাপ হয়নি। ট্রাম্পের এমন ঘোষণার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরুর হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন শেনবাউম। তখন এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র যদি শুল্কারোপ করে, আমরাও (দেশটির পণ্য আমদানিতে) শুল্ক বাড়াব।’

বুধবার ট্রাম্পের শুল্কারোপের হুমকির পর শেনবাউমের মেক্সিকোর অর্থনীতিমন্ত্রী মার্সেলো এবরার্দদ আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়াতে আহ্বান জানিয়েছিলেন। ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শুল্কারোপের ঘোষণার জবাবে তখন তিনি বলেছিলেন, ‘এটা পায়ের পাতায় গুলি করা।’ মেক্সিকোর ওপর শুল্কারোপ করাটা যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো-কানাডা (ইউএসএমসিএ) চুক্তির লঙ্ঘন। ট্রাম্পের প্রথম মেয়দে ২০১৮ সালে এ চুক্তি করা হয়েছিল।

বুধবার ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে শেনবাউম প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় লিখেছিলেন, ‘(আমাদের মধ্যে) চমৎকার আলাপ-আলোচনা হয়েছে। আমরা অভিবাসন বিষয়ে মেক্সিকোর কৌশল নিয়ে আলোচনা করেছি। আমি তাঁকে বলেছি (অভিবাসনপ্রত্যাশীদের) কাফেলা আমাদের উত্তরের সীমান্তে এ জন্যই আসছে না যে মেক্সিকোতে তাঁদের যত্ন নেওয়া হয়।’

এদিকে ট্রাম্পের শুল্কারোপের ঘোষণার পর কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বুধবার ১০ জন প্রাদেশিক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছেন। বৈঠকে তাঁরা ট্রাম্পের শুল্কারোপের হুমকি কীভাবে মোকাবিলা করা হবে, তা নিয়ে আলোচনা করেছেন।